পাহাড় ও সমুদ্রঘেরা এ মেরিন ড্রাইভটিকে আরও বেশি পর্যটকবান্ধব করে গড়তে যাচ্ছে সরকার। এ লক্ষ্যে সড়কটির দৈর্ঘ্য আরও ৩২ কিলোমিটার বাড়িয়ে মিয়ানমার ছুঁই ছুঁই টেকনাফ পর্যন্ত প্রসারিত করা হয়।
সড়কে সব সময় দর্শনার্থীদের ভিড় লেগেই থাকে। মেরিন ড্রাইভে চলাচল নির্বিঘ্ন করতে ১ দশমিক ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভার নির্মাণ করবে সরকার। এছাড়াও কলাতলী থেকে লাবনী পয়েন্ট পর্যন্ত সাইকেলওয়ে-ওয়াকওয়ে মেরিন ড্রাইভের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে। ৪৬৬ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে এটা নির্মাণ করবে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। ‘মেরিন ড্রাইভের প্রথম ১ দশমিক ৭০ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত অংশে ফ্লাইওভার নির্মাণ’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর(সওজ)।
সূত্র জানায়, কক্সবাজার শহরকে মেরিন ড্রাইভের সঙ্গে সংযুক্ত করা, মেরিন ড্রাইভের প্রবেশমুখে দৃষ্টিনন্দন সেতু-ফ্লাইওভার নির্মাণের মাধ্যমে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ত্বরান্বিত করা হবে। সমুদ্রপাড় বরাবর যানবাহনের জন্য সম্পূর্ণ পৃথক এবং উঁচু ফ্লাইওভার নির্মাণের মাধ্যমে সমুদ্র সৈকতকে পর্যটকদের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত রাখা, কলাতলী জংশনে যানজট নিরসনসহ মেরিন ড্রাইভের যানবাহন ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে সরকার। কলাতলী থেকে লাবনী পয়েন্ট পর্যন্ত সাইকেলওয়ে-ওয়াকওয়ে মেরিন ড্রাইভের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে। চলতি সময় থেকে ২০২১ সালের জুন মাসেই এই কাজগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।
পরামর্শকদের গবেষণা এবং স্থানীয় অধিবাসীদের তথ্য নিয়ে ১০০ বছরের সর্বোচ্চ ফ্লাড লেভেল বিবেচনা রেখে ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে। বৈশ্বিক উষ্ণতা পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো মেরিন ড্রাইভ এবং সমুদ্রতীরেও দারুণভাবে প্রভাব ফেলছে। সম্প্রতি কক্সবাজারও ভয়াবহ এবং উত্তাল ঢেউয়ের সম্মুখীন হয়েছে। কলাতলী থেকে ইনানী পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার সড়ক ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৯৯৫ সালে কলাতলী থেকে নিরিবিলি হ্যাচারি পর্যন্ত সাগর গর্ভে বিলীন হয়। হোটেল ও পর্যটন শিল্পের বিশাল ক্ষতি হয়। এসব কথা মাথায় রেখেই ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে।
সওজ নির্বাহী প্রকৌশলী (কক্সবাজার) পিন্টু চাকমা বাংলানিউজকে বলেন, মেরিন ড্রাইভ সড়কটিতে দাঁড়িয়ে সন্ধ্যায় বিশাল সমুদ্রের বুকে সূর্যাস্তের মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের সৌন্দর্য সবার ভালো লাগে। তবে মেরিন ড্রাইভের প্রথমেই ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক আছে। ফলে পর্যটকদের নানা অসুবিধা হয়। ফ্লাইওভার নির্মিত হলে পর্যটকদের ভোগান্তি দূর হবে। দ্রুত সময়ে আমরা ফ্লাইওভার নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছি। কক্সবাজার জেলার সঙ্গে মেরিন ড্রাইভের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে।
তিনি আরও বলেন, সাইকেলওয়ে-ওয়াকওয়ে নির্মাণও করা হবে প্রকল্পের আওতায়। এসব নির্মাণের ফলে একদিকে যেমন মেরিন ড্রাইভের সৌন্দর্য বাড়বে অন্যদিকে নানা সুবিধা ভোগ করতে পারবেন পর্যটকেরা।
পিন্টু চাকমা আরও বলেন, কক্সবাজার শহরের প্রাণকেন্দ্র কলাতলী থেকে টেকনাফ পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা সৃষ্টির মাধ্যমে মেরিন ড্রাইভ সড়কে পূর্ণতা আসবে। প্রকল্পটি আধুনিক পর্যটন শিল্পে অনেক ভূমিকা রাখবে। প্রকল্পটি যানজট নিরসন, স্থানীয় জনসাধারণের উৎপাদিত পণ্য সহজে বাজারজাতকরণ, চিংড়ি হ্যাচারির বিভিন্ন কাঁচামাল সংগ্রহ ও বাজারজাতকরণে ভূমিকা পালন করবে। স্থানীয়দের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা আসবে প্রকল্পের মাধ্যমে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৯
এমআইএস/আরআর