বৃহস্পতিবার (৮ মার্চ) জাতীয় নারী দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এ সভার আয়োজন করে।
এসময় মন্ত্রী বলেন, সবক্ষেত্রে নারী পুরুষের সমতা বিধান করতে হবে। নারীর উন্নয়ন ছাড়া কোনো দেশের উন্নয়ন সম্ভব হয় না। সংবিধানেও নারী পুরুষের সমান অধিকারের কথা বলা হয়েছে। এর ফলে স্বাধীনতাত্তোর প্রথম পার্লামেন্টেই নারীরা প্রতিনিধিত্ব করতে পেরেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও নারীর উন্নয়নে নানাবিধ উন্নয়নে ভূমিকা পালন করেছেন এবং করছেন। তার সরকার আমলেই বাংলাদেশে প্রথম নারী সচিব নিয়োগ পান।
মন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিকভাবে নারী উন্নয়নে বাংলাদেশের স্থান বিশ্বে সপ্তম। বর্তমানে সংসদে ৭২জন নারী সদস্য রয়েছেন। ব্রিটিশ পার্লামেন্টেও বাংলাদেশের বংশোদ্ভুত ৩ জন নারী রয়েছেন। আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন হচ্ছে। এটা বজায় থাকলে স্বাভাবিক ভাবেই নারীরা এগিয়ে যেতে থাকবে।
অনুষ্ঠানে তথ্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দিন বলেন, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করতে হবে। শুধু নির্যাতন নয়, পাশাপাশি নারীদের অর্জনগুলোও তুলে ধরতে হবে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আফরোজা খান বলেন, পরিবারের সবার জন্য সময় রেখে তারপর নিজের সময়টুকু নিয়ে ভাবে নারী। তাই এ মানুষটি নিশ্চয় অন্যদের কাছে থেকে একটু ভালো সময় আশা করতে পারে। নারী সবার সঙ্গে এগিয়ে যেতে চায়। এখানে সহকর্মী সব পুরুষদের সহযোগিতাও আমাদের কাম্য।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নমিতা হালদার বলেন, অনেকেই বলছেন দেশের বাইরের শ্রমসংস্থানে বিভিন্ন নারী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। আমরা সেসব বিষয় নিয়ে কাজ করছি। প্রয়োজনে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে নারী শ্রমিক পাঠানোও খুব দ্রুত বন্ধ করে দেওয়া হবে। এছাড়া বিভিন্ন দেশের ভাষা শিক্ষার মাধ্যমে উন্নত দেশগুলোতে কর্মী পাঠানোর কাজ শুরু হয়ে গেছে।
আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহির উদ্দিন বলেন, সম্পদের বিষয়গুলোতে আমরা যদি নারীদের সমান অধিকার দিতে না পারি, তবে শুধু বক্তব্য দিয়ে লাভ নেয়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে নারীর অধিকারই মানব অধিকার।
অনুষ্ঠানে নিজেদের কাজের অভিজ্ঞতা ও নারীদের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে আলোচনা করেন ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের ডিসি ফরিদা ইয়াসমিন ও ইউনাইটেড নেশনের কর্মী শর্মিলা।
আয়োজনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় মানবাধিকারের সদস্য নূরুন নাহার ওসমানী। তিনি তার বক্তব্যে নারী দিবসের ভূমিকা ও বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি কাজী রিয়াজুল হক। তিনি বলেন, নারীদের উন্নয়ন হচ্ছে। যে স্থানগুলোতে এগুলো থমকে রয়েছে, সেখানে অনুসন্ধান করতে হবে। তারপর তা অনুযায়ী আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে।
এসময় ৭ মার্চ শিক্ষার্থীদের হয়রানির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ধরনের কাজ ন্যাক্কারজনক। দেশ যেখানে এগিয়ে যাচ্ছে, সেখানে কিছু মানুষের এ ধরনের মানসিকতা একদমই কাম্য নয়।
অনুষ্ঠানের ২য় পর্বে নৃত্য, আবৃত্তি ও নাটিকার মাধ্যমে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৯ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০১৮
এইচএমএস/এসএইচ