ঢাকা, শনিবার, ৩ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ছয় দিনেও অধরা নাসিমের হত্যাকারী

প্রশান্ত মিত্র, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৭
ছয় দিনেও অধরা নাসিমের হত্যাকারী নিহত নাসিম

ঢাকা: রাজধানীর বাড্ডায় বিপিএল জুয়াকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র নাসিম আহমেদ (২৪) খুন হওয়ার ছয়দিনেও গ্রেফতার হয়নি কেউ। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তদন্তে এ পর্যন্ত অগ্রগতি বলতে, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে হত্যাকারী আসিফ নামে একজনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তবে, হত্যাকারী আসিফসহ এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন তার অন্যান্য সহযোগীরাও।

গত ৬ নভেম্বর সকালে রাজধানীর বাড্ডা থানাধীন পোস্ট অফিসের গলি এলাকায় নিজ বাসার সামনে ছুরিকাঘাত করে নাসিমকে খুন করা হয়। নিহত নাসিম বেসরকারি মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিবিএ তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।

নয় মাস আগে তার বিয়ে হয়।

ঘটনার দিন রাতেই বাড্ডা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নাসিমের বাবা আলী আহমেদ সাইফ উদ্দীন। মামলা নং ৭। মামলায় আসিফ শিকদার (২১), আসামী রজমান আলী (৩৮) ও আব্দুর রশিদসহ (৫০) অজ্ঞাত আরও ৩/৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনাস্থলের পাশের একটি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পরে ওই ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ও স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যে আসিফকে শনাক্ত করা হয়। ফুটেজে দেখা যায়, নাসিমকে ছুরিকাঘাত করার পর রক্তাক্ত ছুরি হাতে আসিফ ঘটনাস্থল থেকে হেঁটে চলে যান।
অভিুক্ত আসিফনিহতের পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার পর মূল আসামি আসিফ এলাকাতেই ছিলেন। হত্যাকাণ্ডে আরও ২/৩ জন তাকে সহযোগিতা করেছিল। ওইদিন রাতে নাসিমের জানাজা নামাজের পর আসিফসহ সব আসামিরা আত্মগোপনে চলে যান। এদিকে, মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, আসিফসহ সব আসামিকে গ্রেফতারে জোর চেষ্টা চলছে।

নিহত নাসিমের ছোট ভাই দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র নাবিল আহমেদ বাংলানিউজকে বলে, বিপিএল খেলা নিয়ে ক্যারাম বোর্ড খেলার দোকানে রমরমা জুয়ার আসর চলছিল। সেখানে সন্ধ্যার পর ক্যারাম খেলতেন তার বড় ভাই নাসিম। ৫ নভেম্বর রাতে নাসিম ক্যারাম খেলতে গিয়ে দেখেন বিপিএলের ম্যাচ নিয়ে মোটা অঙ্কের জুয়া চলছিল। তখন এতে বাধা দেন নাসিম। এর ফলে স্থানীয় রমজান আলী, আসিফ, রশিদ, শহীদুল ও রফিকসহ কয়েকজনের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয় নাসিমের।

নাবিল আরও জানায়, বিষয়টি আপস করতে গেলে রমজান ও রশিদ মারধর করেন নাসিমের বাবাকেও। এর জেরে পরদিন সকালে নাসিমকে বাসার নিচে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় আসিফ।

হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী ও নাসিমের প্রতিবেশী লিমন বলেন, সকাল ৯টার দিকে নাসিমদের বাসার দিকে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ চিৎকার শুনে সামনে এগিয়ে দেখি আসিফ চলে যাচ্চে আর নাসিম রক্তাক্ত। ঘটনার পরেও দীর্ঘক্ষণ আসিফ এলাকাতেই ছিল, অথচ এখন পর্যন্ত আসিফকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

নাসিমের বাবা আলী আহমেদ সাইফ উদ্দীন বলেন, ঘটনার পর পরই জড়িতদের কথা জানা গেছে। মামলাতেও তাদের নাম এসেছে। কিন্তু এখনো কেন কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হলো না?

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাড্ডা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কামরুল হাসান বলেন, উদ্ধারকৃত ভিডিও ফুটেজ দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে নাসিম হত্যায় মূল হোতা আসিফ। শুধু আসিফ নয়, প্রযুক্তির সহায়তায় সব আসামিকে গ্রেফতারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।

জড়িতদের গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার মূল কারণ বেরিয়ে আসবে বলে মনে করেন এসআই কামরুল হাসান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির বাড্ডা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) আশরাফুল করিম বাংলানিউজকে জানান, মামলার আসামিদের এখনো গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তাদের অবস্থান সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

বাংলাশে সময়: ১৮০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৭
পিএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।