বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় জিপি হাউজে ‘বি স্মার্ট, ইউজ হার্ট’ শীর্ষক এ উদ্যোগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে।
এতে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী মাইকেল ফোলি, ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি এডুয়ার্ড বেইগবেডার, গ্রামীণফোনের ডেপুটি সিইও ইয়াসির আজমান, গ্রামীণফোনের সিসিএও মাহমুদ হোসেন এবং টেলিনর গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড চাইল্ড অনলাইন সেফটি স্পেশালিস্ট ওলা য়ো তান্দ্রে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ১১-১৬ বছরের ৪ লাখ শিশু-কিশোরের ক্ষমতায়ন এবং ৫০ হাজার অভিভাবক ও শিক্ষকদের নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ কিভাবে তৈরি করতে হয় সে সম্পর্কে অবহিত করতে এ উদ্যোগটি হাতে নেওয়া হয়েছে। স্কুলগুলোতে প্রশিক্ষণের মূল লক্ষ্য হচ্ছে ডিজিটাল শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা।
এছাড়াও চাইল্ড হেল্পলাইন হটলাইনে (১০৯৮) অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে ‘চাইল্ড অনলাইন সেফটি ইস্যুস’ যেখানে কল করে কিশোর-তরুণরা এ সম্পর্কিত উপদেশ ও পরামর্শসহ অন্যান্য সহায়তা পাবে।
এ উদ্যোগটি জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ১০ এর আওতায় বৈষম্য দূরীকরণের প্রতি গ্রামীণফোন এবং টেলিনর গ্রুপের প্রতিশ্রুতিবদ্ধতা পূরণে সহায়ক হবে।
বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ শিশু-কিশোরদের নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করার জন্য সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন বলে জানান।
আইসটি প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ইন্টারনেটে সুরক্ষা নিশ্চিত করা। জাতি হিসেবে আমাদের তরুণদের কাছে প্রযুক্তির সঠিক উপাদান তুলে দেওয়াটা আমাদের দায়িত্ব যেন তরুণরা বৈশ্বিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতা করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, চাইল্ড অনলাইন সেফটির মতো উদ্যোগ শুধুমাত্র সচেতনতা বৃদ্ধিতেই সাহায্য করে না, বরং আমাদের নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পর্কেও অবহিত করে। এ বিষয়ে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে এবং গ্রামীণফোন ও ইউনিসেফের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে সাহায্য করে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মর জন্য আরো নিরাপদ ডিজিটাল পরিবেশ তৈরি করে রেখে যেতে আগ্রহী।
নিরাপদ ইন্টারনেট নিয়ে শিশু-কিশোরদের পাশাপাশি অভিভাবক, শিক্ষকদেরও সচেতনতা বৃদ্ধি এবং পাঠ্যপুস্তকে নিরাপদ ইন্টারনেটের বিষয়বস্তু অন্তর্ভূক্তির দাবি জানান পলক।
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী মাইকেল ফোলি বলেন, ‘বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমাদের তরুণ গ্রাহকদের জন্য সুরক্ষিত ডিজিটাল অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করা আমাদের একান্ত দায়িত্ব। ইন্টারনেট হলো জ্ঞান অর্জন, যোগাযোগ এবং বিনোদনের মূল উৎস এবং সবারই এক্ষেত্রে সুরক্ষিত থাকার অধিকার আছে। আমরা এ চাইল্ড অনলাইন সেফটি উদ্যোগটি নিয়ে আরো সূদুরপ্রসারী পদক্ষেপ নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যেন আমাদের সন্তানেরা ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল সেবার সর্বোচ্চ সুবিধা পায়।
টেলিনর গ্রুপের হেড অব সাসটেইনেবিলিটি মাই ওল্ডগার্ড বলেন, ডিজিটাল সেবার সুবিধা লাভ এবং অনলাইনে সুরক্ষিত থাকার অধিকার রয়েছে প্রত্যেক শিশুর। টেলিনর গ্রুপ বিশ্বাস করে একটি সহায়ক পরিবেশ ডিজিটাল ঝুঁকি হ্রাস এবং শিশুদের মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সাহায্য করতে পারে। আর এজন্যই গ্রামীণফোনের এ উদ্যোগের মাধ্যমে সক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য আমরা বিনিয়োগ করছি।
ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি এডুয়ার্ড বেগবেদার বলেন, ইন্টারনেট একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন ও শিক্ষা লাভের এক অনন্য মাধ্যম। এর মাধ্যমে শিক্ষাগ্রহণ এবং তথ্য সংগ্রহের সুযোগ অপরিসীম। আমরা আশাবাদী যে, গ্রামীণফোনের সঙ্গে আমাদের এ সহযোগিতা ডিজিটাল পরিসীমায় সবার মাঝে সচেতনতা সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সব বয়স ভেদে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ বৃদ্ধি পাওয়া উচিৎ।
গ্রামীণফোন জানায়, প্রতিষ্ঠানটি ২০১৪ সাল থেকে শিশুদের মধ্যে নিরাপদ ইন্টারনেট বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করে যাচ্ছে এবং এখন পর্যন্ত দেশব্যাপী ১ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে এ বার্তা পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে। ২০১৫ সালে গ্রামীণফোন এবং ইউনিসেফ অভিভাবকদের জন্য দায়িত্বশীল ইন্টারনেট ব্যবহার এবং সচেতনতা সম্পর্কিত একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৮
এমআইএইচ/এসএইচ