ঢাকা, শুক্রবার, ২ মাঘ ১৪৩১, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

গ্রেনেড হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন যারা

আবাদুজ্জামান শিমুল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৮
গ্রেনেড হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন যারা ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনা।

ঢাকা: বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে নৃশংস গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। ওই হামলায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনা গুরুতর আহত হন। মহিলা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী আইভি রহমানসহ নিহত হন ২৪ জন। আহত হন আরো কয়েকশ নেতা-কর্মী।

বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম বর্বরোচিত এ হামলায় নিহতরা হলেন— প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী ও মহিলা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী আইভি রহমান, গ্রেনেডের স্প্রিন্টার বিদ্ধ হয়ে দীর্ঘদিন যন্ত্রণা ভোগের পর মৃত্যুবরণ করেন সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফ, শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকর্মী ল্যান্স কর্পোরাল (অব.) মাহবুবুর রশীদ, আবুল কালাম আজাদ, আওয়ামী লীগের কর্মী রেজিনা বেগম, নাসির উদ্দিন সরদার, আতিক সরকার, আবদুল কুদ্দুস পাটোয়ারী, আমিনুল ইসলাম, মোয়াজ্জেম, বেলাল হোসেন, মামুন মৃধা, রতন শিকদার, লিটন মুনশী, হাসিনা মমতাজ রিনা, সুফিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), মোশতাক আহমেদ সেন্টু, আবুল কাশেম, জাহেদ আলী, মোমেন আলী, এম শামসুদ্দিন এবং ইসাহাক মিয়া। বাকি একজনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।

 

এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু, আবদুর রাজ্জাক, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, ওবায়দুল কাদের, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, এএফএম বাহাউদ্দিন নাছিম, নজরুল ইসলাম বাবু, আওলাদ হোসেন, মাহবুবা পারভীন, অ্যাডভোকেট উম্মে রাজিয়া কাজল, নাসিমা ফেরদৌস, শাহিদা তারেক দীপ্তি, রাশেদা আখতার রুমা, হামিদা খানম মনিসহ পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন।

ভয়াবহ এ হামলার ষড়যন্ত্রে গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশ বাহিনীর কয়েকজন সদস্য অংশ নেন। তারা মামলার আলামত নষ্ট, মামলা না নেওয়া এবং হামলার গোয়েন্দা তথ্য থাকার পরও শেখ হাসিনার নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেননি। এমনকি মামলাটির তদন্ত ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে জজ মিয়া নাটক তৈরি করেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ওই সদস্যরা।

সেদিনের ঘটনার স্মৃতিচারণ করেন ডেইলি স্টারের তৎকালীন মেডিকেল প্রতিনিধি সাহিন মোল্লা। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আমরা জরুরি বিভাগের সামনে বসে ছিলাম, হঠাৎ দেখি কয়েকজনের ছোটাছুটি। এরইমধ্যে দেখি শাড়ি পরা একজন মহিলাকে দুজন ব্যক্তি ধরে ধরে ভিতরে ঢুকাচ্ছেন। কোলে থাকা মহিলাটি ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছেন। ওনাকে খুবই চেনা চেনা লাগছে। পরে আশপাশের লোক চিৎকার করে বলছে আইভি আপা... আইভী আপাকে বাঁচান! তারপরে বুঝতে পারলাম তিনি আইভি রহমান।

সাহিন মোল্লা আরো বলেন, এর কিছুক্ষণ পরেই জরুরি বিভাগের পুরো চত্বর গ্রেনেড হামলায় আহত রোগিতে ভরে যায়। রক্তে ছেয়ে যায় জরুরি বিভাগ! আহতদের চিৎকার সহকর্মীদের চিৎকারে মনে হচ্ছিল পুরো হাসপাতালই চিৎকার করে কাঁদছে!

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে নৃশংস ওই গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে বুধবার (১০ অক্টোবর)। রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন রায়ের জন্য ১০ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।

এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার অধিকতর তদন্ত শেষে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, হুজি নেতা মুফতি হান্নান, সাবেক মন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু ও লুৎফুরুজ্জামান বাবরসহ ৫২ জনকে আসামি করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০০০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৮
এজেডএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।