ঢাকা, শনিবার, ১৭ ফাল্গুন ১৪৩১, ০১ মার্চ ২০২৫, ০০ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

নারীবান্ধব নগরী গড়ে তোলার আহ্বান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১২ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৭
নারীবান্ধব নগরী গড়ে তোলার আহ্বান সংবাদ সম্মেলনে আলোচকরা। ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: আর মাত্র ১৫-২০ বছরের মধ্যে দেশের ৫০ শতাংশ মানুষ নগরে বসবাস করবেন বলে মন্তব্য করেছেন স্থপতি ইকবাল হাবিব।

তিনি বলেন, অথচ নগরগুলোকে সাধারণ মানুষের জন্য না করে শারিরীকভাবে সবল, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও ধনীদের জন্য গড়া হচ্ছে।
 
শনিবার (২০ মে) রাজধানীর গুলশানে ‘বিশ্বব্যাপী নারীর জন্য নিরাপদ শহর দিবসে’ অ্যাকশন এইডের ‘লিঙ্গ প্রতিক্রিয়াশীল শহর গঠন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।


 
ইকবাল হাবিব বলেন, ‘নগরীর পরিবেশের সবচেয়ে বেশি শিকার নারী ও শিশুরা। দেশের নদীগুলোকে যেভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে, ঠিক সেভাবে নারীদের অনিরাপদ শহর গঠন করা হয়েছে। এখানে পরিবহন, রাস্তাঘাট ও কর্মস্থলসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীরা অবহেলিত’।
 
সংবাদ সম্মেলনে ‘নারী সংবেদনশীল নগর পরিকল্পনা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ঘর ও কর্মস্থলে নারীদের বহুমাত্রিক দায়িত্ব পালনে নগর প্রতিবেশে একজন নারীর চাহিদা ও নগরে নারীর সম্পৃক্ত হওয়ার ধরন অপেক্ষাকৃত অধিক বৈচিত্র্যপূর্ণ ও আলাদা। নগরের অর্ধেক জনসংখ্যা নারী হলেও নগর পরিকল্পনা ও উন্নয়নে নারীর চাহিদা ও আকাঙ্খার বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় আসে না। নগরের উন্নয়নে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন, ডিজাইন ও বাস্তবায়নসহ বেশিরভাগ কাজে নারীদের সংখ্যা কম থাকায় নারী ব্যবহারবান্ধব নগর কাঠামো  তৈরি হয় না’।
 
‘ফলে রাস্তাঘাট, ফুটপাত, মার্কেট, শপিংমল, পরিবহন ব্যবস্থা, পাবলিক টয়লেট, পার্ক, উন্মুক্ত স্থানসহ সকল গণপরিসরে নারীদের ব্যবহার উপযোগিতা সীমিত ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে থাকে’।
 
‘সময় ও স্থান- উভয় বিবেচনায় একটি অনিরাপদ শহর নারীদের চলাফেরাকে ভীষণভাবে সীমিত করে। সুতরাং, গণপরিসর, নাগরিক সুবিধাগুলোর ডিজাইন ও প্রকল্প বাস্তবায়নে নারীদের চাহিদা ও আকাঙ্খাকে বিবেচনা করা হলে সেটি নারী-পুরুষ, য‍ুবা-বৃদ্ধ সকলের জন্য ভালো শহর হতে পারে’।
 
নগরীর রাস্তা, বাসস্ট্যান্ড, ফুটপাত, মার্কেট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২০০ জন নারীর ওপরে জরিপ করা হয়। প্রতিবেদনে এ জরিপ তুলে ধরে বলা হয়, ‘পরিবহন সর্ম্পকে ৬৮ শতাংশ নারী যানজটে হতাশা প্রকাশ করছেন। এর মধ্যে ৭৮.৫ শতাংশ নারী বলেন, ন‍ারীদের জন্য বাস সংকট। ৫৮ শতাংশ বলেন, অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে ব‍াসে উঠতে পারেন না। আর ২২ শতাংশ নারী বলেন, হেলপার, ড্রাইভার ও যাত্রীর কাছে অপমানিত হন’।
 
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘পরিবহনের পাশাপাশি পুরুষতান্ত্রিক শহরে নারীদের অবাধ চলাচলেও বাধা দেওয়া হয়। নারীদের উপযোগী ফুটপাত, রাস্তা, ইন্টারসেকশন ও পাবলিক টয়লেট নেই। সিটি করপোরেশনের তালিকাভূক্ত পার্ক, উদ্যান ও খেলার মাঠে নারীদের প্রবেশাধিকারও নিরাপদ নয়’।
 
সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন ড. খলিলুর রহমান। প্রতিবেদনের সার-সংক্ষেপ উপস্থাপন করেন অ্যাকশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির। আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন অধ্যাপক ড. আখতার মাহমুদ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৮ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৭
এমএফআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।