দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছেন বলেও জানান তিনি।
মঙ্গলবার (১১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার পরে সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী একথা জানান।
তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনকালীন সরকারে কেবল সংসদে প্রতিনিধিত্ব করা রাজনৈতিক দলের সংসদ সদস্যরাই স্থান পাবেন। জাতীয় পার্টি এই স্বল্পমেয়াদী সরকারে তাদের ২/৩ জন প্রতিনিধি বাড়ানোর আবদার করেছে, তবে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই সিদ্ধান্ত নেবেন।
তিনি বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ কিছু সিদ্ধান্ত এরইমধ্যে নিয়ে ফেলেছে। এর একটি হলো ৬৫টি আসন শরিকদের জন্য ছেড়ে দেওয়া। তবে সব কিছু নির্ভর করবে মেরুকরণের ওপর। জাতীয় পার্টি এরইমধ্যে বলেছে, বিএনপি নির্বাচনে না আসলে তারা আলাদা নির্বাচন করবে।
‘আওয়ামী লীগ একটি বড় দল এবং দলটি বর্তমানে ক্ষমতায় আছে। আগামী নির্বাচনে অনেকেই প্রার্থী হতে চায়। কিন্তু দল থেকে দেখা হচ্ছে ‘জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা’। এরইমধ্যে এমন ৬০ থেকে ৭০ জনকে দলের ‘সুপ্রিম পাওয়ার’ সভানেত্রী শেখ হাসিনা গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছেন। এর মানে এই নয় যে তাদের মনোনয়ন চূড়ান্ত। তাদের দলের পক্ষ থেকে সভানেত্রী কিছু ‘টিপস’ দিয়েছেন। তাদের ভুলগুলো ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে বলা হয়েছে। মোট কথা বিষয়টি এমন বলা হয়েছে, তোমরা লেগে থাকলে এবং নিজেদের সংশোধনের মাধ্যমে তৈরি করতে পারলে তোমাদের সম্ভাবনা আছে। ’ এক প্রশ্নের জবাবে বলছিলেন ওবায়দুল কাদের।
দলের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, দলে কোনো রকম আন্তঃকোন্দল মেনে নেওয়া হবে না। এরইমধ্যে সিলেট, দিনাজপুর, রাজশাহী ও বরগুনায় কিছু ঘটনা ঘটেছে। সিলেটে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আমরা দেখেছি কেউ কেউ অসহযোগিতা করেছেন, কেউ কেউ বিরোধিতা করেছেন। অন্যস্থানে সংসদ সদস্যদের অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়েছে। এজন্য আমি দলের সভানেত্রীর নির্দেশে কুরিয়ারযোগে শোকজ চিঠি পাঠিয়েছি। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। দল করতে হলে জবাব দিতেই হবে।
তিনি বলেন, চিঠিতে যাদের অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়েছে তাদের কাছে কড়া ভাষায় জানতে চাওয়া হয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণ। একইসঙ্গে সংসদ সদস্যদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে দলীয় নেতাকর্মীদের বিরোধিতার কারণ।
আগামী নির্বাচন নিয়ে বিদেশি রাষ্ট্রের বিভিন্ন চাপ সম্পর্কে কাদের বলেন, আমাদের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব নিতে পারে এ ধরনের যেকোন চাপ আমরা অ্যালাও করবো। কিন্তু সংবিধান বিরোধী ও সার্বভৌমত্ব বিনাশকারী কেনো চোপ না দেওয়ার জন্য বিদেশি বন্ধু রাষ্ট্রের প্রতি অনুরোধ থাকবে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিদেশিরা আমাদের সঙ্গেই আছেন। তাই তারা কোনো অনৈতিক চাপ দেবেন না বলে আমরা বিশ্বাস করি।
ড. কামালের ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’ সম্পর্কে ওবায়াদুল কাদের বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় দল ‘আওয়ামী লীগ’কে বাদ দিয়ে যে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া, সেটাকে ‘জাতীয়তাবাদী সাম্প্রদায়িক ঐক্য’ বলা যায়। মির্জা ফখরুলের দেওয়া ‘নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না’ বক্তব্যকে তিনি বলেন, ‘পাগলে কিনা বলে, ছাগলে কিনা খায। ’ এটা বিএনপির আষাঢ়ের তর্জন, গর্জন। যারা ১০ বছরে কিছু করতে পারেনি, ২ মাসেও কিছু পারবে না।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা ও চিকিৎসা সম্পর্কে কাদের বলেন, মূলত খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বিএনপির মুখ্য বিষয় নয়। তারা এটা নিয়ে রাজনীতি করতে চায়। চিকিৎসা যেখানে মূল বিষয়, সেখানে তারা হাসপাতাল নিয়ে রাজনীতি করছে। এটাকে কেন্দ্র করে তারা আন্দোলন করতে চাচ্ছে। যা খালেদা জিয়া জেলে গেলে করতে পারেনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৮
আরএম/আরআর