ঢাকা, শুক্রবার, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২৭ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

উন্মুক্ত ওয়াই-ফাই জোন বন্ধ চার বছর, জানে না রাসিক!

শরীফ সুমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০১৭
উন্মুক্ত ওয়াই-ফাই জোন বন্ধ চার বছর, জানে না রাসিক! উন্মুক্ত ওয়াই-ফাই জোন বন্ধ চার বছর

রাজশাহী: রাজশাহী মহানগরীর বড়কুঠি পদ্মাপাড়ে চালু করা একমাত্র উন্মুক্ত ওয়াই-ফাই জোনটি ২০১৩ সালের নভেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে। তবে বিস্ময়ের কথা হচ্ছে, চার বছর হতে চললেও সে কথা জানে না খোদ রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক)।

তাই ওয়াই-ফাই জোনটি আবারও চালু-তো দূরে থাক, বর্তমানে ওয়াই-ফাই ডিভাইস বা সেই সিস্টেমটি রয়েছে কি-না তা নিয়েই সন্দেহ দেখা দিয়েছে নগরবাসীর মধ্যে।  

বড়কুঠি ওয়াই-ফাই জোনে আসা রাজশাহী কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী ফাতেমা বিনতে সুলতানা আঁখি বলেন, সবার মুখে শুনে তিনি ও তার বন্ধুরা হরহামেশাই সেখানে যান ফ্রি ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য।

কিন্তু ল্যাপটপ বা স্মার্টফোনের ওয়াই-ফাই অপশন সক্রিয় করার পরও কোনো সিগনাল পান না। এরপরও প্রায়ই আসেন এই ভেবে যে, হয়ত ঠিক হয়ে গেছে। কিন্তু ঠিক হওয়ার কোনো উদ্যোগই নেই।

রাজশাহী নিউ ডিগ্রি কলেজের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী রিফাত হোসেন বলেন, এখানে মূলত সব শ্রেণীর মানুষই পদ্মাপাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ ও নৌকা ভ্রমণের মতো বিনোদনের জন্য আসেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। তারা সাধারণত বিনোদন এবং ফ্রি ইন্টারনেট সুবিধা পাওয়ার কথা চিন্তা করেই আসেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় ওয়াই-ফাই সিস্টেমটি বন্ধ। যাকে কেন্দ্র করে বিনোদন কেন্দ্রটি, সেই ওয়াই-ফাই জোনটি এতোদিনেও সচল না হওয়ায় ক্ষোভ জানান এই তরুণ শিক্ষার্থী।

এদিকে, শিক্ষানগরী রাজশাহীকে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে এগিয়ে নিতে ২০১২ সালের ১৩ অক্টোবর ঢাকঢোল পিটিয়ে পদ্মাপাড়ের মনোরম পরিবেশে প্রথম উন্মুক্ত এই ওয়াই-ফাই জোন চালু করেছিল রাজশাহী সিটি করপোরেশন। ওই সময় চিন্তা করা হয়েছে সেখানে গিয়ে তরুণ শিক্ষার্থীরা ফ্রি ইন্টারনেট সুবিধা পাবে। ইন্টারনেট সেবাকে কাজে লাগিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে তারা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবে। এছাড়া শিক্ষিত বেকার যুবকরা সেখান থেকে আউটসোর্সিংয়ের কাজ করতে পরবেন। তথ্য প্রযুক্তিতে এগিয়ে থাকতে পারবেন।

সেই সময় সিদ্ধান্ত ছিল, রাজশাহী নগরীর আরও কয়েকটি স্থানে এমন উন্মুক্ত ওয়াই-ফাই জোন করা হবে। কিন্তু সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের উদ্বোধন করা এই ওয়াই-ফাই জোনটি তার ক্ষমতা ছাড়ার পরই অকার্যকর হয়ে পড়ে। আর প্রথম উন্মুক্ত ওয়াই-ফাই জোনটির কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়ায় অন্যগুলোর কাজও আর এগোয়নি।

অথচ ২০১৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত রাজশাহীর বড়কুঠির পদ্মাপাড়ের এই ওয়াই-ফাই জোনটি প্রতিদিন সকাল ছয়টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকতো। দুই হাজার মিটার ব্যাসার্ধ নিয়ে যেদিকে যাওয়া যাবে, সেখানেই এর সংযোগ মিলতো। সেখানে ২শ’ জন ব্যবহারকারী একসঙ্গে ফ্রি ইন্টারনেট সুবিধা ভোগ করতে পারতেন। কিন্তু ২০১৩ সালের নভেম্বরে বন্ধ হয়ে যায় ওয়াই-ফাই জোনটি। যা আজও যা চালু করা হয়নি।

বর্তমানে প্রতিদিনই নগরীর এই ওয়াই-ফাই জোনে বিনোদনপ্রেমীদের ভিড় জমে। কিন্তু এই স্পটে এসে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও তরুণেরা স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, নেটবুক, ট্যাব নিয়ে বসে থাকলেও ফ্রি ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছেন না।  

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ওয়া-ফাই জোন বন্ধ এমন তথ্য তাদের নেই বলে দাবি করেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক।

তিনি বলেন, রাজশাহীর স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান পিক্সেল প্রাইভেট লিমিটেড ওয়াই-ফাই জোনের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিল। তারাই বিষয়টি বলতে পারবেন। তবে তারাও একটি টিম পাঠিয়ে বিষয়টি দেখবেন বলে জানান রাসিকের এই প্রধান প্রকৌশলী।   

পিক্সেল প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক আশরাফ সিদ্দিকী নূর বাংলানিউজকে বলেন, চুক্তি অনুযায়ী তারা ওয়াই-ফাই জোনটি করে দেন। উদ্বোধনের পর এক বছর পর্যন্ত এর রক্ষণাবেক্ষণও করেন। কিন্তু এরপর কী হয়েছে তারা বলতে পারবেন না।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০১৭
এসএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।