ঢাকা, রবিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

আফ্রিকায় ১৪ টাকা বিঘার জমি হারালো বাংলাদেশ!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০৪ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০১৮
আফ্রিকায় ১৪ টাকা বিঘার জমি হারালো বাংলাদেশ! আফ্রিকার এক নারী কৃষক/ ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: আফ্রিকা মহাদেশের বিভিন্ন দেশে সস্তায় ও সহজে জমি লিজ নিয়ে চাষাবাদের পরিকল্পনায় সবচেয়ে বড় বাধা ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান। মাত্র ৫০০ কোটি টাকা ছাড় না দেওয়ায় মহাদেশটিতে বিঘা প্রতি ১৪ টাকায় জমি লিজ নিয়ে চাষাবাদের পরিকল্পনা বাতিল হয়ে গেছে!

আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়াহিদুর রহমান বাংলানিউজকে এ খবর জানিয়েছেন। আফ্রিকায় জমি লিজ নিয়ে চাষাবাদ করার পরিকল্পনা বাতিলের খবর জানিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হকও।

সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়াহিদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের টাকা চুরির ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করেন গভর্নর ড. আতিউর রহমান। তার রক্ষণশীল আচরণে বাংলাদেশ আফ্রিকায় জমি লিজ নেওয়ার মতো বিশাল একটি সম্ভাবনা হারিয়েছে।

গত বছর বন্যায় দেশে ব্যাপক ফসলহানি হয়। আজ যদি এ জমিগুলো নেওয়া থাকতো তাহলে শষ্যের জন্য অন্য দেশের মুখাপেক্ষী হতে হতো না, আক্ষেপ করে বলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে অর্থ উপদেষ্টা মশিউর রহমানকে সভাপতি করে একটি কমিটি করে দেন। যখনই অর্থ ছাড়ের কথা আসে তখনই তৎকালীন গভর্নর মানি লন্ডারিংয়ের কথা বলে টাকা দেননি।

২০০৯ সালে প্রথম এ সরকার ক্ষমতায় এসেই আফ্রিকায় জমি লিজ নিয়ে চাষাবাদের পরিকল্পনা করে। জমি লিজ নিয়ে চাষাবাদে কিছু ব্যক্তি উদ্যোগের খবর জেনে পরিকল্পনা নেওয়া হয় তখন।

ওয়াহিদুর রহমান বলেন, সরকারি উদ্যোগে আফ্রিকা মহাদেশে কৃষি জমি লিজ নিয়ে চাষাবাদ করার পরিকল্পনা মূলত বাতিল হয়ে গেছে বলে আমি জানি। বাংলাদেশ ব্যাংকের অতি সাবধানী পদক্ষেপের কারণেই এটি হয়েছে।

তিনি বলেন, লাইবেরিয়া, সেনেগাল, আইভরিকোস্ট ও কেনিয়ায় অনেক চাষযোগ্য পতিত জমি ছিল। এসব দেশে বিঘা প্রতি মাত্র ২১ সেন্ট (১৪ টাকা) দিয়ে জমি লিজ নেওয়া যেতো। এক একটি দেশে হাজার হাজার বিঘা জমি লিজ নিতে কতটুকু টাকা লাগতো আন্দাজ করুন। কিন্তু যক্ষের মতো টাকা রেখে বসে বসে সেই সুযোগ হারাতে হয়েছে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, ২০১০ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং আফ্রিকা মিশন’ মহাদেশটিতে প্রচুর চাষযোগ্য জমির সন্ধান পায়। এরমধ্যে জাম্বিয়ায় ২ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর, মোজাম্বিকে ২ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর, কেনিয়ায় ৫০ হাজার হেক্টর, ঘানায় ৫০ হাজার হেক্টর, তানজানিয়ায় ৩০ হাজার হেক্টর ও উগান্ডায় ৩০ হাজার হেক্টর জমি ছিলো। কিন্তু এখন এসব চিন্তায় বাধা দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৮০০ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০১৮
কেজেড/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।