রাজশাহীর আদালত চত্বর এলাকায় রেলওয়ের জমিতে থাকা মহানগর আওয়ামী লীগের এক নেতার ব্যক্তিগত কার্যালয় উচ্ছেদ না করায় উত্তেজনা দেখা দেয়।
ওই কার্যালয়টি উচ্ছেদের দাবিতে স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তা অবরোধ করেন।
বিক্ষুব্ধদের অভিযোগ, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সকাল থেকে মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা পয়েন্ট থেকে রেললাইনের দু’পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করে।
অবৈধ স্থাপনা ভাঙতে ভাঙতে তারা বুধবার আদালত চত্বর এলাকায় আসে। এ সময় ওই এলাকায় রেললাইনের দু’পাশে থাকা সাধারণ মানুষের শতাধিক বাড়ি-ঘর ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। যাদের অধিকাংশই নিম্নআয়ের মানুষ। কিন্তু একইস্থানে থাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল আলম বেন্টুর ব্যক্তিগত কার্যালয়টি উচ্ছেদ করা হয়নি।
তবে বিষয়টি জানতে চাইলে উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বাংলানিউজকে বলেন, সব অবৈধ স্থাপনাই উচ্ছেদ করা হবে। কোনোটিই রাখা হবে না। তারা পরিকল্পনা অনুযায়ী এক এক করে সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করছেন। এর আওতায় যেসব বাড়ি-ঘর, প্রতিষ্ঠান বা কার্যালয় পড়বে সবগুলোই পর্যায়ক্রমে উচ্ছেদ করা হবে বলেও দাবি করেন।
বুধবার সকাল থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরুর পর রেলওয়ের জায়গায় বসবাস বা ব্যবসা পরিচালনা করে আসা অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে রাস্তায় অবস্থান নেন। এ সময় মহানগরীর আদালত চত্বর, বহরমপুর মোড়ে স্থানীয়দের বাধার মুখে পড়তে হয় উচ্ছেদকারীদের।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, বাধা দিয়ে কোনো লাভ হবে না। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ব্যাপারে গত ১২ মার্চ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পাশাপাশি মাইকিংও করা হয়। এতে রেলওয়ের জমিতে থাকা অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে ও দখলমুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বাবান জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে দখলকারীদের ১৯ মার্চ পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। অন্যথায় উচ্ছেদ অভিযানের মাধ্যমে দখলদারদের সমস্থ স্থাপনা সরিয়ে ফেলা হবে ও সংশ্লিষ্ট দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়। আগের ঘোষণা মোতাবেক তারা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছেন। এটি চলবে বলেও জানান এই রেলওয়ে কর্মকর্তা।
এক প্রশ্নের জবাবে আবদুল মান্নান বলেন, মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা পয়েন্ট থেকে মঙ্গলবার উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। এটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা পর্যন্ত যাবে। প্রথম দিনে ৬শ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। বুধবার দ্বিতীয় দিন দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত আরও পাঁচ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বিকেল পর্যন্ত অভিযান চলবে। তাই এর সংখ্যা বাড়বে।
আব্দুল মান্নান আরও বলেন, উচ্ছেদ করা জায়গার ওপর দিয়ে ব্যাপক উন্নয়ন পরিকল্পনা রয়েছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের।
এ সময় প্রথম পর্যায়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর থেকে রাজশাহী পর্যন্ত ডুয়েল গেজ স্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানান পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান এই ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৯
এসএস/এএটি