ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পদ্মাসেতু দৃশ্যমান হচ্ছে ৯০০ মিটার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০১৯
পদ্মাসেতু দৃশ্যমান হচ্ছে ৯০০ মিটার পদ্মাসেতু (ফাইল ফটো)

মুন্সিগঞ্জ: দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে স্বপ্নের পদ্মাসেতু প্রকল্পের কাজ। এই সময়ে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা  হয়নি। তবে নতুন বছর শুরু অর্থাৎ জানুয়ারিতে জাজিরা প্রান্তে ৩৬ ও ৩৭ নম্বর পিলারে ষষ্ঠ স্প্যান (সুপার স্ট্রাকচার) ৬এফ বসবে। ফলে দৃশ্যমান হচ্ছে সেতুর ৯০০ মিটার। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পের ৬২ শতাংশ আর মূল সেতুর ৭২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকিটা শেষ করতেও পুরোদমে কাজ করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও শ্রমিকরা।

জানা যায়, দেড়শ’ মিটার দৈর্ঘ্যের ধূসর রংয়ের ‘৬এফ’ স্প্যানটি মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে বের করে রাখা হয়েছে। তিন হাজার ৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার ‘তিয়ান ই’ ক্রেনটি প্রস্তুত তিন হাজার ১৪০ টন ওজনের স্প্যান বহনে। ৫টি স্প্যান পিলারে বসানোর সময়ের চেয়ে বেশি সময় অতিবাহিত হচ্ছে ষষ্ঠ স্প্যানটি বসাতে। নদীতে যে ২৬২টি পাইল বসবে তার মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে ১৮৯টি পাইল ড্রাইভ।  

মূল সেতুর প্রকৌশলী সূত্র বাংলানিউজকে জানান, চলতি মাসেই ৬ ও ৭ নম্বর পিলারের নকশা চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে পারে। জাজিরা প্রান্তের ৩৬ নম্বর পিলার এখন স্প্যান বসানোর জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।

রোববার (৬ জানুয়ারি) থেকে শুরু হয়েছে সেতুর ১ নম্বর পিলারের পাইল ক্যাপের র্যায়বার প্লেসিং। এছাড়াও পাইল ক্যাপের কাজ চলছে সেতুর ৯, ১৫, ১৮ ও ১৯ নম্বর পিলারের। পাইল ক্যাপের কাজ শেষ হয়েছে ২১, ২২, ২৩ নম্বর পিলারের। এছাড়া সম্প্রতি পাইল ড্রাইভের কাজ শেষ হয়েছে ২৫ নম্বর পিলারের।  

পদ্মাসেতু (ফাইল ফটো)আরো জানান, নকশা সমাধান হওয়া পিলারগুলোর ক্ষেত্রে “স্ক্রিন গ্রাউটিং” এর জন্য ট্যাম্প পাইল প্রস্তুত ১৬টি। এসবের ৮, ৩১, ৩২ নম্বর পিলারের ৮টি পাইল ড্রাইভ সম্পন্ন হয়েছে, বাকিগুলোর কাজও চলমান আছে। পদ্মাসেতুর ৪২টি পিলারের মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে ১৫টি পিলার। এগুলো হলো- ২, ৩, ৪, ৫, ১৩, ১৪, ১৬, ১৭, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১, ৪২। মাওয়া প্রান্তের ভায়াডাক্টের মোট ৩৯টির মধ্যে ২৬টি পাইল ক্যাপ সম্পন্ন হয়েছে।  

এছাড়া এগুলোর মধ্যে রোডওয়ে পিয়ার কলামের কাজ শেষ হয়েছে ১৩টির। ইতোমধ্যে এন ওয়ান এবং এন টু এর রোডওয়ে পিয়ার ক্যাপ কমপ্লিট।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকৌশলী বাংলানিউজকে জানান, নদীতে পানি কম। নাব্যতা নিরসনে বিভিন্ন পয়েন্টে ছোট বড় মিলিয়ে ৭টি ড্রেজার কাজ করছে। এছাড়া ৭এফ, ৭বি, ৭ সি স্প্যানগুলোর ওপর প্রায় শেষ পর্যায়ে রেলওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজ। ইঞ্জিনিয়ারিং খুঁটিনাটি নানা বিষয়ে সময় নির্ধারণ করে তার পরিবর্তন করতে হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি মাসের শেষের দিকে ষষ্ঠ স্প্যান বসানোর লক্ষ্যে কাজ এগিয়ে চলছে।  
 
পদ্মাসেতু (ফাইল ফটো)উল্লেখ্য, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুতে ৪২টি পিলারের ওপর বসবে ৪১টি স্প্যান। পদ্মা বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। সেতুর ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলারের ওপর ৫টি স্প্যান বসানোর মাধ্যমে জাজিরা প্রান্তে পৌনে ১ কিলোমিটার কাঠামো দৃশ্যমান হয়েছে।  

২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বসানো হয় প্রথম স্প্যান। এর প্রায় ৪ মাস পর চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি দ্বিতীয় স্প্যানটি বসে। এর মাত্র দেড় মাস পর ১১ মার্চ শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ধূসর রঙের তৃতীয় স্প্যান বসানো হয়। এর ২ মাস পর ১৩ মে বসে চতুর্থ স্প্যান। আর পঞ্চম স্প্যানটি বসে এক মাস ১৬ দিনের মাথায়।  

এছাড়া মাওয়া প্রান্তের ৬ ও ৭ নম্বর পিলারের স্প্যান (সুপার স্ট্রাকচার) ‘ওয়ান এফ’ আপাতত সেতুর ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের ওপর রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।