আটকের পর অভিযুক্তদের সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও এখন তাদের বিরুদ্ধে কোনো বিভাগীয় ব্যবস্থায় যায়নি পুলিশ সদর দফতর। তবে, গড়ে প্রতিবছরই পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের হার বাড়ছে।
গত ২৫ অক্টোবর ভোরে ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ সড়কে একটি মাইক্রোবাসে তল্লাশি চালিয়ে মুক্তিপণের ১৭ লাখ টাকাসহ ডিবির ছয় সদস্যকে আটক করেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। গাড়ির গ্লাস ভেঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার পর জড়িত অপর একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত পুলিশের সদস্যরা হলেন এসআই মনিরুজ্জামান (৩৫), এসআই আবুল কালাম আজাদ (৩৯), এএসআই গোলাম মোস্তফা (৩৬), এএসআই ফিরোজ আহমদ (৩৪), এএসআই আলাউদ্দিন (৩২), কনস্টেবল মোস্তফা আজল (৫২) ও কনস্টেবল মো. আল আমিন (২৬)।
এ ঘটনায় ডিবির সাতজনকে আসামি করে টেকনাফ থানায় অপহরণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন ব্যবসায়ী গফুর আলম। বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) কক্সবাজারের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোশাররফ হোসেন অভিযুক্ত সবাইকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
পুলিশ সদর দফতর জানায়, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে নিয়মিত আইনে ফৌজদারি মামলা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে তারা এখন জেলে রয়েছেন। ফৌজদারি মামলার পর তাদের বিরুদ্ধে আর কোনো বিভাগীয় ব্যবস্থা চলে না।
এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ বিভাগের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) সহেলী ফেরদৌস বাংলানিউজকে বলেন, ফৌজদারি মামলায় ডিবির সাত সদস্যের দোষ প্রমানিত হলে সরকারি চাকরি বিধি অনুযায়ী তারা এমনিতেই চাকরিচ্যুত হবেন। তাদের বিরুদ্ধে আলাদা করে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন হবে না। তারা যদি দোষী হয়ে থাকেন, তাহলে উপযুক্ত শাস্তিও প্রত্যাশা করেন তিনি।
এদিকে, পুলিশ সদর দফতর থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত প্রতি বছরই পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার হার বেড়ে চলেছে।
সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে ১০ হাজার ৩৪ জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ২০১৬ সালে সংখ্যাটা দাঁড়ায় প্রায় ১৩ হাজার ৬শ’ জনে।
আর ২০১৭ সালে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার একশ’ সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এর ম্যধ্যে ২০১৫ সালে ৭৮ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। ২০১৬ সালে ৭০ জন এবং চলতি বছরে এ পর্যন্ত মাত্র ১ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহেলী ফেরদৌস বলেন, পুলিশের কনস্টেবল থেকে পরিদর্শক পদবি পর্যন্ত দোষী সদস্যদের বিরুদ্ধে সরাসরি সদর দফতর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। আর এখানে দায়িত্ব পালনে অবহেলা, অসদাচরণ, পারিবারিক অভিযোগসহ বিভিন্ন অপরাধে বিভিন্ন ধরনের শাস্তি প্রদান করা হয়। যে ধরনের অপরাধ ফৌজদারী অপরাধের আওতায় পড়ে না, এ ধরনের অপরাধে আমরা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৭
পিএম/জেএম