প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার (০৩ ডিসেম্বর) বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভার শেষ বৈঠকে এই আইনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, শ্রমিক কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন করার জন্য ৩০ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ সমার্থন নেওয়ার বিধান করা হয়েছে। আর ধর্মঘট করার জন্য দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন প্রয়োজন পড়বে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ২০১৩ সাল থেকে এ আইনটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এ পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে।
২০০৬ সালের মূল শ্রম আইনের সঙ্গে এটাকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে এবং আইএলও, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রেরও কিছু অবজারভেশন ছিল এটাকে একটু শ্রমবান্ধব করার জন্য। সেই দাবিতেই এটাকে অনেকটা শ্রমিকদের ফেভারেবল করা হয়েছে।
নতুন আইনের বিভিন্ন পরিবর্তন তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বেপজার নিজস্ব পরিদর্শন কার্যক্রমের পাশাপাশি শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের যে অধিদফতর আছে তাদেরও এই আইনের আওতায় পরিদর্শন সুযোগ রাখা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, শ্রমিকদের ধর্মঘট করার ক্ষেত্রে যে তিন-চতুর্থাংশের সমর্থনের বাধ্যবাধকতা ছিল সেটি কমিয়ে দুই-তৃতীয়াংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। শ্রম আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শ্রমিক কল্যাণ সমিতির গঠনতন্ত্র শ্রমিকরা নিজেরা করতে পারবেন, সেই বিধান রাখা হয়েছে।
শ্রমিকদের ধর্মঘট ও লক আউটের অধিকার দেওয়া হয়েছে। শ্রমিক কল্যাণ সমিতির নির্বাচিত কর্মকর্তাদের চাকরি সংক্রান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। মালিকদেরও সমিতি করার অধিকার দেওয়া হয়েছে।
শ্রমিক কল্যাণ সমিতি মানেই ট্রেড ইউনিয়ন, নামটা ভিন্ন, কিন্তু কাজ একই। শ্রমিকরাও এই নামটি পছন্দ করেছেন। যোগ্য শ্রমিক বলে একটি বিধান ছিল, আগের আইনে সেটি বাদ দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নির্বাহী পরিষদের পরবর্তী নির্বাচনের সময় এক বছর থেকে কমিয়ে ৬ মাস করা হয়েছে। শ্রমিকের ইস্তফাজনিত কারণে সার্ভিস বেনিফিট প্রাপ্তি সংক্রান্ত একটি নতুন উপধারা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অবসর গ্রহণের ক্ষেত্রে শ্রমিকরা সার্ভিস বেনিফিট হিসেবে প্রত্যেক বছরের জন্য ৩০ দিনের মূল মজুরির পরিবর্তে ৪৫ দিনের মূল মজুরি পাবেন।
তিনি বলেন, আইএলও, ইউএস অ্যাম্বাসি ও ইইউ-এর মতামতের ভিত্তিতে শ্রমিক কল্যাণ সমিতি গঠনের জন্য আগে একটা রেফারেন্ডাম সিস্টেম ছিল অর্থাৎ গণভোট, সেটা বাদ দেওয়া হয়েছে।
নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠানে ৩ মাস পর্যন্ত শ্রমিক সমিতি গঠন নিষিদ্ধ ছিল, সেই বিধানটিও বাদ দেওয়া হয়েছে। শ্রমিক কল্যাণ সমিতি গঠনের জন্য আগে ১২টি স্টেপ ছিল, এখন কমিয়ে তিনটি করা হয়েছে।
ইপিজেডের বিনিয়োগকারীরা এই আইনের সঙ্গে একমত কিনা- প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সবার মত নিয়েই আইনটি করা হয়েছে।
সংসদ না থাকায় আইনটি অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৮/আপডেট: ১৮৪৩ ঘণ্টা
এমআইএইচ/জেডএস