রোববার (১০ মার্চ) রাতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন কাজী ফিরোজ রশীদ।
এর আগে ৩ মার্চ জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বক্তব্য দেন।
মেনন বলেন, ‘তেঁতুল হুজুরের দল আজকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে কওমি জননী উপাধি দিয়েছে। কওমি শিক্ষা ব্যবস্থাকে মূল ধারায় নিয়ে আসায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমি সাধুবাদ জানাই। কিন্তু এ ব্যাপারে আমরা সর্তক না হলে বুঝতে হবে আমরা আজকে এখানে কোন বিষবৃক্ষ রোপণ করতে চলেছি। বিভিন্ন সুযোগ পেয়ে হেফাজতের নেতৃত্বে মোল্লাতন্ত্র আজকে দেশ দখলে মেতে উঠেছে। হেফাজত সাম্প্রদায়িক বিভাজনে লিপ্ত। তারা বিভিন্ন দাবি তুলছে। আমরা তাদের দাবির কাছে অনেকখানি আত্মসমর্পণ করছি। ’
অনেকে ইসলামের বিরুদ্ধে বলাটা ফ্যাশন মনে করে
কারো নাম উল্লেখ না করে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘কিছু বামপন্থী নেতা রয়েছেন তারা ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলাটাকে ফ্যাশন মনে করেন। ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বললেই বোধ হয় আলট্রা মর্ডান হয়ে গেলাম! মানুষ মনে করবে, আমি সব থেকেই বড় বিপ্লবী বামপন্থী কমরেড হয়ে গেলাম!’
জাতীয় পার্টির এ সংসদ সদস্য বলেন, ‘হেফাজতের আমির, তিনি একজন বর্ষীয়ান নেতা। সারাজীবন মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেছেন। তার অনেক ছাত্র-ভক্ত রয়েছে। তাকে নিয়ে এ সংসদে কটাক্ষ করে কথা বলা হয়েছে। ‘তেঁতুল হুজুর’ বলে তাকে কটাক্ষ করা হয়েছে। তাকে বিদ্রূপ করা হয়েছে। এ ধরনের ধৃষ্টতা সংসদে উচিত নয়। ’
তিনি বলেন, ‘দেশ তো শান্ত আছে, শান্তিতে আছে। এখন তো কোথাও অশান্তি দেখি না। আমরা কেনো শান্তির মধ্যে একটি অশান্তির ঢিল ছুড়ে দেবো?’
কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসা নিয়ে অনেক বেহুদা কথা বলেছেন। কওমি মাদ্রাসা নাকি বিষবৃক্ষ! অথচ এ সংসদে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা দাওরায়ে হাদিসের স্বীকৃতি দিতে সর্বসম্মতিক্রমে আইন পাস করেছি। এটা তাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। এটা একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। এজন্য সব কওমি মাদ্রাসা থেকে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছে। ’
কওমি শিক্ষার্থীদের রক্ত শত ভাগ বিশুদ্ধ
কওমি শিক্ষার্থীদের রক্ত শতভাগ বিশুদ্ধ এবং স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের রক্ত ৫০ ভাগও বিশুদ্ধ নয় মন্তব্য করে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসায় মাদক, ইয়াবা ও গাঁজা নিষিদ্ধ। সেখানে ধূমপান চলে না। আমাদের স্কুল-কলেজ, ইউনিভার্সিটি ও বাড়িঘরে এসব মাদক ঢুকে পড়েছে। কিন্তু কওমি মাদ্রাসায় ঢুকতে পারেনি। আমরা রক্ত পরীক্ষা করলে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে শত ভাগ পিওর রক্ত পাবো। কিন্তু স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের রক্ত পরীক্ষা করলে ৫০ ভাগও পিওর রক্ত পাবো না। ’
তিনি আরও বলেন, ‘সারা দেশে ২০ হাজার কওমি মাদ্রাসা আছে। ২০ লাখ ছাত্র সেখানে কোরআন-হাদিস নিয়ে পড়াশোনা করেন। কঠিন ইসলামিক ধর্মীয় অনুশাসনের মধ্যে তাদের চলতে হয়। তারা স্কুল-কলেজের ছাত্রদের মতো ঘি-মাখন-পরাটা খেতে পারে না। যা জোটে তা-ই খায়। ’
বাংলাদেশ সময়: ০৪১৬ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৯
এসকে/এমইউএম/এসএ/জিপি