জানা যায়, ২০০৬ সাল থেকে শিকলবন্দি অবস্থায় জীবন কাটাচ্ছে বাসন্তী। গরীব বাবা হরিপদ মেয়েকে সুস্থ করার জন্য স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করিয়েছিলেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাড়ির বাইরে আম গাছের সঙ্গে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে বাসন্তীকে। স্বাভাবিকভাবে কথা বলছেন তিনি। প্রতিদিন সকালে বাড়ির কাজ করার পর তাকে পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। এরপর সন্ধ্যায় শিকলমুক্ত করে বাড়িতে নেওয়া হয়। তবে বাসন্তীর দাবি, তিনি পাগল নন।
এ বিষয়ে বাবা হরিপদ রায় বাংলানিউজকে বলেন, পেশায় কামার হলেও স্বপ্ন দেখতাম মেয়েকে উচ্চ শিক্ষিত করতে। মেয়ে স্কুলে বেশ ভালই পড়াশোনা করছিল। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাসন্তীর আচরণ হঠাৎ পাল্টাতে থাকে। কখনও প্রলাপ বকতো। গ্রামে যার-তার বাড়িতে গিয়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে জিনিসপত্র নিয়ে আসতো। এতে অনেকে মারধরও করতো। অনেককে দিতে হতো জরিমানা। এনিয়ে আমার কাছে প্রায়ই নালিশ করতো স্থানীয়রা।
ভাই রতন কুমার বাংলানিউজকে বলেন, অন্যের বাড়ি যাওয়ায় অনেকে বাসন্তীকে মারধর করে, কেউ অভিযোগ করে, আবার কখনও চুরির অপবাদে দিতে হতো জরিমানা। তাই আমরা তাকে বেঁধে রেখেছি।
তিনি আরো বলেন, সরকার ও সমাজের লোকজনের কাছে বাসন্তীর চিকিৎসার আবেদন জানানো হয়েছে। সঠিকভাবে চিকিৎসা করা হলে বাসন্তী আবারো স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেতে পারে।
বাসন্তীকে বেঁধে রাখার বিষয়ে দেবীগঞ্জ উপজেলার দেবীডুবা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে জানান, বাসন্তীকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা এবং তাকে দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়াটা দুঃখজনক বিষয়। পরিবারের লোকের সঙ্গে কথা বলে তাকে শিকলমুক্ত রাখার ব্যবস্থা করবো। তার চিকিৎসার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৮
এনটি