সূত্র জানায়, ২০০০ সালের প্রথম দিকে বাংলাদেশে আসেন এই পাকিস্তানি নাগরিক। তিনি পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের নাগরিক বলে এ দেশে তাকে বলা হতো কাশ্মীরী নেতা।
১৯৮৯ সালে পাকিস্তানের জঙ্গি নেতা মুহম্মদ আহসান ধরের নেতৃত্বে হিযবুল মুজাহিদীন সংগঠন প্রতিষ্ঠা করা হয়। সংগঠনটি শুরু থেকেই জম্মু ও কাশ্মীরে তৎপরতা চালায়। পরবর্তীতে ভারত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র এই সংগঠনকে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে কালো তালিকাভুক্ত করে। হিযবুল মুজাহিদীনকে সংগঠিত করতেই ঢাকায় এসেছিলেন মাজেদ ভাট।
বাংলাদেশে আসার পর এখানে হিযবুল মুজাহিদীন সংগঠনে কাজ করেন তিনি। বাংলাদেশে এসে তার সঙ্গে পরিচয় হয় গ্রেনেড হামলার অন্যতম আসামি মুফতি হান্নান ও মাওলানা তাজউদ্দিনের সাথে। তাজউদ্দিন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ছোট ভাই। গত বছর অন্য মামলায় মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।
জঙ্গি মাজেদ ভাটের আসল নাম ইউসুফ ভাট হলেও তিনি সেটা গোপন রেখেছিলেন। প্রকৃত নাম গোপন করেই বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা শুরু করেন তিনি। ২০০৩ সালে বাংলাদেশি পরিচয় দিয়েই প্রতারণা করে সিরাজগঞ্জের মেয়ে নাহিদ লায়লাকে বিয়ে করেন তিনি।
মুফতি হান্নান ও মাওলানা তাজউদ্দিনের সাথে থেকেই গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনা করেন মাজেদ ভাট। এছাড়া পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই’র সঙ্গেও যোগাযোগ রক্ষা করে আসছিলেন। পাকিস্তান থেকে গ্রেনেড আনার কাজটিও করেন মাজেদ ভাট। সেই গ্রেনেড হামলায় ব্যবহার করা হয়।
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ায় আদালতে উপস্থাপিত নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, মাজেদ ভাট হিযবুল মুজাহিদীনকে সংগঠিত করতে কাজ করেছেন। এ কাজের জন্য পাকিস্তান থেকে তার কাছে নিয়মিত অর্থও আসতো। ২০০৭ সালের জুন মাসে তিনি সিরাজগঞ্জে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন।
বুধবার (১০ অক্টোবর) গ্রেনেড হামলার রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন মাজেদ ভাট।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধুর এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। হামলায় নিহত হয় ২৪ জন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৮
টিআর/এমজেএফ