ঢাকা, রবিবার, ১৯ মাঘ ১৪৩১, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

শুধু রোহিঙ্গা নয়, স্থানীয়দেরও দেওয়া হবে সহায়তা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৭
শুধু রোহিঙ্গা নয়, স্থানীয়দেরও দেওয়া হবে সহায়তা বৃদ্ধ এক রোহিঙ্গা শরণার্থীর চোখেমুখে দুঃশ্চিন্তার ছায়া। ছবি: সোহেল সরওয়ার

কক্সবাজার থেকে: রোহিঙ্গা ভার বহন করে কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলার নানামাত্রিক ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে স্থানীয়দেরও সহায়তার আওতায় আনা হবে। এক্ষেত্রে অতি দরিদ্র, অস্বচ্ছল মানুষকে ত্রাণ দেওয়া হবে। পাশাপাশি রোহিঙ্গা শিবিরের আশপাশে রাস্তাঘাট, স্কুল-মাদ্রাসা-অবকাঠামো তৈরিতে এই খরচ করা হবে।

বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপচারিতায় আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা-আইওএম’র প্রতিনিধি সৈকত বিশ্বাস এসব কথা জানিয়েছেন।

সৈকত বিশ্বাস বলেন, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় একটি পরিকল্পনা নিয়ে এগোনো হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক সংস্থা, স্থানীয় এনজিও এবং আন্তর্জাতিক সংগঠন সবাই মিলে একটি পরিকল্পনার অংশ হয়েছে। আপাতত অাগামী ছয় মাসের জন্য পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। যাতে শুধু রোহিঙ্গাদের জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছে তা নয়। কিছু দিন আগের হিসাব অনুযায়ী নতুন-পুরাতন মিলিয়ে নয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা এখন বাংলাদেশে অবস্থান করছে। তার সঙ্গে স্থানীয় তিন লাখ মানুষকে এ পরিকল্পনার আওতায় নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ এখানে প্রায় ১২ লাখ মানুষকে ত্রাণ কার্যক্রমের আওতায় সহযোগিতা দেওয়া হবে।

তিনি জানান, এতো বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা আসায় বেড়েছে জিনিসপত্রের দাম। পরিবেশ বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। বেকারত্ব বেড়েছে। খেটে খাওয়া মানুষ তার নিজস্ব কাজের অভাবে দিন দিন অর্থ সংকটে পড়ছেন। তাদের বাছাই করে সহায়তা করা হবে বলে আপাতত সিদ্ধান্ত আছে।

তিনি আরও জানান, জাতিসংঘে ছয়টি প্রতিষ্ঠান সরাসরি ত্রাণ কাজে জড়িত। এগুলো হল জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার-ইউএনএইচসিআর, আইওএম, জাতিসংঘ শিশু তহবিল-ইউনেসেফ, জনসংখ্যা তহবিল-ইউএনএফপিএ, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। ইউএনএইচসিআর ১৯৯২ সাল থেকে এ এলাকায় স্থায়ীভাবে কাজ করছে। আইওএম করছে ২০১৩ সাল থেকে আর ইউনেসেফ ১৫ সাল থেকে। এই ছয়টি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও স্থানীয় এনজিও মিলে এ পরিকল্পনা করা হয়েছে। সরকারের অনুমতি ছাড়া কারো এ অঞ্চলে কাজ করার অবকাশ নেই।  

কাজের প্রসঙ্গ তুলে ধরে সৈকত বিশ্বাস বলেন, ত্রাণ দিতে মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রাখা হয়। এখন সেনাবাহিনীও কাজ করছে। তাদের সঙ্গেও করা হচ্ছে সমন্বয়।  

তিনি বলেন, মৌলিক চাহিদাগুলো মধ্যে মূলত আশ্রয়, খাদ্য, স্বাস্থ্য ও পানির ব্যাবস্থা করার জন্যই এ পরিকল্পনা। এজন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে ৪৩৪ মিলিয়ন ডলার (আনুমানিক ৪৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার) চাওয়া হয়েছে। এটি বাংলাদেশ ও এ অঞ্চলের প্রেক্ষাপট ভেবেই করা।

এদিকে রোহিঙ্গাদের জন্য ৩৪০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা) সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে। সোমবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের পক্ষে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক তিনটি সংস্থা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কুয়েতের উদ্যোগে রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনে প্রায় ৩৪০ মিলিয়ন ডলার সহযোগিতার আশ্বাস পাওয়া গেছে বলে জানান জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক প্রধান মার্ক লুকক।

বাংলাদেশ সময়: ০৩১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৭
কেডেজ/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।