সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা সূত্র জানায়, উত্তরাঞ্চলের লালমনিরহাট থেকে ঢাকা অভিমুখে চলাচলকারী লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনটির বগিগুলো অনেক পুরাতন। ফলে এটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে, গতিও কমে গেছে।
সূত্র মতে, ইতোমধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় পুরাতন ১৮টি কোচ পাঠিয়েছে। এসব কোচ ইরানে তৈরি হলেও এর আন্ডার ফ্রেম (বগি) জার্মান প্রযুক্তির। এর আগে ওই কোচগুলো ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে একটি আন্তঃনগর ট্রেনে ব্যবহার হত।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা সূত্র বলেছে, ওই কোচগুলো সুপার স্ট্রাকচার (পূর্ণাঙ্গ অবকাঠামো) সম্পূর্ণ খুলে ফেলা হচ্ছে। এসব সম্পূর্ণ নতুনরূপে করা হবে। আর প্রতিটি কোচ নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ৭০ লাখ টাকা। এ সংক্রান্ত ব্যাপারে রেলপথ মন্ত্রণালয় হতে অতিরিক্ত ১৩ কোটি টাকার বরাদ্দ প্রত্যাশা করছে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা। রাজস্ব খাত হতে ওই কোচগুলোর নির্মাণ ব্যয় নির্বাহ করা হবে।
সূত্র জানায়, ১২টি কোচ নির্মাণ শেষে আগামী জানুয়ারি মাসে রেলওয়ের ট্রাফিক বিভাগে হস্তান্তর করা হবে। যা দিয়ে নতুন রূপে চালু হবে লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনটি। বাকি ৬টি কোচ থাকবে অপেক্ষমাণ। মিটার গেজে চলাচলকারী (এমজি) ওই ট্রেনটি দ্রুতগতির হবে। কারণ এর আন্ডার ফ্রেমে টেকসই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে কারখানার বগি শপে। আর কোচগুলোর সুপার স্ট্রাকচার তৈরি হচ্ছে ক্যারেজ শপে। ট্রেনের পুরাতন স্ট্রাকচার খুলে ফেলা হচ্ছে। লালমনি এক্সপ্রেসের রং কি হবে তা এখুনি নিশ্চিত করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
গত ১৯ জুলাই বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (রোলিং স্টক) মো. শামসুজ্জামান এসব কোচের নির্মাণ দেখতে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি কোচগুলো দ্রুত নির্মাণের তাগিদ দেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী (সিএমই) ইফতেখার হোসেন, প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক (সিওএস) বেলাল হোসেন সরকার প্রমুখ।
এ প্রসঙ্গে কথা হয় সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) মুহাম্মদ কুদরত-ই খুদার সঙ্গে। তিনি বলেন, ১৮টি কোচ এরই মধ্যে কারখানায় এসেছে। এসব কোচের নতুনভাবে পুনর্বাসন শুরু হয়েছে। আমরা আশা করছি, আগামী জানুয়ারিতে ১২টি কোচ হস্তান্তর করা সম্ভব হবে, যা লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনে সংযোজন হবে। কোচগুলোর নির্মাণ কাঠামো অনুযায়ী দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমবে, সেই সাথে গতিও বাড়বে। কোচগুলোতে চেয়ার কোচ সংযোজন করা হচ্ছে। এর মধ্যে একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচও থাকবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি, আর এস) মো. শামসুজ্জামানের সাথে মুঠোফোনে কথা হয়। তিনি জানান, লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনকে আধুনিক করতে ওই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ট্রেনটিতে বিদ্যমান যে কোচগুলো রয়েছে তা সেকালের। ফলে যাত্রী সেবা বাড়াতে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় ১৮টি কোচ পুনর্বাসনের জন্য পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৭
আরআই