ঢাকা, বুধবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

কাত্যায়নী মায়ের আরাধনার শেষ প্রস্তুতি মাগুরার ৯১ মণ্ডপে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৭
কাত্যায়নী মায়ের আরাধনার শেষ প্রস্তুতি মাগুরার ৯১ মণ্ডপে দেবী কাত্যায়নী মাকে অপরুপ সাজে সাজিয়ে তুলছেন প্রতিমাশিল্পীরা। ছবি: বাংলানিউজ

মাগুরা: কাত্যায়নী পূজা দ্বারপ্রান্তে। রং-তুলির শেষ আঁচড়ে দেবী কাত্যায়নী মাকে অপরুপ সাজে সাজিয়ে তুলছেন প্রতিমাশিল্পীরা। মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে সাজসজ্জা ও আলোকসজ্জার শেষ মুহূর্তের কাজও।

ঘর-দোর পরিষ্কার আর নতুন  পোশাক কিনতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মায়ের ভক্তরা। প্রতিটি বাড়িতে দেশ-বিদেশ থেকে আসতে শুরু করেছেন আত্মীয়-স্বজনেরাও।


 
কাত্যায়নী দেবী দুর্গার একটি বিশেষ রূপ এবং মহাশক্তির অংশবিশেষ। নবদুর্গা রুপে পূজিত হন তিনি। বিশেষ করে মাগুরা জেলায় প্রচলিত এ উৎসবের জাক-জমকপূর্ণ বর্ণিল আয়োজন দেখতে আসেন দেশ-বিদেশের অসংখ্য ভক্তরাও।

আগামী বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) ষষ্ঠী পূজা দিয়ে শুরু হয়ে পাঁচদিনের উৎসব চলবে সোমবার (৩০ অক্টোবর) পর্যন্ত। বিজয়া দশমীতে সেদিন প্রতিমা বিসর্জন হলেও মেলা থাকবে আরও একমাস।

প্রবেশদ্বারকে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের মঞ্চের আদলে তৈরি করা হচ্ছে।  ছবি: বাংলানিউজ জেলার ৯১টি পূজামণ্ডপে এবার কাত্যায়নী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ১৫টি পৌর এলাকা ও ৭৬টি মণ্ডপ সাজানো হচ্ছে ৪টি উপজেলায়।

পূজা-পার্বনে প্রসিদ্ধ নিতাই গৌর গোপাল সেবাশ্রম, ছানাবাবুর বটতলা, বাটিকাডাঙ্গা  সার্বজনীন, সাতদোহা ও তাঁতিপাড়া কাত্যায়নী মণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, দিন-রাত কাজ করছেন প্রতিমাশিল্পীরা। গ্যাসের ছোট চুলায় তাপ দিয়ে প্রতিমা শুকানো হচ্ছে। শুকিয়ে যাওয়া প্রতিমায় চলছে রং করার কাজ।

ছানাবাবুর বটতলায় একপাশে প্রতিমা তৈরি করছেন উজ্জ্বল কুমার গুরু। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘গত ৩০ বছর ধরে এ  প্রতিমা তৈরি করছি। এবার ৮ জন সহযোগী কাজ করছেন আমার সঙ্গে’।

ধীরেন বৈদ্য বাংলানিউজকে বলেন, ‘পূজা এসে গেছে। রাত-দিন কাজ করছি। কাজ প্রায়  শেষ, অধিকাংশ প্রতিমায় রং করছি’।

বিকাশ সাহা বাংলানিউজকে জানান, শহরতলীর পারন্দুয়ালী এলাকার সতিশ মাঝি এ জেলায় কাত্যায়নী পূজার সূচনা করেছিলেন। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে এর ব্যাপক বিস্তৃতি পায়। এ উৎসবে মিলিত হন সকল ধর্মের মানুষ, যা জেলার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নিদর্শন।

অপূর্ব সাহা বলেন, ‘দেশ-বিদেশের দর্শনার্থীদের কথা মাথায় রেখে এবার বাহুবলির আদলে প্রতিমা এবং প্রবেশদ্বারকে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের মঞ্চের আদলে তৈরি করছি। আশা করছি, গতবারের চেয়েও এবার বেশি আনন্দ উপভোগ করবেন দর্শনাথীরা’।

ফাল্গুনী ডেকোরেটরের মালিক সুমীর সাহা বলেন, ‘আর মাত্র দু’দিন বাকি। এ সময়ের মধ্যে সব কাজ শেষ করতে হবে। এখন একটু নি:শ্বাস নেওয়ারও সময় নেই। ২০ জন কর্মচারীকে নিয়ে দিন-রাত কাজ করছি’।

জেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট প্রদুৎ সিংহ বলেন, ‘কাত্যায়নী পূজা উৎসব নির্বিঘ্ন করতে সব ধরনের ব্যবস্থা, সহযোগিতা ও নিরাপত্তা দিচ্ছি’।

মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে সাজসজ্জা ও আলোকসজ্জার শেষ মুহূর্তের কাজ।  ছবি: বাংলানিউজজেলার পুলিশ সুপার মনিবুর রহমান বলেন, ‘বরাবরের মতো এবারো নিরাপত্তা নিয়ে  পূজা পরিষদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছি। সেখানে মন্দির পরিচালনা পর্ষদগুলোকে পুলিশের  পক্ষ থেকে কি কি করণীয়, বলে দেওয়া হয়েছে’।

তিনি আরো বলেন, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে  জেলার প্রতিটি মণ্ডপে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আনসার সদস্যরা থাকবেন। তারা মণ্ডপ পরিচালনা কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবেন। পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবকও থাকবেন প্রত্যেক মণ্ডপে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৭
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।