এ শহীদ মিনারেই শ্রদ্ধা জানান শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও স্থানীয়রা। অনেক সময় জনপ্রতিনিধিরাও উপস্থিত হন শ্রদ্ধা জানাতে।
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ জায়গায় স্থায়ী শহীদ মিনার নেই। জেলায় মোট ১ হাজার ৬৮৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে কতটিতে শহীদ মিনার আছে বা কতটিতে নেই সে তথ্য নেই জেলা প্রশাসন ও শিক্ষা দপ্তরগুলোতে।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সদর উপজেলার তালেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা যায়, কলাগাছ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে অ-সম্পূর্ণ ও অস্থায়ী শহীদ মিনার। এ শহীদ মিনারেই প্রথম প্রহরে শ্রদ্ধা জানায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।
বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী তানজিলা আক্তার বলে, আমাদের বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। প্রতি বছর আমরা কলাগাছ ও কাদা মাটি দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে ভাষা শহীদদের স্মরণ করি।
শরণখোলা উপজেলার দক্ষিণ খুড়িয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেখানে কলাগাছ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করা হয়েছে। অনুরুপ কচুয়া উপজেলার টেংরাখালী হোসাইনিয়া আলিম মাদ্রাসায় নেই শহীদ মিনার।
মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহেসিন উদ্দিন বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানে কোনো শহীদ মিনার নেই। প্রতি বছর নিজস্ব উদ্যোগে শহীদ মিনার তৈরি করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করি আমরা। তবে স্থায়ীভাবে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য চেষ্টা করছি।
সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে জানান যায়, জেলায় ১১৫২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩২৩টি মাধ্যমিক, ১৬৫টি মাদ্রাসা ও ৪৯টি কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে কলেজগুলোতে শহীদ মিনার থাকলেও প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মাদ্রাসাগুলোতে স্থায়ী শহীদ মিনার নেই। প্রতি বছর কলাগাছ ও কাঠ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অশোক কুমার সমাদ্দার বাংলানিউজকে বলেন, কতটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই তা আমার জানা নেই। বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা দিয়ে কিছু বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার তৈরি করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।
জেলা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আপনাদের কাছ থেকে শুনলাম বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য আমার কার্যালয়ে নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করে যেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সেখানে শহীদ মিনার তৈরির ব্যবস্থা করা হবে।
অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. শাহিন হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা না থাকার তথ্য আমাদের কাছে নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে এ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে সব প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৫ ঘণ্টা, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮
আরএ