ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বাইক খোয়ালেন নারী বাইকার শাহনাজ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৯
বাইক খোয়ালেন নারী বাইকার শাহনাজ শাহনাজ আক্তার। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: যানজটের এই রাজধানীতে অ্যাপসভিত্তিক বাইক সেবা নগরবাসীর কাছে বেশ জনপ্রিয়। শত সহস্র বাইকারদের মধ্যে অল্পদিনেই ভিন্নভাবে আলোচনায় এসেছিলেন বাইকার শাহনাজ আক্তার পুতুল। ঢাকার রাজপথে পুরুষ বাইকারদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সমানতালে স্কুটি নিয়ে চষে বেড়িয়েছেন ঢাকার অলিগলি, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকল আরোহীদের পৌঁছে দিয়েছেন গন্তব্যে।

তবে তার উপার্যনের একমাত্র মাধ্যম প্রিয় ওই স্কুটিটি হারিয়ে ফেলেছেন ঢাকার পথেই। দিনে দুপুরে চোখের সামনে প্রতারণার স্বীকার হয়েছেন তিনি।

চাকরির প্রলোভনে পরিচিত হয়ে স্কুটারটি ছিনিয়ে নিয়েছে এক প্রতারক।

মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) শনিবার রাজধানীর মানিক মিয়া এ্যাভিনিউ থেকে শাহনাজের স্কুটিটি (ঢাকা মেট্রো- হ ৫৫২৯৪৭) ছিনতাই হয়। এ সংক্রান্ত শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা (নং- ১৪) দায়ের করা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, শাহনাজ অ্যাপসভিত্তিক রাইড শেয়ারিং উবারের আওতায় স্কুটি চালাতেন। গত ১০ জানুয়ারি শ্যামলীতে জনি নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয় শাহনাজের। জনি নিজেকে পাঠাও রাইডার পরিচয় দিয়ে শাহনাজকে একটি স্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা করে দেবে বলে আশ্বাস দেয়।

এজন্য ১৫ জানুয়ারি শাহনাজকে খামারবাড়ি এলাকায় যেতে বলে। কথা অনুযায়ী শাহনাজ খামারবাড়িতে গেলে জনি তাকে নিয়ে বিমানবন্দর যেতে বলে। এভাবে বিমানবন্দর থেকে বিভিন্ন এলাকা ঘুরিয়ে আবার মানিক মিয়া এ্যাভিনিউ রাজধানী স্কুলের সামনে এসে দুইজন চা খায়।

তখন জনি বলে, স্কুটি কিভাবে চালাতে হয়? শাহনাজকে একটু দেখার কথা বলে স্কুটির চাবি নিয়ে নেয়। এরপর সেই ব্যক্তি স্কুটি নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। এজাহারে জনির ফোন নাম্বার হিসেবে 01722881077 উল্লেখ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গনেশ গোপাল বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, 'এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। '

সংগ্রামী নারী শাহনাজ আক্তার সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। রাজধানীর মিরপুরেই জন্ম তার। বাবা নেই, মা আর বোনেরা আছেন। স্বামী থাকলেও তিনি আলাদা থাকেন। তার সঙ্গে তার দুই মেয়েও থাকে। বড় মেয়ে নবম ও ছোট মেয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে।

শাহনাজের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ভাই আমার স্কুটিটা বের করে দেন, আমি ভিক্ষা করে খাই না, কষ্ট করে খাই। স্কুটি কেনার ধারের টাকা এখনো শোধ হয় নি, এরমধ্যে আজ ছিনতাই হলো। আপনারা যেভাবে পারেন বাইকটি খুঁজে দেন।

বার বার স্কুটি খুঁজে দেওয়ার আকুতি জানিয়ে অঝোরে কাঁদতে থাকেন তিনি। এর মধ্যে নিজেকে সামলাতে না পেরে ফোন কেটে দেন।

বাংলাদেশ সময়: ০০২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৯
পিএম/এমকেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।