ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ভারত-রাশিয়ার বীর যোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রধানমন্ত্রীর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৭
ভারত-রাশিয়ার বীর যোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রধানমন্ত্রীর ভারত ও রাশিয়ার ওয়ার ভেটারনদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

ঢাকা: মহান মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী সময়ে সদ্য স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনে সহায়তাকারী ভারত ও রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে গণভবনে।

সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে গণভবনের সবুজ লনে বীর যোদ্ধাদের এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

৪৭ তম মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত এ সংবর্ধনায় ভারতের ২৮ বীর যোদ্ধা, তাদের স্ত্রী ও সন্তান, ভারতের চার জন সামরিক কর্মকর্তা এবং ৬ জন দূতাবাস কর্মকর্তা অংশ নেন।

একই সঙ্গে রাশিয়ার ৪ বীর যোদ্ধা, তাদের স্ত্রী ও তিন দূতাবাস কর্মকর্তাও যোগ দেন এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে।

আমন্ত্রিত এই বীর যোদ্ধারা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার পাশাপাশি যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে মাইন অপসারণ ও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে অবদান রাখেন।

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত সকল অতিথিদের কাছে যান এবং দীর্ঘ সময় ধরে রাষ্ট্রের অতিথি এই বীর যোদ্ধা ও তাদের স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর আরেক কন্যা শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি উপস্থিত ছিলেন।

এ অনুষ্ঠান উপলক্ষে ভিন্ন আঙ্গিকে সাজানো হয় গণভবনের আঙিনা।

পরে প্রধানমন্ত্রী তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে আমন্ত্রিত এই বীর যোদ্ধাদের উদ্দেশে বলেন, আমরা আপনাদের ত্যাগ ও অবদানের কথা ভুলিনি। আপনারা আমাদের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত ও রাশিয়ার অবদান বাংলাদেশ কখনো ভুলবে না। আপনারা আমাদের দেশে এসে আমাদের সম্মানিত করেছেন।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, আমরা সব সময়ই আপনাদের অবদানের কথা স্মরণ করি। আমরা মহান নেতা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা পেয়েছি। আপনারা যুদ্ধে সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন।

দুর্দিনে পাশে দাঁড়ানো যোদ্ধাদের বাংলাদেশে স্বাগত জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা যখন মন চায় আমাদের দেশে আসবেন, আমাদের আতিথেয়তা গ্রহণ করবেন।

লে. জেনারেল (অব.) জয় ভগবান সিং যাদব ভারতীয় প্রতিনিধিদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন তিনি।

জয় ভগবান সিং যাদব বলেন, এই ঐতিহাসিক উপলক্ষ্যকে ঘিরে বাংলাদেশ সফর আমাদের জন্য মহান সুযোগ।

নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষায় বাংলাদেশের অগ্রগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের সফরে দেখেছি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর অনেক অগ্রগতি হয়েছে।

১৯৭১ সালের স্মৃতিচারণ করে লে. জেনারেল (অব.) জয় ভগবান সিং বলেন, দীর্ঘ নয় মাস অনেক আঘাত ও নৃশংসতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। কিন্তু মুক্তিবাহিনীর ভাইদের সাহস একটা প্লাটফর্ম তৈরি করেছে। যার ফলে আমরা মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের সহযোগিতায় পাশে এসে দাঁড়াতে পেরেছি।

ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক রক্ত আর ঘামে সংযুক্ত। আমি নিশ্চিত অতি মজবুত এই সম্পর্ক দুই দেশের বন্ধুত্বকে চিরস্থায়ী করবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে ভগবান সিং বলেন, বাংলাদেশে অভূতপূর্ব অগ্রগতি লাভ করেছে। এটা সম্ভব হয়েছে তার (শেখ হাসিনা) চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা সাহসের কারণে।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব আরো ঘনিষ্ঠ ও সম্প্রসারণ হবে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমরা সব নেতিবাচক ও অস্থিতিশীল শক্তিকে পরাজিত করতে পারবো।

রাশিয়ান প্রতিনিধি দলের নেতা রুশ নৌবাহিনী প্যাসিফিক ফ্লিটের কমোডর (অব.) জিএস সলকার মুক্তিযুদ্ধে মহান বিজয় অর্জনের জন্য বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানান।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে রাশিয়া অন্যায়ের বিরুদ্ধে উদীয়মান বাংলাদেশের জনগণকে সমর্থন করেছে।

জিএস সলকার আরও বলেন, চট্টগ্রাম ও বঙ্গোপসাগরের আশপাশে এলাকাকে মাইন মুক্ত করতে ১২ নম্বর স্পেশাল টাক্সফোর্স যোগদানের জন্য আমরা সোভিয়েত ইউনিয়নের পক্ষ থেকে নির্দেশ গ্রহণ করি।

মহান বিজয় দিবস উদযাপন ‍উপলক্ষে রাশিয়ার বীর যোদ্ধা এবং সামরিক কর্মকর্তাদের আমন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

পরে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে বঙ্গবন্ধুর কিছু বিরল ছবি, ক্রেস্ট, বই ও স্মৃতি চিহ্ন উপহার হিসেবে তুলে  দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৭
এমইউএম/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।