এবার গাড়ি তো ছাড়ে না। যাত্রীরা সেদ্ধ হওয়ার যোগাড়।
পথে কোনো যাত্রী হাত তুললেই থেমে যায়, আবার ছোটে এভাবেই। এমন করে করেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে অবশেষে বাস এসে থামলো নাচোল শহরে।
বাইরের পুরোটাই যেন চাতাল। আর সব কিছুই যেন ফুটছে। তেতে ওঠা চারপাশ একেবারে টনটনে। প্রায় সবাই গামছা, রুমাল মতন কিছু একটা মাথায় দিয়ে চান্দি বাঁচানোর বৃথা চেষ্টায় নেমেছে দেখা গেল।
রাস্তায় ধারেই বসে ছিলেন রমজান আলী। আর সবার আরাধ্য যেন তিনিই। কেননা, তার কাছেই যে রয়েছে শসার ডালি। শসাও বটে, একেকটা যেন লাউ! রান্নার জন্য এগুলো যে চাষের হাইব্রিড তা কেউ না বললেও বোঝা যায়। একেকটা শসা তিনি বিক্রি করছেন ১০ টাকায়। কোনো চেঁছে নেওয়ার কারবার নেই, লবণ নেই। তারপরও লোকে এসব নিচ্ছেন আর কড়মড়িয়ে চিবুচ্ছেন। একটা নিয়ে জানতে চাইতেই ঝটপট বলে দিলেন, সকাল থেকে এ পর্যন্ত এম মণ শেষ। কেবল দুপুর বিকেল নাগাদ দুই মণ বেচা হয়ে যাবে।
লবণ ছাড়া শসা চিবুনো কোনোভাবেই সুখকর কিছু নয়, তার ওপর যদি হয় মিনি লাউ সাইজের। চিবুতে চিবুতে উপজেলা কমপ্লেক্সের সামনে আসতেই দেখা গেল শসা নিয়ে বসে আছেন ভুট্টো মিয়া। তিনি বলেন, দুই মণ শসা এনেছিলাম। সবগুলোই মাঝারি-ছোট সাইজের। সব বিক্রি শেষ। আছে তিন-চারটা।
শিবপুরের এই মৌসুমি ব্যবসায়ী জানালেন, প্রতিমণে ২৫০টির মতো শসা হয়। দাম পড়েছে ৮শ’ টাকা। দুই মণে তার লাভ হচ্ছে ৫শ’ টাকার মত।
কথা বলতে বলতে এক লোক এসে একটা চাইলেন। দরদর করে ঘাম ঝরছিল কপাল বেয়ে।
এতো শসা বিক্রি করে ফেললেন সকাল থেকে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে গরম পড়ছে কয়েক দিন থেকে, বিক্রি ভাল হচ্ছে। শসা খেয়ে মানুষ আরাম পাচ্ছে যে।
অনককেই দেখা গেছে টিউবওয়েলের নলে মুখ রেখেই গলা অব্দি খেয়ে নিতে। ছোটরাও নেমে পড়ছে ডোবা-নালায়।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, তাপমাত্রা বাড়ছে। যদিও রাতের দিকে বৃষ্টির আনাগোনা হচ্ছে কয়েকদিন ধরে। তবে দিনে ঝলসানো রোদ থেকে রেহাই মিলছে না। মঙ্গলবার রাজশাহী বিভাগে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবারও একইহারে ওঠছে ব্যারোমিটারের পারদ।
বাংলাদেশ সময়ঃ ১৭৪০ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০১৭
ইইউডি/জেডএম