এ নিয়ে ইতোমধ্যে নেত্রকোণার দুর্গাপুর-কলমাকান্দা আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) মানু মজুমদার জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি দিয়েছেন।
রোববার (০৩ মার্চ) বিকেলে বাংলানিউজকে বিষয়টি জানিয়েছেন সংসদ সদস্য মানু মজুমদার।
তিনি জানান, নেত্রকোণার শ্যামগঞ্জ-দুর্গাপুর সড়কে প্রতিদিন বালু-পাথর ও কয়লা বহনকারী হাজার হাজার ট্রাক চলাচল করে। এতে কোনো নিয়ম-কানুন মানা হয় না অথচ এই ওভারলোড যানবাহনের জন্য সড়ক ভেঙে অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সরকার।
অপরদিকে এলাকার মানুষ বছরের পর বছর ভাঙা সড়ক ও যানজটে পড়ে পোহাচ্ছেন অসহনীয় দুর্ভোগ। ট্রাক চলাচলে ভাঙা সড়কে বিচ্ছিন্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াতের কারণে দুর্গাপুর থেকে পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।
এতে উন্নয়নের দিক থেকেও পিছিয়ে পড়ছেন এ অঞ্চলের মানুষ। একটি এলাকা যখন পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে খ্যাত হয়ে ওঠে তখন আল্টিমেট সেই এলাকার মানুষই সবার আগে উপকৃত হন। অথচ হাতে গোনা কয়েকজন লাভবান হলেও বৃহৎ অংশটা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। অতএব এভাবে চলতে পারে না। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর শ্যামগঞ্জ-দুর্গাপুর সড়কটি ৩১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে পুনর্নির্মাণ করছে সরকার, তা কিছুতেই ধ্বংস হতে দেয়া যাবে না।
ট্রাক চলাচলে সময়ের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে জানতে চাইলে এমপি জানান, দিনগত রাত ৮টা থেকে পরদিন ভোর ৬টা পর্যন্ত প্রতিদিন বালু-পাথর অথবা কয়লা বহনকারী ট্রাক চলাচল করবে। সেক্ষেত্রে এটাও মনে রাখতে হবে সড়ক দিয়ে কখনো ভেজা মালামাল নিয়ে চলাচল করতে পারবে না কোনো চালক।
সময়-অসময় দিনভর এই ট্রাক চলাচলের জন্য সৃষ্টি হয় ব্যাপক যানজট। এতে অন্যান্যদের মতো প্রতিদিন স্কুল-কলেজ আর কর্মজীবীরাও দুর্ভোগে পড়েন। সময়মত কোথাও পৌঁছানো কিংবা কোনো কাজ সম্পাদন করা যায় না। কেউ অসুস্থ হলে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে এ সড়ক দিয়ে বের হওয়ার আগে ট্রাকের দীর্ঘ লাইনের ফাঁদে পড়ে পথে একটি মানুষের জীবনাবসান হয়ে যায়।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মঈনউল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, সংসদ সদস্য চিঠি দেয়ার আগেই জেলা প্রশাসন স্বপ্রণোদিত হয়ে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়দের নিয়ে মুক্ত আলোচনা করেছে।
শ্যামগঞ্জ-দুর্গাপুর বা দুর্গাপুর-শ্যামগঞ্জ সড়কে কোনো ট্রাক যেন ভেজা বালু-পাথর অথবা কয়লা নিয়ে চলাচল করতে না পারে সেজন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে। একইসঙ্গে ওভারলোড গাড়ি চলাচল ও চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন।
তবে যানবাহন চলাচলের নিয়ম বেধে দেয়ার ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু করার নেই বলে জানান তিনি।
জনস্বার্থে নিজের সিদ্ধান্তে অনড় সংসদ সদস্য মানু মজুমদার। তিনি বাংলানিউজকে জানান, দুর্গাপুরে ট্রাক চলাচলের সময় নিয়ে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনে হাইকোর্ট, সুপ্রিমকোর্টের পথে হাঁটবেন তিনি। ইতোমধ্যে সেই ব্যবস্থাও প্রক্রিয়াধীন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০১৯
আরএ
