ঢাকা, রবিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

৪ অক্টোবর পদত্যাগ করবেন বরিশাল সি‌টি মেয়র

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০১৮
৪ অক্টোবর পদত্যাগ করবেন বরিশাল সি‌টি মেয়র সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন বিসিসি মেয়র মো. আহসান হাবিব কামাল। ছবি: বাংলানিউজ

ব‌রিশাল: মেয়াদোত্তীর্ণের ১২ দিন আগেই পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) মেয়র মো. আহসান হাবিব কামাল।

অশুভ শক্তির চাপে ৪ অক্টোবর তিনি পদত্যাগ করবেন বলে সাংবাদিকদের সামনে দাবি করেছেন।

সোমবার (০১ অ‌ক্টোবর) দুপুরে নগরের কালুশাহ সড়কে নিজ বাসায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মেয়র এ ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত বিসিসি নির্বাচনে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন। সে অনুযায়ী আগামী ২৩ অক্টোবর চলতি সিটি পরিষদের মেয়াদোত্তীর্ণ হবে। কিন্তু চলতি বছরের জুন মাস থেকে সিটি করপোরেশনের তহবিল থেকে কোনো অর্থ উত্তোলন করতে না পারায় নগরবাসী সেবাবঞ্চিত হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের তহবিলে বর্তমানে ৬০ কোটি টাকা রয়েছে। কিন্তু নগর উন্নয়নের কাজে সে টাকা ব্যয় করা সম্ভব হচ্ছে না। ঠিকাদারদের বিল, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, সড়ক বাতি, স্টেশনারি মালামাল, জ্বালালি তেল ক্রয় করা যাচ্ছে না।

এর কারণ উল্লেখ করে মেয়র বলেন, সিটি নির্বাচনের পর পরই প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদোন্নতিজনিত বদলি হন। এর পর বিসিসির সচিব ইসরাইল হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাকে অর্থনৈতিক ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। অবশ্য প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা থাকা অবস্থাতেই উন্নয়ন কাজ থেমে যায়। একটি অশুভ শক্তির ইশারায় সাবেক এবং বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অর্থনৈতিক কিংবা উন্নয়নমূলক কোন কাজের অনুমোদনপত্রে স্বাক্ষর করছে না। এর ফলে সব প্রকার নাগরিক সেবা মুখ থুবরে পড়েছে।

মেয়র অভিযোগ করেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সচিব মো. ইসরাইল হোসেনকে প্রথম পর্যায়ে ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে বদলি করা হয়। এর পর ১৪ আগস্ট তাকে ঝালকাঠি থেকে খুলনা যুব উন্নয়ন অধিদফতরের উপ-পরিচালক হিসেবে বদলি করা হয়। কিন্তু দু’টি বদলির বিষয় গোপন রেখে অবৈধভাবে সিটি করপোরেশনে দায়িত্ব পালন করেন। যা পরবর্তীতে আমি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইড এর মাধ্যমে জানতে পারি। বর্তমানে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সচিব এর পদ শূণ্য। তাই আগামী ২ অক্টোবর সিটি পরিষদের শেষ সভা হওয়ার কথা থাকলেও তা করা সম্ভব হচ্ছে না।

মেয়র বলেন, আমি একজন নির্বাচিত মেয়র। তার পরেও অশুভ শক্তির কারণে নগরবাসীর সেবা দিতে পারছি না। আর তাই মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৯ দিন আগেই অর্থাৎ ৪ সেপ্টেম্বর পদত্যাগের ঘোষণা দিচ্ছি। তবে ৪ অক্টোবরের মধ্যে চলমান সংকট সমাধান হলে শেষ সময় পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের কথা বলেন তিনি।

অশুভ শক্তির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র মো. আহসান হাবিব কামাল বলেন, ‘আমি বিরোধী দলের (বিএনপি) একজন সদস্য। এ মুহূর্তে অশুভ শক্তির পরিচয় বলতে গেলে আমার অসুবিধা হবে। আপনারা (সাংবাদিকরা) সবাই যানেন কারা এ অশুভ শক্তি। আপনারা ভালোভাবে খোঁজ নিয়ে দেখলেই সবকিছু যানতে পারবেন’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

উল্লেখ, গত ২৭ সেপ্টেম্বর ফাইলে স্বাক্ষর সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে বাক-বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে মেয়র আহসান হাবিব কামাল ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসরাইল হোসেনকে সিটি করপোরেশন থেকে বের হয়ে যেতে বললে পুনরায় উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। গত ২৭ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে করপোরেশনের মেয়রের কক্ষেই এ ঘটনা ঘটে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০১৮
এমএস/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।