বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংসদ অধিবেশনে এ বিল পাস হয়। সাংবিধানিক বাধ্য-বাধকতার কারণে বিল তিনটি পাস করা হয়েছে।
এরপর সংবিধানের নির্দেশনা অনুযায়ী তা বিল আকারে সংসদে উত্থাপন করা হয়। পরে এগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। কমিটি বিলগুলো যাচাই-বাছাই শেষে পাসের জন্য সুপারিশ করে। সংবিধানে অধ্যাদেশ জারির পর সংসদ অধিবেশন শুরুর ৩০ দিনের মধ্যে অধ্যাদেশটি বিল আকারে সংসদে পাসের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
অ্যাভিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয় : অ্যাভিয়েশন সংশ্লিষ্ট উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন পর্যায়ে অগ্রসর বিশ্বের সহিত সংগতি রক্ষা ও সমতা অর্জন এবং আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে অ্যাভিয়েশন বিষয়ে উচ্চশিক্ষা, আধুনিক জ্ঞানচর্চা ও পঠন-পাঠনে সুযোগ সৃষ্টি ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যাণ্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় বিল-২০১৯’ পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করেন শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এর আগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি তিনি সংসদে বিলটি উত্থাপন করেন।
প্রস্তাবিত আইনের বিধান অনুযায়ী রাজধানী ঢাকায় ওই অ্যাভিয়েশন অ্যাণ্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে। যে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর, ভাইস চ্যান্সেলর, প্রো- ভাইস চ্যান্সেলর, ট্রেজারার, সিনেট, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যগণের সমন্বয়ে একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা থাকবে। এই বিশ্ববিদ্যালয় অধিভূক্ত এবং অঙ্গীভূত ইনস্টিটিউট, একাডেমি বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের একাডেমিক কার্যক্রম তদারকিকরণ, ব্যবস্থাপনা, উন্নয়নে কাজ করবে।
বিলের বিধান অনুযায়ী এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভূক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে থাকবে, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী পরিচালিত বাংলাদেশ বিমান বাহিনী একাডেমি, ফ্লাইং ইন্সট্রাকটর স্কুল, ফ্লাইট সেফটি ইনস্টিটিউট, অ্যারো মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট, অফিসার্স ট্রেনিং স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বীকৃত অন্য কোন প্রতিষ্ঠান।
এছাড়া সিভিল অ্যাভিয়েশন ট্রেনিং সেন্টার এবং বিমান বাংলাদেশ ট্রেনিং সেন্টারসহ অ্যাভিয়েশন শিক্ষা সংক্রান্ত সরকারী ও বেসরকারী ইনস্টিটিউট, কলেজ, একাডেমি বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের আদেশের বিধান অনুযায়ী এই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হবে।
গণপ্রতিনিধিত্ব (সংশোধন) বিল : জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্র প্রসারিত ও সহজ এবং দ্রুততার সাথে নির্বাচন পরিচালনার সহায়ক বিধানের প্রস্তাব করে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব (সংশোধন) বিল-২০১৯’ পাসের প্রস্তাব সংসদে উত্থাপন করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। এর আগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি তিনি সংসদে বিলটি উত্থাপন করেন।
পাস হওয়া বিলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার, মনোনয়নপত্র দাখিলের পূর্বদিন খেলাপি ঋণ পরিশোধের সুযোগ দান, অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ এবং ইভিএম সংশ্লিষ্ট অপরাধের শাস্তির বিধান সংযোজন করা হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি অধিগ্রহণ বিল : সমতলের মতো পার্বত্য অঞ্চলের ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণে সমতা আনতে সংসদে একটি বিল পাস হয়েছে। ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এ সংক্রান্ত ‘দ্য চিটাগং হিল ট্র্যাকস (ল্যান্ড অ্যাকুইজিশন) রেগুলেশন (সংশোধন) বিল-২০১৯’ পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি তিনি সংসদে বিলটি উত্থাপন করেন।
পাস হওয়া বিলের বিধান অনুযায়ী, পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় সরকারি কাজে ভূমি অধিগ্রহণ করলে ক্ষতিগ্রস্তরা বাজার মূল্যের অতিরিক্ত আরো দুই’শ শতাংশ ক্ষতিপূরণ পাবেন। বেসরকারি কাজে অধিগ্রহণ করলে ক্ষতিপূরণ পাবেন বাজারমূল্যের সঙ্গে আরো তিন’শ শতাংশ। বিদ্যমান আইনে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ এক’শ টাকায় ১১৫ টাকা। অর্থাৎ বাজার মূল্যের পাশাপাশি মাত্র ১৫ শতাংশ বেশি দেওয়ার কথা ছিল। নতুন বিলে সমতলে ৬১টি জেলার সঙ্গে মিল রেখে এই ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণটা বাড়ানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময় ০০৫৫ ঘন্টা, মার্চ ০১, ২০১৯
এসকে/এমএমএস