মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যরা বঙ্গভবনে শপথ গ্রহণ করবেন সোমবার (৭ জানুয়ারি) বিকেলে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ পড়াবেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানায়, রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনে প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর শপথ পড়াবেন। এরপর মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের শপথ পড়াবেন। শপথের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে দফতর বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নিলে তারাই হবে দেশের নতুন সরকার। শপথ নেওয়া পর্যন্ত আগের মন্ত্রিসভা বহাল থাকবে।
গত ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের বিজয়ের পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের সংসদ সদস্যরা শপথ নেন গত ৩ জানুয়ারি। এরইমধ্যে বিরোধী দলে থাকার ঘোষণা দিয়েছে এরশাদের জাতীয় পার্টি। ২৭ জন নতুন মুখ এলেও জোটের শরিক দলের কাউকে মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়া হয়নি।
এবারের মন্ত্রিসভায় পুরনো অনেক মন্ত্রী যারা রাজনীতিতে প্রভাবশালী তারা বাদ পড়েছেন। আবার নতুন অনেকেই স্থান পেয়েছেন শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রিসভায়।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ছাড়াও জনপ্রশাসন, প্রতিরক্ষা, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের দায়িত্ব রয়েছে শেখ হাসিনার হাতে।
মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রী হিসেবে স্থান পেয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। বাদ পড়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। আর ওবায়দুল কাদেরকে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে রাখা হয়েছে।
ডা. দীপু মনি শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন। বাদ পড়েছেন নুরুল ইসলাম নাহিদ। এই মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হয়েছেন মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে যথারীতি রয়েছেন আনিসুল হক; স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও বহাল আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
এএইচ মাহমুদ আলীর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন আগের মন্ত্রিসভার অর্থমন্ত্রী মুহিতের ভাই ড. এ কে আবদুল মোমেন। তবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন শাহরিয়ার আলম-ই।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হয়েছেন আগের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং। আর অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদোন্নতি পেয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী হয়েছেন এম এ মান্নান।
নসরুল হামিদ বিপু বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী ও জুনাইদ আহমেদ পলকও রয়েছেন আগের আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে।
ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফের জায়গায় পদোন্নতি পেয়েছেন প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন জাহিদ আহসান রাসেল; এই দায়িত্বে আগে ছিলেন ড. বীরেণ শিকদার। বাদ পড়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়।
ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন ডা. এনামুর রহমান, এই মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী ছিলেন মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের স্থলে দায়িত্ব পেয়েছেন শ. ম. রেজাউল করিম।
বাণিজ্যমন্ত্রী হয়েছেন টিপু মুনশি; এই মন্ত্রণালয়ে আগে ছিলেন বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ।
তবে রদবদল হয়নি আ ক ম মোজাম্মেল হকেরও, তিনি যথারীতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন।
ইমরান আহমেদ চৌধুরী প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন; এখানে টেকনোক্র্যাট কোটায় আগে মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন নূরুল ইসলাম বিএসসি।
টেকনোক্র্যাট কোটায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা মোস্তাফা জব্বার ছাড়াও রয়েছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।
রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের জায়গায় এসেছেন মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম সুজন। বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন; বেগম হাবিবুন্নাহারকে প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের খন্দকার মোশাররফ হোসেনের জায়গায় দায়িত্ব পেয়েছেন তাজুল ইসলাম; প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন স্বপন ভট্টাচার্য।
বাংলাদেশের ওয়ার্রকার্স পার্টির সভাপতি সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেননকে সরিয়ে প্রতিমন্ত্রী নূরুজ্জামান আহমেদকে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে; আর প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে শরীফ আহমেদকে।
গোলাম দস্তগীর গাজীকে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে; বাদ পড়েছেন মুহা. ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে মোহাম্মদ নাসিমের জায়গায় পদোন্নতি পেয়েছেন প্রতিমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক; তার জায়গায় এসেছেন মো. মুরাদ হাসান।
খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের জায়গায় স্থলাভিষিক্ত পেয়েছেন সাধন চন্দ্র মজুমদার। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন ড. আব্দুর রাজ্জাক।
হাসানুল হক ইনুকে সরিয়ে ড. হাছান মাহমুদকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী শাজাহান খানকে সরিয়ে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে খালিদ মাহমুদ চৌধুরীকে। আর জাহিদ ফারুককে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও একেএম এনামুল হক শামীমকে উপ-মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে; এই মন্ত্রণালয়ের পূর্ণমন্ত্রী ছিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু।
নুরুল মজিদ হুমায়ুন শিল্পমন্ত্রী হয়েছেন, এই মন্ত্রণালয় ছিলো আমির হোসেন আমুর দায়িত্বে। আর প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে কামাল আহমেদ মজুমদারকে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে আশরাফ আলী খান খসরুকে; বিদায়ী মন্ত্রিসভায় এ মন্ত্রণালয়ের পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী ছিলেন নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। মুজিবুল হক চুন্নুর স্থলে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হয়েছের জাকির হোসেন, এই মন্ত্রণালয়ে আগে পূর্ণ মন্ত্রী ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। ইসমত আরা সাদেকের পরিবর্তে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে ফরহাদ হোসেনকে, এই মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে কেএম খালিদকে, এ মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী ছিলেন আসাদুজ্জামান নূর। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন মো. মাহবুব আলী। এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন একেএম শাহজাহান কামাল।
টেকনোক্র্যাট কোটায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহকে। টেকনোক্র্যাট কোটায় এই মন্ত্রণালয়ে ছিলেন অধ্যক্ষ মতিউর রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৯
এমআইএইচ/আরআর