ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

চকবাজারে আগুন: বেড়েই চলেছে লাশের সারি

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৯
চকবাজারে আগুন: বেড়েই চলেছে লাশের সারি চকবাজারে বাড়ছে লাশের সারি/ছবি: জিএম মুজিবুর/বাংলানিউজ

ঢাকা: রাজধানীর চকবাজারের নন্দ কুমার দত্ত রোডের কয়েকটি ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা একের পর এক বেড়েই চলছে। প্রথমে অবস্থায় আগুন নিয়ন্ত্রণের পর পাঁচটি মরদেহ উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। 

প্রাথমিকভাবে কয়েকজনের মরদেহ উদ্ধার হলেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসতেই একের পর এক উদ্ধার হচ্ছে নিথর ঝলসানো দেহ। পরে ১১, ১৬, ৪৯... সর্বশেষ ৭০; এভাবেই বাড়তে থাকে মৃত মানুষের সংখ্যা

আগুন নেভাতে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস।  ছবি: জিএম মুজিবুর/বাংলানিউজভোর পর্যন্ত মরদেহের সংখ্যা ৪৯টি। বৃহস্পতিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা পর্যন্ত ৭০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।  

পড়ুন>>চকবাজারের ভয়াবহ আগুন কেড়ে নিলো ৬৩ প্রাণ

একই সঙ্গে ৪১ জনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।  

ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সাঁটানো বোর্ডে বৃহস্পতিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল পর্যন্ত ৭০ মরদেহ উদ্ধারের তথ্য দেওয়া হয়। সেখানে আরও বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ বা আহত হয়ে ৪১ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

সকালে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন্স অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) মেজর একেএম শাকিল নেওয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, এ পর্যন্ত ৭০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ৪১ জনকে দগ্ধ ও আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।  

আগুন নেভাতে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস।  ছবি: জিএম মুজিবুর/বাংলানিউজ‘তবে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। মরদেহগুলোরও পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। মরদেহগুলো ঢামেক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ’

এর আগে বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত সাড়ে ১০টার পর চকবাজারের নন্দকুমার দত্ত রোডের শেষ মাথায় মসজিদের পাশে ৬৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওয়াহিদ ম্যানসনে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়।  

এলাকাবাসী বলছেন, ওই ভবনের কারখানা থেকে আগুন ছড়িয়েছে। কারও কারও মতে, বিকট শব্দে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আগুন ছড়ায়। ওয়াহিদ ম্যানসনের নিচতলায় প্লাস্টিকের গোডাউন ছিল। ওপরে ছিল পারফিউমের গোডাউন।

খবর পেয়ে এ আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রাত ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন বলে জানায় ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুম।  

একটার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন।

এদিকে আগুন নেভানোর বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ বিষয়ে রাত সাড়ে ৩টার দিকে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহম্মেদ খান বলেন, এখানে আসার রাস্তাটির দু’পাশই সরু। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি সহজে ঢুকতে পারেনি। তবে শেষ পর্যন্ত কয়েকঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছি। ভবনে দাহ্য পদার্থ থাকার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। মোট পাঁচটি ভবনে আগুন লেগে যায়। এখনো আমাদের কাজ চলছে। আমরা কাজ শেষে সার্চ করবো। দাউ দাউ করে ঝলছে আগুন।  ছবি: ডিএইচ বাদল/বাংলানিউজতিনি বলেন, এখানে প্লাস্টিকের জিনিসপত্র বানানো হয়। বডি স্প্রেও এখানে বানানো হয়। বডি স্প্রে তৈরির দাহ্য পদার্থে আগুন বেশি ছড়িয়েছে।  

গ্যাস সিলিন্ডার নাকি ট্রান্সমিটার বিস্ফোরণ, নাকি বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত- এমন এক প্রশ্নের জবাবে ফায়ার সার্ভিসের ডিজি বলেন, ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকনের নির্দেশে একটি তদন্ত কমিটি গঠন হচ্ছে। তদন্ত করলেই বোঝা যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৯ 
এমআইএইচ/টিএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।