ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

প্রস্তুতি নেই নীতিমালা কার্যকরের, সংশোধনের দাবি

সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১৮
প্রস্তুতি নেই নীতিমালা কার্যকরের, সংশোধনের দাবি প্রতীকী

ঢাকা: অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং সার্ভিস নীতিমালা কার্যকরের কারিগরি কোনো প্রস্তুতি এখনও নেই বিআরটিএ’র। গত ৮ মার্চ থেকে নীতিমালা কার্যকরের ঘোষণা দিলেও বাস্তবে আরও মাস দু’য়েক লাগতে পারে। আর রাইড শেয়ারিং সেবাদাতা অ্যাপস প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনলাইনে আবেদন ও অনলাইনে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অনুমোদন দিতে চায় বিআরটিএ।

কোনো অনুমোদন ছাড়াই প্রায় দু’বছর চলার পর সরকার বিআরটিএ’র মাধ্যমে রাইড শেয়ারিং নীতিমালা প্রস্তুত করে।  যা অনুমোদন করে মন্ত্রণালয়।

গেজেট হওয়ার পর তা কার্যকরের তারিখও ঘোষণা হয়। সে অনুযায়ী ৮ মার্চ থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। কিন্তু কারিগরি প্রস্তুতি না থাকায় কার্যকর ঠিক কবে হচ্ছে, তা সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না বিআরটিএ।  

বিআরটিএ’র ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পরিচালক (রোড সেফটি) মাহবুব-ই-রব্বানী বাংলানিউজকে বলেন, ‘অনলাইনে আবেদন মনিটরিং, যাচাই-বাছাইসহ সবকিছু করা হবে। সে প্রস্তুতি এখনও শুরুই হয়নি’।  

তিনি আরও বলেন, গেজেট জারি হওয়া মানে বাস্তবায়ন নয়; কার্যক্রম শুরু করা। গেজেট বিজি প্রেস থেকে বিআরটিএ’র কাছে আসার পর সংশ্লিষ্ট কাজগুলো শুরু হবে।

বিআরটিএতে রাইড শেয়ারিং অ্যাপস কর্তৃপক্ষকে আসতে হবে না। অনুমোদন অনলাইন থেকে প্রিন্ট করে নিতে পারবে সেভাবে গাইড লাইনে বা নীতিমালায় বলা আছে, উল্লেখ করেন নীতিমালা প্রণয়ণ কমিটির এ সদস্য।

অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং সার্ভিস নীতিমালার পুরো বিষয়টি তার (মাহবুব-ই-রব্বানী) ওপর ন্যাস্ত।  

এদিকে গেজেট হওয়া নীতিমালায় এখনও বড় ধরনের ফাঁক-ফোকড় রয়ে গেছে। নীতিমালা যাদের জন্য করা সেই অ্যাপস প্রতিষ্ঠানের কাউকে নীতিমালা প্রণয়নের সময় ডাকা হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।  

গুরুত্বপূর্ণ এ স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে একটি বৈঠকও করেনি বিআরটিএ। তবে নীতিমালা প্রণয়নে সরকারি স্টেকহোল্ডার, পুলিশসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ নিয়েছে কমিটি।  

নীতিমালায় সবচেয়ে বড় ফারাক হিসেবে সংশ্লিষ্টরা চিহ্নিত করছেন ভাড়ার বিষয়টি। প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলকে এক্ষেত্রে একই বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ দু’টি যানে ভাড়া, যাত্রী ধারণক্ষমতা ও ক্যাটাগরিতে অনেক বড় পার্থক্য রয়েছে।  

অতি মুনাফার লোভে ঢাকায় মোটরসাইকেল চালক বেড়ে গেছে। এতে সড়কের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে অন্যান্য পরিবহনের চলতে সমস্যা হচ্ছে। প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা।  

বাংলাদেশে মোটরসাইকেল রাইড শেয়ারিং সেবার প্রবর্তক স্যাম ফাউন্ডার ইমতিয়াজ কাসেম বাংলানিউজকে বলেন, মোটরসাইকেলের ভাড়ার বিষয়টি ঠিক করতে বিআরটিএ ব্যার্থতার পরিচয় দিয়েছে। যে কারণে রাইড শেয়ারিং না হয়ে ঢাকায় মোটরসাইকেল ট্যাক্সি সার্ভিসের মতো হয়ে গেছে।  

নীতিমালা ভাড়ার বিষয়সহ কিছু ধারা স্পষ্টকরণ ও  পরিমার্জন করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন ইমতিয়াজ কাসেম।

দেশে ‘উবার’, ‘পাঠও’, ‘স্যাম’সহ বেশ কয়েকটি মোবাইল অ্যাপভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এ সেবা দিয়ে আসছে। সরকার যে নীতিমালা করেছে তার কোনো শর্ত ভঙ্গ করলে প্রতিষ্ঠানের সনদ বাতিল ও কার্যক্রম বন্ধ করাসহ দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ে এ নীতিমালা যাচাই-বাছাই ও অনুমোদন কাজের দায়িত্বে ছিলেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের  যুগ্মসচিব ড. মো. কামরুল আহসান। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, নীতিমালায় এ বিধানটিও রাখা হয়েছে যে এটা পরিবর্তন-পরিমার্জন করা যাবে। সরকার এ নীতিমালা  প্রথমবারের মতো করেছে। এখন মোটরসাইকেল ভাড়ার বিষয়সহ যে বিষয়গুলো নিয়ে প্রশ্ন উঠবে তা প্রয়োজনে সংশোধন করা যাবে’।  

আর নীতিমালা কার্যকরের প্রস্তুতিগত দিক থেকে একটু সময় লাগছে একথা স্বীকার করেন তিনি।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১৮
এসএ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।