ঢাকা, শুক্রবার, ৯ মাঘ ১৪৩১, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

ব্রহ্মপুত্র পাড়ে অষ্টমী স্নানোৎসব

ফজলে ইলাহী স্বপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪১ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৮
ব্রহ্মপুত্র পাড়ে অষ্টমী স্নানোৎসব কুড়িগ্রামের চিলমারী বন্দরের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অষ্টমী স্নানোৎসব। ছবি: বাংলানিউজ

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের চিলমারী বন্দরের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে সম্পন্ন হলো হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অষ্টমী স্নানোৎসব। চিলমারী বন্দর ঘাট থেকে ব্যাংকমারা হয়ে পুটিমারী পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এ স্নানোৎসবে অংশ নেন লাখ লাখ নারী-পুরুষ।

রোববার (২৫ মার্চ) ভোর বেলা থেকেই হিন্দু ধর্মাবলম্বী সাধু-সন্ন্যাসী এবং তাদের অনুসারীসহ পূণ্যার্থীদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে মুখরিত হয়ে ওঠে চিলমারী বন্দর এলাকা।  

আগেরদিন রাত ১০টা ১৪ মিনিট থেকেই ‘হে ভগবান ব্রহ্মপুত্র, হে লৌহিত্র, আমার পাপহরণ করো’ পবিত্র মন্ত্র উচ্চারণ করতে করতে পূণ্যযাত্রীরা মেতে ওঠেন স্নানোৎসবে।

ঢোল, ঢাক, বাঁশি, জুরি, তবলা, হারমনিয়াম বাঁজিয়ে হরিনাম জপতে জপতে ব্রহ্মপুত্র নদে পূণ্যস্নানে অংশ নেন তারা। পূণ্যস্নান শেষ হয় রোববার সকাল ৭টা ৫২মিনিট ২৭ সেকেন্ডে।

পূণ্যস্নান উপলক্ষ্যে তিন দিন আগেই চিলমারীতে শুরু হয়েছিল অষ্টমীর মেলা। ব্রহ্মপুত্র তীরের বালুচরের ওপর বসে নানা ধরনের অস্থায়ী দোকান।  

প্রতিবছরের মতো এবারও বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বী পূণ্যার্থীগণ চিলমারীর অষ্টমী মেলায় আসেন। মেলায় মাটির হাড়ি, থালা, বদনা থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় পারিবারিক জিনিসপত্রের পাশাপাশি পাওয়া যায় বিভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তি, পুতুল, বাঘ, আম, নৌকা ইত্যাদি।  

মেলায় মৃৎ শিল্প বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। এর কারণ, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে এ উৎসবে মাটির দ্রব্যাদি ব্যবহার করতে হবে। তাছাড়া দূর-দূরান্ত থেকে যারা আসেন তাদের অনেকেই হাড়ি-পাতিল বহন করে আনা পছন্দ করেন না।  
কুড়িগ্রামের চিলমারী বন্দরের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অষ্টমী স্নানোৎসব।  ছবি: বাংলানিউজ

রোববার ভোরে চিলমারী উপজেলা চেয়ারম্যান শওকত আলী সরকার বীরবিক্রম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মির্জা মুরাদ হাসান বেগ ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কুদ্দুছ সরকার ব্রহ্মপুত্রের তীরে অষ্টমীর মেলা পরিদর্শণ করেন।

সরকারীভাবে মেলাস্থলে বিশুদ্ধ পানীয় জলের জন্য ৩০টি টিউবওয়েল, মহিলাদের কাপড় পাল্টানোর জন্য
সরকারী, বেসরকারী ও এনজিওদের সহায়তায় শতাধিক তাবুর ব্যবস্থা করা হয়। নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ, র‌্যাব, আনসার ও ভিডিপির সদস্য মোতায়েন করা হয়।

মেলায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়। মেলার কয়েক দিন আগে থেকেই বিভিন্ন রেল, নৌ এবং বাস স্টেশনগুলোতে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ টহলের ব্যবস্থা গ্রহণ করে পূন্যার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে কর্তৃপক্ষ।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৮
এফইএস/এনএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।