চাপাইনবাবগঞ্জের আম চাষিদের আশঙ্কা, এ বৃষ্টিতে মুকুলে পচন দেখা দিলে আমের গুটি আর বের হবে না। এতে আম উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কা তাদের।
বাংলানিউজকে শিবগঞ্জের চককীর্ত্তি ইউনিয়নের আম চাষী জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস জানান, তার জীবনে তিনি ফাল্গুন মাসে এমন বৃষ্টি ও মেঘ-বাদল দেখেন নি। গত দুই দিন ধরে আষাঢ় মাসের মত টানা বৃষ্টিতে আমের মুকুলে পচন ধরে যেতে পারে।
একই সুরে শিবগঞ্জ পৌর এলাকার আম চাষী ইসমাঈল খান শামিম বলেন, গত বছর এমন বৃষ্টি না হলেও শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ের তাণ্ডবে বেশিরভাগ মুকুল শেষ হয়ে যায়। এ বছর টানা বৃষ্টির কারণেও মুকুল পচে যেতে পারে।
জেলার সর্বাধিক আমবাগান জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায়। এ উপজেলায় বৃষ্টির পরিমাণ ও স্থায়ীত্বও ছিল বেশি। আর এ এলাকার আম, চাষিরাই বেশি চিন্তাগ্রস্ত। শিবগঞ্জ কৃষি অফিসের কৃষি কর্মকর্তা সুলতান আলী বাংলানিউজকে জানান, বৃষ্টি অব্যাহত ও আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে মুকুলের ক্ষতি হতে পারে।
তিনি আরও জানান, শিবগঞ্জের ৩৭ হাজার ৭শ হেক্টর মোট আবাদী জমির মধ্যে ১৭ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে রয়েছে আমবাগান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. মুঞ্জুরুল হুদা জানান- আকাশে মেঘ বা বৃষ্টির কারণে আমের মুকুলে কিছুটা ক্ষতি হবে। তবে কৃষকদের চিন্তার কোন কারণ নেই। এ বৃষ্টিতে আমের মুকুলের খুব একটা ক্ষতি হবে না।
তিনি আরো জানান, টানা কয়েকদিন বৃষ্টি হলেও ভয় নেই মুকুলের জন্য। চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবার ব্যাপকহারে আম গাছে মুকুল ধরেছে। কিছু কিছু গাছে গুটি গুটি আম লক্ষ্য করা গেছে। যেসব গাছে গুটি বের হয়েছে, সেগুলোর আর কোনো সমস্যা হবে না। গুটি বের না হওয়া মুকুল বৃষ্টিতে ঝরে যাবার আশঙ্কা রয়েছে। তবে এবছর যেহেতু ব্যপক মুকুল এসেছে, তাই বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হবেনা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এ বছর জেলার আম গাছ গুলোতে অনুকূল আবহাওয়ার কারণে ৯৫ শতাংশ গাছে মুকুল হয়েছে । চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবার প্রায় ৩১ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে এবং আমগাছের সংখ্যা ২৬ লাখেরও বেশি। সব কিছু ঠিক থাকলে জেলায় এবার তিন লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় আম চাষিরা কিছুটা উদ্বিগ্ন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৯
এমএমইউ