শনিবার (০১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে (বিএসএ) মাসব্যাপী এশীয় চারুকলা প্রদর্শনীর উদ্বোধনকালে বক্তব্য রাখেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, আমাদের জাতি গঠনে শিল্প ও সংস্কৃতিরও ব্যাপক অবদান রয়েছে।
হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রত্যেকটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তারা (সংস্কৃতিকর্মীরা) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে তাদের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়।
শৃঙ্খলা, জাতীয়তাবাদ, দেশপ্রেমের চেতনা উদ্দীপ্ত করা এবং দেশের কিশোর-তরুণদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিকাশে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের ওপর গুরুত্বারোপ করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
তিনি বলেন, বন্ধুত্ব ও বন্ধনের বিকাশে চারুকলার ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। বিশ্বের মানচিত্রে একটি দেশ ও জাতিকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে এটা সহায়তা করতে পারে।
এশীয় চারুকলা প্রদর্শনীর আয়োজন করায় আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, প্রদর্শনীটি এ দেশ ও অঞ্চলের সংস্কৃতি, চারুকলা, ইতিহাস এবং ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করবে।
আবদুল হামিদ বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, শিল্পের সৌন্দর্যানুরাগ ও আবেদন সীমাহীন ও চিরস্থায়ী। জাতীয় সংস্কৃতির পাশাপাশি প্রত্যেকটি শিল্পকর্ম ব্যক্তির চিন্তাধারা আদর্শ প্রকাশ করে।
১৮তম এশীয় চারুকলা প্রদর্শনীকে দেশের ও বিদেশের শিল্পীদের মধ্যে মতামত এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের একটি শক্তিশালী ও কার্যকর মঞ্চ হিসেবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এর মাধ্যমে চারুকলার সৌন্দর্যানুরাগে নতুন উচ্চতা যোগ করবে এবং শিল্পী ও দর্শনার্থীদের আগামী দিনগুলোতে নতুন কিছু করতে অনুপ্রাণিত করবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, থাইল্যান্ডের সংস্কৃতি বিষয়ক উপমন্ত্রী সিরত কাসেটসন্টর্ন, কূটনৈতিক, বিদেশী অতিথি, প্রদর্শনীর পর্যবেক্ষক এমিরিটাস অধ্যাপক তেতসুয়া নোদা, জুরি বোর্ডের সভাপতি শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী প্রমুখ।
প্রদর্শনীতে দেশ-বিদেশের দুই ক্যাটাগরিতে ৯ ব্যক্তিকে চারুকলায় তাদের অসাধারণ অবদানের জন্য পুরস্কৃত করা হয়। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি হামিদ একটি ডাকটিকিট অবমুক্ত করেন। পরে রাষ্ট্রপতি আর্ট গ্যালারি ঘুরে দেখেন। পরে তিনি একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
প্রদর্শনীতে পেইন্টিং, প্রিন্ট, ফটোগ্রাফি, ভাস্কর্য, ইলাস্ট্রেশন, পারফর্মিং আর্ট, নিউ মিডিয়াসহ বিশ্বের ৬৮টি দেশের ৪৬৫জন শিল্পীর ৪৮৩টি দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি যৌথভাবে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। আয়োজকরা জানিয়েছেন প্রদর্শনীটি এ মাসের শেষ পর্যন্ত চলবে।
প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, চীন, জাপান, কোরিয়া, ভিয়েতনাম, লাওস, আফগানিস্তান, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মঙ্গোলিয়া, পেরু, স্পেন, ইতালি, আয়ারল্যান্ড, মিশর, তুরস্ক, ইরান, কেনিয়া, রাশিয়া, ইউক্রেন ও জার্মানি।
প্রদর্শনীটি প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। প্রদর্শনীর পাশাপাশি, রোববার ও সোমবার দুটি সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৮
এমজেএফ