ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘ওনার গুণের শেষ নাই’

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৮
‘ওনার গুণের শেষ নাই’

ঢাকা: সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের কড়া সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ওনার গুণের শেষ নাই। 

মইনুল হোসেনকে ময়ূর পুচ্ছ লাগানো কাক এবং ভদ্রতা শিখেন নাই বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

সোমবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে গণভবনে সাম্প্রতিক সৌদি আরব সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

 

টেলিভিশন আলোচনা অনুষ্ঠানে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলে কটূক্তি করেন ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জঘন্য ভাষায় মন্তব্য করেছিলেন, তার বাচনিক ভঙ্গি, তার অ্যাচিটিউডটাই ছিলো খুব খারাপ। তার কাছে এর বেশি আশা করবেন, সে কে আপনারা জানেন?’

‘৭১ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে সে তো দালালি করে বেড়াতো পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর। ইত্তেফাক থেকে সিরাজউদ্দিন হোসেন সাহেবকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল, এর জন্য তো সেও কম দায়ী নয়। ’

তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় কথা ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর আপনাদের মনে আছে খুনি মোস্তাক একটা দল করেছিল, এই ভদ্র লোক, আমাদের মইনুল হোসেন সেই দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। ’

‘এরপর সে জাতির পিতার হত্যাকারী খুনি হুদা, পাশা, শাহরিয়ার এদের নিয়ে সে কিন্তু একটা রাজনৈতিক দলও গঠন করেছিল। তার রাজনৈতিক দলে কারা? জাতির পিতার আত্মস্বীকৃত খুনিরা। এই খুনিদের নিয়ে কিন্তু সে দল গঠন করে। তার কাছ থেকে ভালো ও ভদ্র ব্যবহার আর কি পাবেন!’

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী।  ছবি: পিআইডিপ্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু তাই না, সে ইত্তেফাকে একটা মার্ডারও করে। নিজে মার্ডার করে, নিজের ভাইকে ফাঁসানোরও প্রচেষ্টা চালিয়েছিল। এমনকি সম্পত্তি, কাকরাইলের বাড়ি সেটা নিয়েও ঝামেলা আছে। ’ 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওনার গুণের আর শেষ নাই। ওনার গুণ এতবেশি যে, উনি গিয়েছিলেন ব্যারিস্টারি পড়তে। সেই যুগে ব্যারিস্টারি পড়তে যাওয়া তো কম কথা না। ’

‘ব্যারিস্টারি পাস করে আসার পর উনি সাহেব হয়ে গেলেন। মানিক চাচা কিন্তু সব সময় পান্তা ভাত খেতেন। পান্তা ভাত খুব পছন্দ করতেন তিনি। আর ওনার ছেলে আসলেন সাহেব হয়ে। উনি (মইনুল হোসেন) বাংলাদেশের খাবার আর খেতে পারেন না, সাহেবি খাবার খেতে হবে। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে চাচা (মানিক মিয়া) এসে মায়ের কাছে খুব আপসোস করে বলেছেন, আমি কি করি? আমার ছেলে এখন ইংরেজি খাবার খাবে। ইংরেজি খাবার রান্নার জন্য আলাদা বাবুর্চি রাখা হলো। সেই যুগে ১০০ টাকা দিয়ে ইংরেজি খাবার রান্না করতে ওনার জন্য বাবুর্চি আনা হলো। ’

‘উনি হলেন সেই কাক যে ময়ুর পুচ্ছ লাগায়ে ময়ূর হওয়ার চেষ্টা করে। বিদেশে গিয়ে ব্যারিস্টারি পড়তে গিয়ে তিনি ইংরেজ হয়ে আসার চেষ্টা করলেন। শিখেছিলেন খাওয়া ঠিকই কিন্তু ইংরেজদের ভদ্রতাটা শিখে আসেন নাই, কথা বলাটা শিখে আসেন নাই। এটা হলো বাস্তবতা,’ বলেন তিনি।  

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই কথা সবার জানার কথা না। আমি জানি। আরও জানি। পরে বলবো। ’

মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা ও আদালতের জামিন পাওয়া নিয়ে প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে একটা মামলা না-ই হতে পারে, আরও হয়তো মামলা হতে পারে। এর প্রতিবাদও আপনারা করতে পারেন। আপনারা প্রতিবাদ করুন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যা করার করবে। আপনারা মামলা করুন, আমরা যা করার করবো। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখন একটা মামলা হয়, তখন ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়। ওয়ারেন্ট ইস্যুর সঙ্গে সঙ্গে এখানে কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর ছিল। ’ 

‘বিষয়টি যখন বিচার বিভাগের, সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তো গিয়ে হামলা করতে পারে না। এছাড়া তিনি সেখানে আগাম জামিন চেয়েছেন। কোর্ট তাকে আগাম জামিন দিয়েছেন। তাও পাঁচ মাসের। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৮
এসকে/এমইউএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।