জানা যায়, ২০১৪ সালের হল আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের বিপরীত পাশে জনসন রোডে সমবায় ব্যাংকের দখলে থাকা প্রায় ছয় কাঠা জমি দখল নিয়ে টিএসসি ঘোষণা দেয়। এরপর একাধিকবার ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতার বিরুদ্ধে এখানে দোকান বসিয়ে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
সম্প্রতি ছাত্রলীগের নতুন কমিটি আসার পর তারা টিএসসি থেকে সব দোকানপাট সরিয়ে দেয়। এখনও কিছু দোকান মালিক বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে টিএসসির জমির পাশেই ফুটপাতে প্লেটে করে লুচি-ডাল, সিঙ্গাড়া ও খিচুড়ি বিক্রি করছেন।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নতুন করে গড়ে ওঠা এসব দোকানের আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ময়লা-আবর্জনা। এ পরিবেশেই খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। কোনো দোকানেই নেই প্লেটগুলো ধোয়ার মতো পরিষ্কার পানি।
প্লেটগুলো পর্যাপ্ত পানিতে ধোয়ার কথা থাকলেও ন্যূনতম পানিতেও ধোয়া হয় না। নোংরা প্লেটগুলো শুধু কাপড় দিয়ে মুছে পরিষ্কার করে ফের পরিবেশন করা হচ্ছে খাবার। আবার কিছু সময় এক বালতি পানি দিয়েই সমস্ত প্লেট সারা দিন ধোয়া হচ্ছে। নোংরা পানিতে ধোয়া সেই প্লেটে খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। এছাড়াও লুচি তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্ষতিকর পাম অয়েল।
এসব খাবার যে শুধু জবির শিক্ষার্থীরাই খাচ্ছে তা নয়, পার্শ্ববর্তী হিড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কল অ্যান্ড কলেজ এবং ঢাকা কলিজিয়েট স্কুলের ছোট ছোট শিশুরা এ খাবার খাচ্ছে।
এ বিষয়ে দোকানদার নূর নবীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই পানি পুরোপুরি পরিচ্ছন্ন।
এরপর তাকে পানি পরিবর্তন করতে বলা হলেও তিনি নির্বিকার ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকেন।
সেখানে অবস্থানরত জবি ছাত্র রুবায়েত হাসান রাকিব বাংলানিউজকে বলেন, ভার্সিটির ক্যান্টিনগুলোর খাবার নিম্নমানের হওয়ায় তাদের বাইরে এসে খেতে হয়। কিন্তু সেখানেও স্বস্তি নেই, তবুও বাধ্য হয়েই খেতে হয়।
অপর এক শিক্ষার্থী ইনজামামুল হুসাইন বাংলানিউজকে বলেন, ভার্সিটিতে আবাসন ব্যবস্থা না থাকায় ক্যাম্পাসে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত থাকতে হয়। যে কারণে অনিচ্ছা সত্ত্বেও এসব অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাবার খেতে হচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থীরা প্রায়ই পেটের অসুখসহ দীর্ঘমেয়াদী সমস্যায় ভুগছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জবি প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. নুর মোহাম্মদ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা মিটিংয়ে জবির ক্যান্টিন নিয়ে আলোচনা করেছি। আশা করি খুব দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্র কল্যাণ পরিচালক শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, টিএসসির জায়গাটি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের না। তাই এটা বাইরে হওয়ায় আমার কিছু করার নেই। ছাত্ররা কোথায় খাবে বা কি খাবে এটা আমার দেখার বিষয় নয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৭
ডিআর/এএ