ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

জীর্ণতাকে সঙ্গে নিয়ে অস্ত গেলো শেষ সূর্য

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৭
জীর্ণতাকে সঙ্গে নিয়ে অস্ত গেলো শেষ সূর্য ২০১৭’র শেষ সূর্যাস্ত/ছবি: মানজারুল ইসলাম

নারায়ণগঞ্জ: পড়ন্ত বিকেলের সূর্যটা তখন ছড়িয়ে দিয়েছে তার সমস্ত আভা। নৌকার গুলুই ছুয়েছে শীতলক্ষ্যার জল। একটু পরেই ডুবে যাবে সূর্যটা। ২০১৭ সালের শেষ সূর্য।

প্রতিদিনের সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জীবন থেকে হারিয়ে যায় একটি দিন। তবে আজকের সূর্যাস্তটা একটু ভিন্ন।

শুধু একটি দিন নয়, আজ হারিয়ে গেলো গোটা একটি বছর।

২০১৭ শুরু হয়েছিলো অনেক চাওয়া পাওয়ার হিসাব নিয়ে। কারো হিসাবের খাতা মিলেছে, কারো মেলেনি। কারোটা আবার অমীমাংসিতও রয়ে গেছে। কেউবা আবার চাওয়া পাওয়ার এ খেলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছে। কারো কারো কাছে এগুলো হয়তো ছিল নিছক চাওয়া-পাওয়া মাত্র। তাই তারা জীবনের এ বন্ধুর খেলায় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে গেছেন। অপরদিকে, প্রকৃতির চিরন্তন বিধি মতে সূর্য খেলেছে উথান-পতনের খেলা। ঠিক ২৪ ঘণ্টায় একবার। প্রকৃতির নিয়মই এমন। কাউকে সে কম বা বেশি দেয় না।

প্রায় একই রকম কথা বললেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী লোপা মজুমদার। নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যার তীরে বন্ধুদের সঙ্গে বছরের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে এসেছেন তিনি। কথা হলে বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিটি বছরেই কিছু না কিছু চাওয়া-পাওয়া থাকে। বছর শেষে সেগুলোর কিছু মেলে, কিছু মেলে না।  
 
তাই বলে থেমে থাকলে তো হবে না। বরং এগিয়ে যেতে হবে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে।

সকালে পূর্ব দিকে ওঠা সূর্যটি হালকা কুয়াশার দিন পেরিয়ে সন্ধাতেও ছিল রক্তিম। আভা ছড়িয়েছে গোধূলি লগ্নেও। পৌষের দিন শেষের সে ক্ষণে কঠোর সূর্যটাও যেন নিয়েছিলো নমনীয় এক রূপ। কমতি ছিল না কোমলতারও। তাইতো তাতে মুগ্ধ হয়েছে শিশু থেকে বৃদ্ধরাও।

সন্ধ্যার সে সূর্য দেখে ছোট্ট শিশু হাসনাত আবীরের প্রশ্ন জাগে বাবার কাছে। বলে উঠে, দেখ বাবা, সূর্যটা কেমন লাল হয়ে ডুবে যাচ্ছে! এটা কি আবার কাল উঠবে?

বাবা আরিফুর রহমান কোলে তুলে নিলেন ছেলেকে। সূর্যটির দিকে আঙুলের ইশারা করে ছেলেকে বললেন, উঠবে বাবা। তবে সে এক নতুন সূর্য। একটি নতুন বছর। এ বছরের শেষ সূর্য এটাই।

সূর্যের লাল আভায় রাঙা হয়েছে শীতলক্ষ্যার জল। শেষ সূর্যাস্ত দেখতে তীরে ভিড় জমিয়েছে পাখিরাও। আবীর ইশারা করলো সেদিকেই। হাত নাড়তে নাড়তেই উচ্চারণ করলো- বিদায় ২০১৭।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৭
এইচএমএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।