শুভর বক্তব্য, লেখাপড়াতো করতেই পারি না। রাতে ঘুমও হয় না।
শুক্রবার (০৯ মার্চ) বিকেলে মগবাজারের মধুবাগ এলাকায় জামালের চায়ের দোকানে আড্ডা দেওয়ার সময় মনের ক্ষোভ প্রকাশ করছিলেন কয়েকজন।
শুভ বা মধুবাগের বাসিন্দারাই নন, উন্নয়নের নামে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি আর নতুন করে যোগ হওয়া মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ট রাজধানীবাসী। সুমন নামে এক ব্যক্তি বলেন, যাদের পায়ের রক্ত খায় তারাই বোঝেন মশার কামড়ের জ্বালা কেমন!
ওয়্যারলেস রেলগেট সড়ক দিয়ে দৈনিক যাতায়াত করেন ওমর ফারুক নামে মধুবাগের এক বাসিন্দা। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘদিন সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী ছিলো। দুই মাস আগে কার্পেটিং করা হয়। এরইমধ্যে আবার গত সপ্তাহ থেকে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করেছে ওয়াসা।
তিনি বলেন, রাস্তার দুই পাশে বড় বড় গর্ত করে কাজ করছে ওয়াসা। ফলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট লেগে থাকে। স্কুলের বাচ্চাদের নিয়ে অভিভাবকরা যাওয়া-আসার সময় প্রতিদিনই গালাগালি করতে থাকেন।
মশার কথা জানতে চাইলে ওমর ফারুক বলেন, এতো নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। মশার যন্ত্রণায় ঘরে-বাইরে কোথাও থাকা যায় না। অ্যারোসল, কয়েল, গুড নাইট কোনো কিছুতেই কিছু হয় না। মশার কাজ মশা করেই যায়।
মধুবাগ খেজুরগাছ গলির মুখে কমিউনিটি পুলিশের দায়িত্ব পালন করছেন আব্দুল খালেক। মশার কথা জানতে চাইলেই ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, মশার ওষুধ দেয় দিনের বেলা। তাতে কি কাজ হয়? মশার উৎপাত শুরু হয় সন্ধ্যার পর। সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এই মোড়ে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করি। কিন্তু সন্ধ্যার পর মশার যন্ত্রণায় এখানে দাঁড়ানোই কষ্টকর হয়ে যায়।
স্থানীয় চায়ের দোকানদার জামাল বলেন, মশার ওষুধ ছিটায় রাস্তায়। কিন্তু মশা থাকে গলির ভেতরে। মশার যন্ত্রণায় দোকানে বসে থাকা যায় না। সন্ধ্যার পরেই আক্রমণ শুরু হয়।
রাস্তার কথা জিজ্ঞাসা করতেই জামাল বলেন, শুক্রবার বলে হোন্ডা (মোটরসাইকেল) নিয়ে আসতে পেরেছেন। অন্যদিন এলে বুঝতেন কি অবস্থা।
সরেজমিন দেখা যায়, মগবাজার ওয়্যারলেস রেলগেট থেকে মধুবাগ বাজার পর্যন্ত যে সড়কের দুই পাশে বড় বড় গর্ত খুঁড়েছে ওয়াসা। এসব গর্ত খোঁড়া মাটি আর বালি রাখা হচ্ছে রাস্তায়। ফলে দুই পাশ থেকে সড়কটি সরু হয়ে গেছে। একটি গাড়ি আরেকটি গাড়িকে সাইড দিতে গেলে পেছনে রিকশার লাইন জমা হয়ে যাচ্ছে। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট। এটা শুক্রবারের চিত্র। তবে অফিস খোলার দিনে এই যানজটের সারি আরও লম্বা হয়। তাতে দীর্ঘ হয় বাসিন্দাদের ভোগান্তি।
আর ভোগান্তিতে অভ্যস্ত রাজধানীবাসীর কাছে এ যেনো স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবুও এসব যন্ত্রণা থেকে দ্রুতই মুক্তি চান তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৬ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০১৮
এমএইচ/জেডএস