মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল রুমে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করে তিনি।
এসময় আলাউদ্দিন বলেন, ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর সমাজতান্ত্রিক স্লোগান দিয়ে জাসদ সৃষ্টি করে মেধাবী তরুণদের বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে নেওয়া হয়েছিল।
১৯৭৪ সালে চক্রান্তের কারণে দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, চট্টগ্রামের গভীর নোঙরে জাহাজ অপেক্ষা করছে গম নিয়ে। বলা হলো সেন্টমার্টিন দ্বীপকে দিয়ে দিতে হবে আমেরিকার নৌঘাঁটি হিসেবে সেটা প্রতিষ্ঠা করবে। বঙ্গবন্ধু তাতে রাজি হলেন না। তারপর ওই গভীর নোঙর থেকে চাল-গমের জাহাজ ফিরিয়ে নিয়ে বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করা হয়। সেই দুর্ভিক্ষে অনেক মানুষ মারা যায়।
স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টিকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আগের ২৩ বছর যদি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার মানুষদের জাগিয়ে না তুলতেন, তাহলে আমরা স্বাধীনতা পেতাম না। স্বাধীনতা কোনো ঘোষণার ব্যাপার না। ৭ মার্চের ভাষণে স্বাধীনতার ঘোষণা সরাসরি দিলে বঙ্গবন্ধুকে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা বানিয়ে ফেলা হতো এবং স্বাধীনতার আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে নিয়ে যাওয়া হতো। তাই তিনি কৌশলে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম- এ দু’টো বলার পর স্বাধীন বলার অপেক্ষা রাখে না।
ভারতে অনেকগুলো রাজনৈতিক দল আছে, তবে জাতীয় নেতাদের নিয়ে বিতর্ক নেই বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবাই নিজের ইচ্ছায় রাজনীতি করবে, তবে জাতির পিতা, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা নিয়ে কোনো বিতর্ক থাকতে পারবে না। এই মূল জায়গায় ঐক্যমত না থাকলে আমাদের জাতীয় ঐক্য থাকবে না।
আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘৭৫ থেকে ৯৬ সালে স্বাধীনতা দিবস থাকা সত্ত্বেও স্বাধীনতা শব্দটি মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। ২৬ মার্চ জাতীয় দিবস হিসেবে পালন করা শুরু করে তৎকালীন সরকার। যখন চারদিক থেকে প্রতিবাদ শুরু হলো, তখন থেকে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন করা শুরু হয়। এভাবেই দেশ নিয়ে পদে পদে চক্রান্ত হয়েছে, হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও হবে। তাই চক্রান্তকারীদের থেকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. সাইফুদ্দিন শাহর সভাপতিত্বে সভায় ট্রাস্টি বোর্ডের নির্বাহী কমিটির সদস্য সচিব ডা. এএসএম তবারক উল্লাহ চৌধুরী বায়েজিদ, ট্রেজারার প্রফেসর তায়বুল হক ও রেজিস্ট্রার এএসএম আবুল খায়ের বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০১৯ আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক, ফাইনান্স বিভাগের সিনিয়র লেকচারার মোস্তফা মামুন হায়াত, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান কমিটির আহ্বায়ক সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আবুল কাশেম, মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও ছাত্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ আবুল খায়ের, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।
এর আগে সকালে যথাযোগ্য মর্যাদায় বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা স্মৃতি স্তম্ভ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানেরর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। এছাড়া ‘রক্তাক্ত স্বাধীনতা’ শীর্ষক দেয়ালিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০১৯
এসএইচডি/টিএ