এতে ওই অঞ্চলে বাণিজ্য প্রসার ও অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ উন্নয়ন হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, ‘মধুখালী থেকে কামারখালী হয়ে মাগুরা পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২০২ কোটি টাকা।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সহকারী প্রধান সৈয়দ আলী বিন হাসান বাংলানিউজকে বলেন, মঙ্গলবার একনেক সভায় বেশকয়েকটি প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য তোলা হবে। এর মধ্যে অন্যতম মধুখালী থেকে কামারখালী হয়ে মাগুরা পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প। প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২৪ কিলোমিটার নতুন ব্রডগেজ রেলপথ নির্মিত হবে।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের মে থেকে ২০২২ সালের এপ্রিলের মধ্যে এ রেলপথ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। প্রায় ৪৬ বছর আগে ফরিদপুর মধুখালী থেকে কামারখালী পর্যন্ত রেলপথ ছিল। কিন্তু এটা এখন আর ব্যবহার হয় না। তবে কামারখালী থেকে মাগুরা পর্যন্ত কোনো রেলপথ নেই।
প্রকল্পের আওতায় মধুখালী থেকে কামারখালী পর্যন্ত বিদ্যমান রেলপথটি সংস্কার করে ব্রডগেজ এবং কামারখালী থেকে মাগুরা পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মিত হবে।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোফাজ্জেল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা জেনেছি প্রকল্পটি একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে। অনেক আগে কামারখালী পর্যন্ত রেলপথটি সচল ছিল। কিন্তু পরে বন্ধ হয়ে যায়। এখন মধুখালী থেকে কামারখালী হয়ে মাগুরা শহর পর্যন্ত ব্রডগেজ লাইন নির্মাণ করা হবে।
তিনি জানান, রেলপথটি নির্মাণের জন্য বৈদেশিক অর্থায়ন পাওয়ারও চেষ্টা চলছে। তবে যদি না পাই তবে দেশীয় অর্থায়নেই তা বাস্তবায়ন করা হবে। নতুন এ লাইন নির্মিত হলে পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকা ও মাগুরার মধ্যে রেল নেটওয়ার্ক গড়ে উঠবে।
‘এতে ওই অঞ্চলের প্রান্তিক মানুষ সরাসরি সুফল ভোগ করবেন। ওই অঞ্চলের দারিদ্র্য দূর করার দিক থেকেও এই প্রকল্পটি সহায়ক হবে। ’
রেল মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করেই এ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হচ্ছে। ১৮৬২ সালে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে জগতি পর্যন্ত ৫৩ দশমিক ১১ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণের মধ্য দিয়ে এই অঞ্চলে রেলপথের যাত্রা শুরু হয়।
এরপর ১৮৭০ সালে গড়াই সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে ১৮৭১ সালের ১ জানুয়ারি তা গোয়ালন্দঘাট পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের বাঁশ, বেত, পাট বহনের গুরুত্ব বিবেচনা করে ১৯৩২ সালের ১ জানুয়ারি রাজবাড়ীর কালুখালী ঘাট পর্যন্ত রেলপথ স্থাপন করা হয়।
একই সময়ে আরও একটি শাখা লাইন মধুখালী থেকে কামারখালী পর্যন্ত নির্মাণ করা হয়। এ সময় লাইনটি এলাকার অধিবাসীর কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে এই শাখা লাইনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যা পরবর্তীতে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
দীর্ঘদিন পর ওই এলাকায় রেল সংযোগের কথা শুনে নতুন স্বপ্ন দেখছেন ফরিদপুর-মাগুরার বাসিন্দারাও।
বাংলাদেশ সময়: ২২৫২ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৮
এমআইএস/এমএ