গত ১৮ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) আসামিপক্ষে আইনগত বিষয়ে যুক্তি উত্থাপন শেষে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এ তারিখ ধার্য করেন।
ওইদিন বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে আদালতের কার্যক্রম শুরুর পর আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট এসএম শাহজাহান আদালতে যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন।
একই সঙ্গে জামিনে থাকা আট আসামির জামিন নামঞ্জুর করে সবাইকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
ওইদিন কারাগারে থাকা সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ২৩ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। হাজির হন- খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, সাবেক আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, শহিদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরীসহ জামিনে থাকা ৮ আসামিও।
মামলার অভিযোগ প্রমাণে চার্জশিটের ৫১১ সাক্ষীর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষে মোট ২২৫ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। গত বছরের ৩০ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুল কাহার আকন্দের জেরা শেষের মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।
এ মামলায় মোট আসামি ছিলেন ৫২ জন। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মামলার অন্যতম আসামি সাবেক মন্ত্রী ও জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি ২০১৫ সালের ২১ নভেম্বর রাতে কার্যকর হয়।
এছাড়া ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রাতে মুফতি হান্নান ও তার সহযোগী শরীফ শাহেদুল ওরফে বিপুলের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ফলে বর্তমানে মামলার আসামির সংখ্যা ৪৯ জন।
৪৯ আসামির মধ্যে ৮ জন জামিনে, ১৮ জন পলাতক ও ২৩ জন কারাগারে রয়েছেন। জামিনে থাকা মামলার আসামিরা হলেন- খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, সাবেক আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, শহিদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী এবং মামলাটির তিন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডির সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, এএসপি আব্দুর রশীদ ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম।
অন্যদিকে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ২৩ জন কারাগারে বন্দি আছেন। আর পলাতক রয়েছেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপির সাবেক এমপি কাজী শাহ মোফাজ্জেল হোসেন কায়কোবাদসহ ১৮ আসামি।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের জনসভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। হামলায় আওয়ামী লীগের তৎকালীন মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নির্মমভাবে নিহত হন।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। আহত হন শতাধিক নেতাকর্মী।
এ ঘটনায় মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল জলিল ও সাবের হোসেন চৌধুরী বাদী হয়ে মতিঝিল থানায় পৃথক তিনটি মামলা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৮
জেডএস/