ঢাকা, রবিবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

প্রধানমন্ত্রীর আগমনে রাজশাহীতে নতুন উদ্দীপনা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৭
প্রধানমন্ত্রীর আগমনে রাজশাহীতে নতুন উদ্দীপনা রাজশাহী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা-ছবি-বাংলানিউজ

রাজশাহী: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে ঘিরে আবারও উদ্দীপ্ত হয়ে উঠেছে রাজশাহীর রাজনৈতিক অঙ্গন। চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংঠনের নেতাকর্মীরা। তিন বছর পর প্রধানমন্ত্রী আসছেন ১৪ সেপ্টেম্বর। তাই ভেদাভেদ ভুলে ওইদিনের জনসভা সফল করতে রাতদিন এক করে ফেলছেন তারা। আশা করা হচ্ছে, সরকারের শেষ মেয়াদের এই জনসভা জনসমুদ্রে রূপ নেবে। এখান থেকেই মিলবে আগামীদিনের দিক নির্দেশনা। 

রাজশাহীর সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, এবার উন্নয়নের বার্তা নিয়ে রাজশাহী আসছেন দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর রাজশাহী সফরকালে প্রধানমন্ত্রী ২৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।

এর মধ্যে ছয়টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ১৭টির ভিত্তিপস্তর স্থাপন করবেন। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহীর পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন।  

প্রথমে পবার খড়খড়িতে থাকা বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে জনসভার আয়োজন করা হয়। পরে স্থান পরিবর্তন করে চিনিকল মাঠে আয়োজন করা হয়। বৃষ্টির আশঙ্কায় ভেন্যু পরিবর্তন করা হয়েছে বলে জানান এই আওয়ামী লীগ নেতা।  

লিটন বলেন, সদর দফতর ও জেলা কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর শক্তিশালী শীর্ষক প্রকল্প (শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর অফিস নির্মাণ), উপজেলা কমপ্লেক্স সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় বাগমারা উপজেলা কমপ্লেক্স সম্প্রসারিত প্রশাসনিক ভবন ও হল রুমে নির্মাণ কাজ, রাজশাহীর পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ কাজ, মহানগরীর টিকাপাড়ায় আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারি প্রকল্পের আওতায় রাজশাহী সিটি করপোরেশন নামক স্থানের ৬ তলাবিশিষ্ট সিআরএইচসিসি (কম্প্রিহেনসিভ রিপ্রোডাক্টিভ হেলথ কেয়ার সেন্টার) নির্মাণকাজ, তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ কাজ ও নগরীর বনলতা বাণিজ্যিক এলাকা সম্পসারণ ও আবাসিক এলাকা উন্নয়নের ছয়টি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন।

তিনি বলেন, একই সময় প্রধানমন্ত্রী আরও ১৭টি প্রকেল্পর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। পদ্মা নদীর ভাঙন এলাকা থেকে মহানগরীর অন্তর্ভ‍ুক্ত সোনাইকান্দি থেকে বুলনপুর পর্যন্ত এলাকা রক্ষা প্রকল্প, চারঘাট টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপনের জন্য পয়ঃনিষ্কাশন, পানি সরবরাহ ও বৈদ্যুতিক কাজসহ একাডেমিক কাম (৫ তলা), প্রশাসনিক ভবন (৪তলা) নির্মাণসহ ওয়ার্কসপ ও সার্ভিস এরিয়া (১ম তলা) একইসঙ্গে পানি সংরক্ষণ ভূমি উন্নয়ন, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, সীমানাপ্রাচীর, গেট ও গভীরনলকূপ স্থাপন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।

লিটন বলেন, ২০১১ সালের ২৪ নভেম্বর রাজশাহীতে এক জনসভায় হাইটেক পার্ক নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। পদ্মাপাড়ে ৩১ দশমিক ৬৩ একর জমির ওপর তোলা হবে ২শ’ ৮১ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয়ে এই হাইটেক পার্ক। যার নাম দেওয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক। এই হাইটেক পার্ক নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী।  

এছাড়াও শেখ হাসিনা রাজশাহী মহানগরীর তালাইমারী মোড়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্কয়ার নির্মাণ, ‘তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে নির্বাচিত বেসরকারি কলেজ সমূহের (আইসিটি) উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বাগমারার মাড়িয়া কলেজ, মোহনপুরের পাকুড়িয়া কলেজ, গোদাগাড়ীর গুরগোফুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, তানোরের ডা. আবুবকর হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের চারতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণকাজ, মহানগরীর কোর্ট থেকে রাজশাহী বাইপাস রোড পর্যন্ত রাস্তা প্রশস্তকরণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।  

অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে রুয়েট থেকে রাজশাহী সিটি বাইপাসের খড়খড়ি পর্যস্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্প, মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ, বারনই আবাসিক এলাকা উন্নয়ন প্রকল্প, প্রান্তিক আবাসিক এলাকা উন্নয়ন প্রকল্প, পরিবার পরিকল্পনা রাজশাহী জেলা ও বিভাগীয় উপ-পরিচালকের অফিস ভবন নির্মাণ প্রকল্প, রাজশাহী শিশু হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্প, গোদাগাড়ী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ, পবায় বেসরকারি বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস নির্মাণ এবং রাজশাহী মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট প্লান দুর্যোগ ঝুঁকি সংবেদনশীলকরণ প্রকল্প মিলে মোট ১৭টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।

রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন জানান, সফরসূচি অনুযায়ী ওইদিন প্রধানমন্ত্রী প্রথমে রাজশাহীর সরদহে থাকা বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে শিক্ষানবীশ সহকারী পুলিশ সুপারদের শিক্ষা সমপানী কুচকাওয়াজে অংশ নেবেন এবং অভিবাদন গ্রহণ করবেন।  

পরে তিনি জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন। এরইমধ্যে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জনসভাস্থলের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা জনসভাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এছাড়া রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেত‍া ও সংশ্লিষ্টদের নিয়ে প্রস্তুতি সভাও হয়েছে বলে জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী ২০১১ সালের ২৪ নভেম্বর রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদরাসা ময়দানে দলীয় জনসভায় ভাষণ দেন। ওই জনসভায় রাজশাহীর উন্নয়নে অন্তত দুই ডজন দাবি তুলে ধরেছিলেন এ অঞ্চলের মেয়র ও এমপিরা।  

এরপর ২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাজশাহীর বাগমারা ও ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি চারঘাটে দলীয় জনসভায় হাজির হন তিনি। এ দুটি জনসভাতেও বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেছিলেন নেতারা।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৭
এসএস/আরআর
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।