বুধবার (১০ অক্টোবর) সকালে দাগনভূঞাঁর ইকবাল মেমোরিয়াল সরকারি ডিগ্রি কলেজের হল রুমে ফেনী ইউনিভার্সিটির উদ্যোগে আয়োজিত ‘হায়ার এডুকেশন ইন রিজিওনাল কনটেক্সট’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা একথা বলেন।
ইকবাল মেমোরিয়াল সরকারি ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আবুল কালামের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফেনী ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. সাইফুদ্দিন শাহ।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করতে গিয়ে প্রফেসর শাহ বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আমাদের কিছু সামাজিক দায়বদ্ধতা আছে। দরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত অথচ মেধাবী, এমন শিক্ষার্থীরা যেন ঝরে না পড়ে, সেদিকে আমরা লক্ষ রাখি। আমাদের শিক্ষার্থীরা যেন ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিতে পারে, সেভাবেই আমরা তাদের গড়ে তুলতে চাই। দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করাই ফেনী ইউনিভার্সিটির মূল লক্ষ্য।
উপাচার্য আরও বলেন, বাংলাদেশের এমন অনেক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আছে যেখানে ঠিকমতো পড়ালেখা হয় না। এছাড়া প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে ক্লাস ও পরীক্ষা ছাড়া সার্টিফিকেট বিক্রির অভিযোগও আছে। রাজধানী ঢাকার অলিগলিতে অসংখ্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় শোভা পাচ্ছে যার নিচে হোটেল রেস্তোঁরা, পাশে নালা-নর্দমা। কিন্তু আমাদের এখানে সাত তলাবিশিষ্ট তিনটি বিল্ডিং রয়েছে। যার আয়াতন ৫০ হাজার বর্গফুটের বেশি। এছাড়া সাড়ে ১০ একর জায়গায় আমাদের মূল ক্যাম্পাসের কাজও এগিয়ে চলছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে নিয়মিতভাবে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চ্যান্সেলর কর্তৃক নিয়োগকৃত ভাইস চ্যান্সেলর ও ট্রেজারার দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে ইউনিভার্সিটি’র কর্মকাণ্ড। আমাদের রয়েছে এক ঝাঁক অভিজ্ঞ শিক্ষক। দেশের সেরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধা তালিকায় থাকা এসব শিক্ষকের আছে বিদেশি উচ্চতর ডিগ্রিও। তাই আমাদের এখানে শিক্ষার মান অনেক ভালো।
উচ্চশিক্ষায় আঞ্চলিকতা পরিপ্রেক্ষিত নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে প্রফেসর শাহ বলেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল যেমন-সীমান্ত, পাহাড়ি, উপকূলীয় দ্বীপ ও চরাঞ্চলে সহজে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগানো এবং তা বজায় রাখা কষ্টকর হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ফলে সে রকম এলাকাগুলো আবশ্যিকভাবে উন্নয়নের দিক থেকে পিছিয়ে পড়ছে। ঠিক এরকমই একটি প্রেক্ষাপটে শিক্ষা ও উন্নয়নের কেন্দ্র হিসেবে ফেনীতে একটি ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত যুক্তিগ্রাহ্য হয়েছে। একটি ইউনিভার্সিটি হচ্ছে নতুন জ্ঞানের উৎপত্তি ও বিতরণের জায়গা, সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিস্তারের প্রাণকেন্দ্র। ইউনিভার্সিটি ছাড়া কোনো অঞ্চলের মানুষের উন্নয়ন সাধন দুরূহ হয়ে পড়ে।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইকবাল মেমোরিয়াল সরকারি ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও ফেনী ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার তায়বুল হক। এসময় তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো একটি অন্যটির পরিপূরক।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যদি তোমরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাও, তবে তোমাদের স্বাগতম। কিন্তু, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগে ফেনী ইউনিভার্সিটি একবার ঘুরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।
ফেনী ইউনিভার্সিটির শিক্ষার মানের কথা তুলে ধরে প্রফেসর তায়বুল বলেন, আমাদের এখানে পড়ার পরিবেশ ও মান ভালো। তাই ফেনীর মানুষ হিসেবে তোমাদের কাছে দাবি থাকলো, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লে অবশ্যই আমাদের এখানে আসবে।
ফেনী ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের সঞ্চলনায় সেমিনারে ইকবাল মেমোরিয়াল সরকারি ডিগ্রি কলেজের স্টাফ কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন বাবুল ও ফেনী ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার এ এস এম আবুল খায়ের উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৮
এসএইচডি/আরআর