ঢাকা, শুক্রবার, ২ মাঘ ১৪৩১, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

উদ্বোধনের অপেক্ষায় খুলনার আধুনিক রেলস্টেশন

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৮
উদ্বোধনের অপেক্ষায় খুলনার আধুনিক রেলস্টেশন প্রস্তুত খুলনা রেলওয়ে স্টেশন, উদ্বোধনের অপেক্ষা। ছবি: বাংলানিউজ

খুলনা: উদ্বোধনের অপেক্ষায় দৃষ্টিনন্দন খুলনা আধুনিক রেলস্টেশন। রেলস্টেশন নির্মাণের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। খুলনাবাসীর বহু কাঙ্খিত দৃষ্টিনন্দন এ রেলস্টেশনটি আগামী ১৩ অক্টোবর (রোববার) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন।

নবনির্মিত খুলনা আধুনিক রেলস্টেশনটি উদ্বোধন উপলক্ষে এলাকায় এখন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। প্রতিদিনই উৎসুক মানুষ দেখতে আসছেন মহানগরীর পাওয়ার হাউস মোড়ের এ স্টেশনটি।

সম্প্রতি আধুনিক এ রেলস্টেশনটি পরিদর্শন করেছেন খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক এবং রেলওয়ে মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিজান।

মঙ্গলবার (০৯ অক্টোবর) রাতে খুলনা রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার মানিক চন্দ্র সরকার বাংলানিউজকে বলেন, আগামী ১৩ অক্টোবর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুলনা আধুনিক রেলস্টেশনের উদ্বোধন করবেন বলে আমাকে সম্ভাব্য তারিখ জানানো হয়েছে।

নবনির্মিত রেলস্টেশনের দায়িত্ব পালনরত আরএনবির (রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী) হাবিলদার ওহিদ খান বাংলানিউজকে বলেন, ইতোমধ্যে রেললাইন ও রেলস্টেশন নির্মাণসহ সব ধরনের কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে স্টেশন ভবনের সাজ-সজ্জার কাজ। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত খুলনার পুরনো রেলস্টেশনে ট্রেনে যাত্রী ওঠা-নামাসহ নানা ধরনের ভোগান্তি ছিল। আধুনিক এ রেলস্টেশনটি চালু হলে তা আর থাকবে না।

পুরানো ও নতুন স্টেশনের সঙ্গে তুলনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, আগের পুরানো স্টেশন ছিলো কুড়ে ঘরের মতো। আধুনিক এ স্টেশনটি টুইন টাওয়ারের মতো।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নতুন রেলস্টেশনটি করা হয়েছে তিনতলা বিশিষ্ট। প্রথম তলায় স্টেশন ভবনে থাকছে ৬টি টিকিট কাউন্টার, ওয়েটিংরুম ও সহকারী স্টেশন মাস্টারের রুম। দ্বিতীয় তলায় থাকছে স্টেশন মাস্টারের রুম, রেস্টুরেন্ট, ব্যাংকের শাখা, নারী-পুরুষের জন্য আলাদা ওয়েটিং রুম, ফাস্ট ফুড এবং রেল কর্মকর্তাদের জন্য আলাদা কক্ষ। তৃতীয় তলায় থাকছে রেলওয়ের প্রকৌশলীদের অফিস কক্ষ। এ স্টেশন চালু হলে একসঙ্গে ৬টি ট্রেন স্টেশনে প্রবেশ এবং বের হতে পারবে। থাকছে সিটিং ব্যবস্থা, সিসি ক্যামেরা ও অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা। স্টেশন চত্বরে থাকছে দৃষ্টিনন্দন ফুলের বাগান এবং অধিক সংখ্যক গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা।

আধুনিক রেলস্টেশন চালু হলে খুলনার সঙ্গে বাংলাদেশ-ভারত রেল যোগাযোগ আরও সহজ হবে। সেই সঙ্গে ভারত যাত্রীদের খুলনা স্টেশনে ইমিগ্রেশন ও চেকিংসহ সব ভ্রমণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন এবং ভাড়া কমানোর বিষয়েও দু’দেশের মধ্যে আলোচনা করে নিরাপদ ও সহজ যাত্রার দ্বার উন্মোচন করা হবে। এ স্টেশনে একসঙ্গে ৬টি ট্রেন প্রবেশ এবং বের হওয়ার ব্যবস্থা থাকায় প্রতিদিন প্রায় ৯ থেকে ১০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা যায়, খুলনাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবির প্রেক্ষিতে আধুনিক রেলস্টেশন নির্মাণে ২০১৫ সালের এপ্রিলে কাজ শুরু হয়। ৫৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৮ মাস মেয়াদে প্রকল্পের কাজ শেষ করার সময়সীমা নির্ধারিত ছিল। কিন্তু ঠিদাকারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন নির্ধারিত সময় কাজ শেষ করতে না পারায় দফায় দফায় সময় বাড়ানোর ফলে নির্মাণ বেড়ে ৬১ কোটি ২৭ লাখ টাকা দাঁড়ায়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হওয়া এবং প্রকল্পে নতুন পানির ওভার হেড ট্যাঙ্কি যুক্ত হওয়ায় অতিরিক্ত ৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয় বেড়ে যায়।

এরই মধ্যে কনসালটেন্ট প্রতিষ্ঠানের ডিজাইনে ত্রুটির কারণে নির্মাণাধীন ২নম্বর প্লাট ফর্মের ছাদে ফাঁটল দেখা দেয়। পরে প্রতিষ্ঠানটিকে কালো তালিকাভূক্ত করে বুয়েটের প্রকৌশলীদের পরামর্শে প্লাট ফর্মের ছাদের দু’দিকে নতুন করে বিম নির্মাণ করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১৮
এমআরএম/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।