একাধিক প্রার্থী বাংলানিউজকে বলেন, লিখিত পরীক্ষার ফলাফলে আমরা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পরীক্ষার্থী খুব ভাল ও আশানুরূপ পরীক্ষা দিয়েও পাশ করতে পারিনি, যা আমাদের রীতিমত হতবাক করেছে।
তারা বলছেন, প্রকাশিত ফলাফল পর্যবেক্ষণ করে আমরা নানা রকম অসঙ্গতির প্রমাণ পেয়েছি।
এ বিষয়ে কয়েকটি ঘটনারও বর্ণনা দিয়েছেন তারা।
শিক্ষার্থীদের দাবি, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব গ্লাস অ্যান্ড সিরামিকস কেন্দ্রে পাশের হার প্রায় ৬৮ শতাংশ, কিন্তু সমান সংখ্যক (৬০০ জন) পরীক্ষাথী অংশ নিলেও রাজধানী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পাশের হার মাত্র ৪০ শতাংশ। পিএসসির আসন বিন্যাস অনুযায়ী দুটি কেন্দ্রে সমান সংখ্যক পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করলেও দুটি কেন্দ্রের পাশের হারের পার্থক্য প্রায় ৩০ শতাংশ।
তারা অভিযোগ করেন, বেশকিছু কেন্দ্রে একটানা ২০ থেকে ৩০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে একজনও ফেল নেই, আবার কিছু কেন্দ্র যেমন গণভবন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে একটানা ১৯ জন (রেজি: নং: ০৬৭৯৪২-০৬৮৫১২), রাজধানী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে একটানা ৩৫ জন(রেজি: নং: ০৮৪৩১৬-০৮৫০১১) পরীক্ষার্থীদের মধ্যে একজনও পাশ করেননি। রাজধানী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে রেজি: নং ০৮৩৭৪৬-০৮৫০১১ পর্যন্ত ৬০জনের মধ্যে পাশ করেছেন মাত্র ২ জন, গণভবন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে রেজি: নং ৫৮৯১২-৫৯১১৭ পর্যন্ত ২৮ জনের মধ্যে পাশ করেছেন মাত্র ৩ জন এবং রেজি: নং ০৬১২৬৬-০৬২৪৭২ পর্যন্ত ১০৪ জনে পাশ করেছেন ১৪ জন।
অপরদিকে, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব গ্লাস অ্যান্ড সিরামিকস কেন্দ্রে রেজি: নং ০৭২৫৩১-০৭৪৩৮১ পর্যন্ত ১৩০ জনে পাশ করেছেন ১১৭ জন এবং রেজি: নং ০৭১৬৭০-০৭২৪০৭ এর মধ্যে ৬৪ জনে পাশ করেছেন ৫৬ জন।
অভিযোগকারীরা বলছেন, এক কেন্দ্রে সকল মেধাবীর সমন্বয় হওয়া আর অন্য কেন্দ্রে এমন গণহারে ফেল করার ঘটনা সাধারণত লিখিত পরীক্ষার ক্ষেত্রে ঘটে না। এবার প্রকাশিত ফলাফলে যেখানে গড়ে প্রতি ৩ জনে প্রায় ২ জন পাশ করেছে, সেখানে কিছু কিছু কেন্দ্রে এমন ফলাফল বিপযর্য় ঘটেছে, ফলাফল প্রস্তুতির কোনো না কোনো ধাপে অসঙ্গতিরই ইঙ্গিত বহন করে।
প্রকাশিত ফলাফলে কোনো কারিগরি কারণে গুরুতর ত্রুটি কিংবা অসঙ্গতি হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখার জন্য পিএসসির কাছে অনুরোধ জানিয়েছে প্রার্থীরা। বৃহস্পতিবার (০২ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে আগারগাঁওয়ে কমিশনের সামনে শতাধিক শিক্ষার্থী এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।
তারা বলছেন, স্বাভাবিকভাবে আমাদের পূর্ণ আস্থা, অবিচল বিশ্বাস ও নির্ভরতার শেষ আশ্রয়স্থল হলো সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। বরাবরের মতো এখনও আমরা সেই আস্থায় অবিচল। আমরা মনে করি, পিএসসির সকল কার্যক্রমেই অত্যন্ত স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রেখে প্রকৃত মেধাবীদের সঠিক মূল্যায়ন করা হয়। কিন্তু ৩৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা অত্যন্ত ভাল দেয়া সত্ত্বেও প্রকাশিত ফলাফলে আমাদের রেজি: নং না দেখে আমরা সত্যিকার অর্থেই বিস্মিত হয়েছি। আমরা যেমন পরীক্ষা দিয়েছি তাতে কোনভাবেই ফেল করার কথা নয়।
আমাদের আশঙ্কা যে, ৩৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রস্তুতির বিভিন্ন ধাপে যেমন, নম্বর যোগ করতে ভুল করা, ডাটা এন্ট্রিতে ভুল করা, সফটওয়ার গত ত্রুটি হওয়া, ডাটা মিসিং হওয়া সংক্রান্ত কোনো অনিচ্ছাকৃত কারিগরি ত্রুটি হয়ে থাকতে পারে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, আমাদের আকুল আবেদন মানবিক দিক বিবেচনা করে ৩৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রস্তুতির কোনো ধাপে অনিচ্ছাকৃত কারিগরি ত্রুটি হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হোক।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৭
এমআইএইচ/জেএম