শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ মঙ্গলবার সকালে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ঢাকা আঞ্চলিক অফিসের পরিচালক মো. ইউসুফকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন।
সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনার পরপরই তিনি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য শিক্ষামন্ত্রী সচিবালয় থেকে রওনা হয়েছেন।
মাউশির ঢাকা আঞ্চলিক অফিসের উপ-পরিচালক শাখাওয়াত হোসেন এবং ঢাকা জেলা শিক্ষা অফিসার বেনজীর আহমেদকে কমিটিতে রাখা হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অভিভাবকরা মিছিল করছেন, বিষয়টি জটিল হয়ে গেলো, আমি সেখানে যাচ্ছি। গতকাল শুনেই আমি যথাসম্ভব তথ্য নিয়েছি। এরপর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথা বলেছি। আমি তাদের বলেছি, আপনারা আইনগত দিকটা দেখেন, কারণ এরমধ্যে ক্রিমিন্যাল ব্যাপার আছে একটা। আর আমরা আমাদের বিষয়টা দেখব।
নাহিদ বলেন, কমিটিকে আগামী তিনদিনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
স্কুলের সামনে অবস্থানরত অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য শিক্ষামন্ত্রী সচিবালয় থেকে সেখানে গেছেন।
ভিকারুননিসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস জানান, ভিকারুননিসার পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মো. আতাউর রহমান (অভিভাবক প্রতিনিধি), তিন্না খুরশীদ জাহান (অভিভাবক প্রতিনিধি, সংরক্ষিত মহিলা) এবং ভিকারুননিসার শিক্ষক ফেরদৌসী বেগমকে নিয়ে পৃথক তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলে জানান অধ্যক্ষ।
এদিকে বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে এনেছেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চের নজরে এনেছি। আদালত বিষয়টিকে হৃদয় বিদারক ঘটনা বলে আবেদন আকারে বুধবার (০৫ ডিসেম্বর) রিট করতে বলেছেন। রিটে বিষয়টি তদন্ত করার আবেদন জানানো হবে।
এর আগে সোমবার (০৩ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে রাজধানীর শান্তিনগরে গলায় ফাঁস দিয়ে অরিতী অধিকারী (১৫) নামে ভিকারুননিসার ওই স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেন। অরিতী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শাখার নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন।
অরিতীর বাবা দিলীপ অধিকারী জানান, অরিতীর স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। রোববার (০২ ডিসেম্বর) পরীক্ষা দেওয়ার সময় তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনার পর স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের স্কুলে যেতে বলে। স্কুলে যাওয়ার পর কর্তৃপক্ষ জানায়, তার মেয়ে পরীক্ষার হলে মোবাইলের মাধ্যমে নকল করছিল। তাই তাকে টিসি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ খবর শোনার পর স্কুল থেকে অরিতী বাসায় ফিরে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে দ্রুত উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
দিলীপ অভিযোগ করেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ মেয়ের সামনে আমাকে অপমান করেছে এবং জানিয়ে অরিতী পরীক্ষা দিতে পারবে না। এ মানসিক আঘাত সইতে না পেরে সে বাসায় ফিরে আত্মহত্যা করেছে।
এ বিষয়ে ঘটনার পর পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আতাউর রহমান বাংলানিউজকে জানান, স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যার খবর পেয়ে ঢামেক হাসপাতালে গিয়েছি।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৮/আপডেট: ১২০০ ঘণ্টা
এমআইএইচ/ইএস/এজেডএস/জেডএস