ঢাকা, শুক্রবার, ৩ মাঘ ১৪৩১, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

‘অদৃশ্য সাপ আতঙ্ক’ ঈশ্বরদীতে

উপজেলা করসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০১৮
‘অদৃশ্য সাপ আতঙ্ক’ ঈশ্বরদীতে (ফাইল ফটো)

ঈশ্বরদী (পাবনা): ‘অদৃশ্য সাপ’ আতঙ্কে আতঙ্কিত পাবনা ও নাটোর জেলার মানুষ। ছোবল দেয়ার পরে কেউ সাপ বা পোকা দেখতে পাচ্ছে না, তবে কিছুক্ষণ পরে শরীরে অনুভূতি হচ্ছে জ্বালা-পোড়া।  খেয়াল করলে বোঝা যাচ্ছে ছোবলের দাগ ও রক্ত। কিছুক্ষণ পর শরীর হয়ে যাচ্ছে কালো। প্রায় শতাধিকের বেশি মানুষ এ ছোবলের শিকার হয়েছে বলে জানা গেছে।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে এ খবর চাওর হলে গোটা ঈশ্বরদীতে সব বয়সী ছেলে মেয়ের মধ্যে সাপ আতঙ্ক বিরাজ করতে থাকে। এ সাপের ছোবল থেকে রক্ষা পেতে শিশুরা হাতে বাঁধছে লাল সুতো।

কেউ কেউ কোরআন শরীফের বিভিন্ন আয়াত লিখে তাবিজ বানিয়ে ব্যবহার করছে।

দাশুরিয়ার আনন্দবাজার এলাকার বকুল সরকার বাংলানিউজকে বলেন, এলাকার সাধারণ মানুষ গুজব হিসেবে মনে করছিল। কিন্তু যখন পর্যায়ক্রমে এ গুজব চলে এলো গ্রামে গ্রামে, ঘরে ঘরে তখন আর কেউ এ ‘অদৃশ্য সাপ’কে অবিশ্বাস করতে পারছে না। রোববার  (৭ অক্টোবর) আমার পরিবারে দুই সদস্য অসুস্থ হয়ে পড়লে পড়ে ওঝা নিয়ে এসে বিষ তোলার পর এখন তারা সুস্থ।

দাশুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বকুল সরদার বাংলানিউজকে জানান, এ অদৃশ্য সাপের ছোবলের কথা প্রথমে শোনা যায়- নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম থানার রাজাপুর ইউনিয়নে। এর পরেই চলে আসে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানার  মুলাডুলি ইউনিয়নে। রোববার থেকে চলে এসেছে পাবনা ঈশ্বরদী থানার দাশুড়িয়া ইউনিয়নে।

এ ব্যাপারে উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার হাসান উদ্দিন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, এইটা ভিত্তিহীন একটি খবর। বাস্তবে এরকম অদৃশ্য কোনো সাপ নেই। তাই ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। এ ধরনের ঘটনা মাস হিস্টিরিয়া হতে পারে। মানে ভয় বা আতঙ্ক অতি দ্রুত একজন থেকে আরেকজনে ছড়িয়ে পড়ছে। আমরা সরেজমিন গিয়ে দেখেছি, এ ঘটনায় কেউ মারা যায়নি।

তিনি আরও বলেন, বাস্তবে খোঁজ নিয়ে দেখেন কাউকে সাপে কাটেনি/সাপে কাটার কোনো দাগও নাই। অনেক সময় দেখা যায় কোনো স্কুল বা কলেজে কোনো কারণ ছাড়াই একসঙ্গে অনেক স্টুডেন্ট জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। আসলে কোনো রোগের কারণে তাদের এমন হয় না। ভয় বা আতঙ্ক দ্রুত একজন স্টুডেন্ট থেকে আরেজনে ছড়িয়ে পড়ে, ফলে তাদের একই রকম শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন লক্ষণ দেখা যায়। এটাই মাস হিস্টিরিয়া। কয়েকবছর আগে বর্ষার সময় এমন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। পরবর্তীতে দেখা গেলো সাপ নয়। ঢোলকমলি ফুলের ভেতর এক ধরনের পোকা থাকে সেই পোকার কামড় এবং তা থেকে আতঙ্কের কারণে এমন হয়েছিল। তখন ঈশ্বরদীতে ঢোলকমলি কাটা শুরু হয়েছিল। এটা আতঙ্ক ছাড়া আর কিছু নয় বলে জানান উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০১৮
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।