ঢাকা, শুক্রবার, ৩ মাঘ ১৪৩১, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

চায়ের দেশে বেড়েছে চায়ের দাম

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০১৮
চায়ের দেশে বেড়েছে চায়ের দাম জিবিওপি গ্রেডের ‘ক্লোন চা’। ছবি : বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: বাঙালির অন্যতম প্রিয় পানীয় চা। শরীরকে তাৎক্ষণিক চাঙ্গা করতে চা দারুণ কার্যকর। এর ফলেই চায়ের আভ্যন্তরীণ চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে।

এক সময় চা বিদেশ থেকে আমদানি করা হলেও শুল্ক বৃদ্ধির কারণে এই পানীয়র প্রতি অনেকটাই নিরুৎসাহিত দেশীয় চা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। তবে বর্তমানে বাজারে বেড়ে গেছে চায়ের দাম।

এ দাম বৃদ্ধির ফলেও ভোক্তারা চায়ের স্বাদ নিতে আগ্রহ হারাননি। দাম বৃদ্ধির মধ্যেই ক্রেতারা ক্রমাগত কিনে চলেছেন তাদের প্রিয় পানীয়।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, চা বাগানে রোগবালাইয়ের আক্রমণ দেখা দেওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে চা উৎপাদনে।

চা সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০ নং চা নিলাম থেকেই দাম বাড়তে শুরু করে। পরবর্তী নিলামগুলোতে সেই বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে। এপ্রিল থেকে পরবর্তী বছরের মার্চ পর্যন্ত সারাবছর মোট ৪৫টি চা নিলাম অনুষ্ঠিত হয়।

শ্রীমঙ্গলের সর্বাধিক পুরাতন চা বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান গুপ্ত টি হাউজের স্বত্বাধিকারী পীযুষ কান্তি দাশগুপ্ত বাংলানিউজকে বলেন, কেজি প্রতি চায়ে ৬৫ থেকে ৮০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বৃদ্ধি এখনও অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, ক্লোন টি (ছোট দানা) ৩০০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৪০ টাকায়, যা বর্তমানে ৩৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ক্লোন টি (মোটা দানা) ৩৬০ টাকা থেকে বেড়ে এখন ৪০০ টাকায় এবং গুপ্ত টি স্পেশাল চা প্রতি ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকায় এখন বিক্রি হচ্ছে। শ্রীমঙ্গলের একটি চা বাগানে পাতা চয়ন।  ছবি : বাংলানিউজবিটি-২ গ্রেডের চা ৪৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৫০০ টাকাতে বিক্রি হচ্ছে। দেশের সবচেয়ে উন্নত চা বিটি-গোল্ড বা টি-গোল্ড এখন পর্যন্ত অপরিবর্তিত দামেই অর্থাৎ ৬০০ টাকাতেই এবং গ্রিন-টি এখন পর্যন্ত অপরিবর্তিত দাম অর্থাৎ ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান পীযুষ কান্তি দাশগুপ্ত।

হরিণছড়া চা বাগানের টি-প্লান্টার হক ইবাদুল বাংলানিউজকে বলেন, চায়ের দাম বৃদ্ধির জন্য অন্যতম কারণ হলো চা বাগানগুলোতে উৎপাদন কম। বিশেষ করে সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন চা বাগানগুলো রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ায় চায়ের উৎপাদন কমে গেছে। বালিশিরা ভ্যালির ৩২টি চা বাগান এবং লস্করপুর ভ্যালির ২৩টি বাগানের প্রায় সবগুলোতেই ‘লিফরাস্ট’ এবং ‘লোপার ক্যাটারপিলার’ রোগে আক্রান্ত। এ রোগের কারণেই চা বাগানগুলোতে চায়ের উৎপাদন কম।

চায়ের রোগগুলো উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিলেটে এ বছর চায়ের অপরিচিত দু’টি রোগের নাম হলো ‘লিফরাস্ট’ এবং ‘লোপার ক্যাটারপিলার’। যেটা কোনো বছর হয়নি। ‘লিফরাস্ট’ হলো ছত্রাকজনিত রোগ। এর ফলে চায়ের কুঁড়ি এবং অন্যান্য পাতাগুলো কালো হয়ে পচে যায়। চা পাতা তখন আর সূর্য থেকে খাবার গ্রহণ করতে পারে না। আর ‘লোপার ক্যাটারপিলার’ হলো এক ধরনের পোকার আক্রমণ। যারা এক রাতের মধ্যেই চা পাতার রস শুষে নিয়ে পাতাকে ঝাঁঝড়া করে ফেলে।  

কীটনাশক বা বালাইনাশক প্রয়োগ করেও উপকার মিলছে না। কারণ এর আগে আমরা চা গাছগুলোতে এতো পর্যাপ্ত পরিমাণে কীটনাশক ব্যবহার করেছি যে এখন আর তা তেমনভাবে কাজ করছে না; তা রেজিস্ট্যান্ট হয়ে গেছে বলে জানান চা বিশেষজ্ঞ হক ইবাদুল।

বাংলাদেশ সময়: ১২১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১৮
বিবিবি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।