ঢাকা, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

মেঘলা আকাশ, রাজশাহীতে জেঁকে বসেছে শীত 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৭
মেঘলা আকাশ, রাজশাহীতে জেঁকে বসেছে শীত  রাজশাহীতে জেঁকে বসেছে শীত। ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: এবছর অনেকটা স্বাভাবিক নিয়মেই এসেছে শীত। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই মিলেছে শীতের আমেজ। কিন্তু যে হারে শীত পড়ার কথা ছিলো, সেভাবে অনুভূত হয়নি। তবে পৌষের শুরুতেই রাজশাহীতে জেঁকে বসেছে শীত।

তাপমাত্রা না কমলেও আকাশ মেঘলা থাকায় মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) ভোর থেকে কনকনে ঠান্ডা পড়ছে। মেঘের কারণে বেলা ১২টা পর্যন্ত সূর্যের মুখ দেখা যায়নি।

 

মেঘলা আবহাওয়ায় শীতের দাপটও বেড়েছে। এর ওপর উত্তরের হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করেছে। ফলে প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে ভাসমান ও ছিন্নমূল মানুষরা শীতে কাতর হয়ে পড়েছে। শীত নিবারণের জন্য কম দামে শীতবস্ত্র কিনতে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন মহানগরীর ফুটপাতের দোকানগুলোতে।

এছাড়া ভোরে ও সন্ধ্যার পর ছিন্নমূল মানুষগুলোকে গত দু’দিন থেকে পথের ধারে খড়-কুটায় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা যাচ্ছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণও শুরু হয়েছে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আরিফুল হক বাংলানিউজকে বলেন, সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) থেকে হঠাৎ ঠান্ডা বেড়ে গেছে। তাই হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। এদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের সংখ্যা বেশি। আক্রান্তদের বেশিরভাগই ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, হৃদরোগ, অ্যাজমা নিয়ে হাসপাতালে আসছেন।
শীতবস্ত্র কিনতে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন মহানগরীর ফুটপাতের দোকানগুলোতে।  ছবি: বাংলানিউজ
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন বাংলানিউজকে বলেন, মূলত আকাশে মেঘ থাকায় শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। তবে তাপমাত্রা তেমন নামেনি। রাজশাহীতে গত ১৩ ডিসেম্বর সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পৌষের শুরুতে এই তাপমাত্রা স্বাভাবিক।  

এর আগে গত ১৬ ডিসেম্বর কিছুটা তাপমাত্রা কম ছিলো। ওই দিন রাজশাহীতে ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিলো বলেও তিনি জানান।  

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত আবহাওয়া কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, মঙ্গলবার শীত বেশি অনুভূত হলেও তাপমাত্রা কমেনি। আকাশে মেঘ রয়েছে তাই মনে হচ্ছে শীত পড়ছে। অনেকেই মনে করছেন তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু প্রকৃত কারণ হচ্ছে মেঘলা আকাশ। বরং এই মেঘ কেটে গেলেই  রাজশাহীতে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করবে। তখন এর চেয়েও বেশি শীত অনুভূত হবে রাজশাহীতে।

তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কা থেকে যেই মেঘমালাটি ভারতে ঢোকার কথা ছিলো তা দিক পরিবর্তন করে সেখানে গিয়ে বাংলাদেশের পঞ্চগড় দিয়ে উত্তারাঞ্চলে ঢুকে পড়েছে। এজন্য আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে রয়েছে। এই মেঘে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তবে এই মেঘ কেটে গেলে রাজশাহীতে তাপমাত্রা কমবে, শীত বাড়বে।

এক প্রশ্নের জবাবে আশরাফুল আলম বলেন, সাধারণত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নিচে নেমে আসলে আমরা তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলি। ৮ থেকে ৬ এর নিচে নেমে আসলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। এছাড়া ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়ে থাকে। তবে এবার তাপমাত্রা নামলেও এতটা নামার কোনো আশঙ্কা নেই। গত বছর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছিল।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসের কথা উল্লেখ করে রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের এই কর্মকর্তা বলেন, মেঘ কাটলে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে একটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ এ অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে। এছাড়া জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দুইটি মাঝারি থেকে তীব্র শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তখন তাপমাত্রাও অনেক কমে আসবে।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. হেলাল মাহমুদ শরীফ বাংলানিউজকে জানান, শীত মোকাবেলায় এবারও জেলা প্রশাসনের প্রস্তুতি রয়েছে। ইতোমধ্যে মহানগরী ও ৯টি উপজেলায় বিতরণের জন্য কম্বল দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৭
এসএস/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।