ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ মাঘ ১৪৩১, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

লক্ষ্মীপুরের ৫০ হাজার জেলের ‘ছুটি’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৫ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০১৯
লক্ষ্মীপুরের ৫০ হাজার জেলের ‘ছুটি’ অলস সময় কাটাচ্ছেন জেলেরা-ছবি-বাংলানিউজ

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীর প্রায় ৫০ হাজার জেলের ছুটি। মার্চ-এপ্রিল দুই মাস জাটকাসহ সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় তারা নদীতে নামেননি। বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাত থেকে মেঘনার জেলেরা মাছ ধরা থেকে বিরত রয়েছেন।

শুক্রবার (১ মার্চ) সকাল ৯টায় জেলার রামগতির আলেকজান্ডার মাছঘাট, কমলনগরের মতিরহাট মাছঘাট, রামগতি উপজেলার রামগতি বাজার মাছঘাট থেকে খবর নিয়ে জানা গেছে, নদীতে জেলেরা মাছ শিকার করতে যাননি। তাদের নৌকা ঘাট সংলগ্ন আশপাশের খালে বেঁধে রেখেছেন।

জালসহ অন্যান্য মাছ ধরার সমাগ্রী নিজ নিজ বাড়িতে নিয়ে রেখেছেন।

মাছ শিকারে না যাওয়ায় মেঘনা এখন জেলেশূন্য। বিকল্প কোনো কর্মসংস্থান না থাকায় জেলার ৫০ হাজারেরও বেশি জেলে এখন অলস সময় পার করছেন। নদীতে মৎস্য বিভাগ, কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশের টহল দিতে দেখা গেছে। মাছঘাটে নেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়। নেই সরগরম। আড়ৎদার ও ব্যববায়ীদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ।

বিভিন্ন হাট-বাজার থেকে খবর নিয়ে জানা গেছে, বাজারে নদীর কোনো মাছ নেই। পুকুর ও ঘেরে চাষ করা কার্প ও দেশীয় মাছ বিক্রি হচ্ছে।

স্থানীয় জেলেরা জানান, প্রতিবছর মার্চ-এপ্রিল (দুই মাস) মাছ ধরা বন্ধ থাকে। এ বিষয়ে তারা আগ থেকে জানেন। বিগত দিনে নিষিদ্ধ সময় মাছ ধরতে গিয়ে জেলেদের কারাগারে যেতে হয়েছে। গুনতে হয়েছে জরিমানা। যে কারণে তারা সতর্ক। ঝুঁকি নিয়ে তারা মেঘনায় মাছ শিকারে যাচ্ছেন না।

জেলা মৎস্য অফিস থেকে জানা গেছে, চাঁদপুরের ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুরের রামগতি পর্যন্ত ১শ’ কিলোমিটার মেঘনা নদী এলাকা মাছের অভয়াশ্রম। মার্চ-এপ্রিল দুই মাস অভয়াশ্রমে জাটকাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিচরণ করবে; বেড়ে উঠবে। এমন পরিস্থিতিতে কোনো বাধা ছাড়াই মাছের উৎপাদন বাড়াতে সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষিধাজ্ঞা জারি করা হয়। এসময়ের মধ্যে মাছ ধরা, সংরক্ষণ, পরিবহন ও ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। এই অভিযান বাস্তবায়ন করতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ পুলিশ ও কোস্টগার্ড কাজ করছে। জেলেদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভা ও মাইকিং করা হচ্ছে। মাছ ধরা থেকে বিরত থাকা জেলেদের দেওয়া হবে খাদ্য সহায়তা।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম মহিব উল্লাহ বলেন, জেলেরা এখন সচেতন। তারা নিষিদ্ধ সময়ে নদীতে মাছ শিকারে যান না। জেলেদের মাছ ধরা থেকে বিরত রাখতে লিফলেট বিতরণ, মাইকিং ও সচেতনতামূলক সভা করা হচ্ছে। রায়পুর ও কমলনগরে কোস্টগার্ডের অস্থায়ী ক্যাম্প করা হয়েছে। এছাড়া মৎস্য বিভাগ জেলা ও উপজেলা প্রশাসন ও নৌ পুলিশ নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করছে। নদীতে যাতে কোনো জেলে মাছ শিকার করতে না পারে যে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আইন আমান্য করে মাছ শিকার করলে জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে। এসময় জেলার ২৫ হাজার ৯৪৭ জন জেলে পরিবারকে খাদ্য সহায়তা হিসেবে ভিজিএফ’র চাল বিতরণ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০১৯
এসআর/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।