আগুন লাগা ভবনের নিচে ও আশপাশে বিপুলসংখ্যক মানুষ ভিড় করায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের কাজ করতে বেগ পেতে হয়েছে। যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হচ্ছে সমালোচনা।
হাজারো উৎসুক জনতার মাঝে একটি ছবি নজর কেড়েছে সবার। একটি ছোট্ট শিশু ফায়ার সার্ভিসের ফাটা পাইপ দিয়ে বের হয়ে যাওয়া পানি আটকে রাখার চেষ্টা করছে। শিশুটির চোখেমুখে চরম উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা। বৃহস্পতিবার থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে তার ছবি।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) দুপুরে বনানীর এফ আর টাওয়ারের সামনে আবার এসেছিলো শিশুটি। এ সময় বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, তার নাম মো. নাঈম ইসলাম। কড়াইল বস্তিতে বাবা-মা ও এক বোনের সঙ্গে বসবাস তার। স্থানীয় আরবান স্ল্যাম আনন্দ স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সে।
আগুনের খবর শুনেই বনানীতে ছুটে আসা নাঈম জানায়, তার বাবা রুহুল আমিন বনানীতে ডাব বিক্রি করেন। তাই আগুনের খবর শুনে বনানীতে ছুটে আসে নাঈম। আসার পর ভিড় ঠেলে আগুন লাগা এফআর টাওয়ারের সামনে চলে আসে। এসে নিজ তাড়নাতেই ফায়ার সার্ভিসের পাইপ ধরে অন্যদের সঙ্গে সহযোগিতার চেষ্টা করে।
এরপর যখন ভবনের গ্লাস ভেঙে পড়ে তখন অন্যরা নাঈমকে দূরে সরিয়ে নেয়। গ্লাস ভাঙা একটু কমতেই নাঈম দেখে একটি পানির পাইপ ফেটে তা থেকে পানি বের হয়ে যাচ্ছে। তখন পাশ থেকেই একটি পলিথিন কুড়িয়ে তা দিয়ে পাইপের ফাটা অংশটি চেপে ধরে নাঈম।
বাংলানিউজকে নাঈম বলে, আমি কোন ভয় পায়নি, ওই সময় আল্লার কাছে সবাই দোয়া করছিলো ভেতরের মানুষগুলা যেন বাঁচে। আমিও চাইছিলাম একটু সাহায্য করে যদি কাউকে বাঁচানো যায়।
নাঈম আরো জানায়, বাসায় যাওয়ার পর তার নানী ও এলাকার অন্যরা সবাই তাকে বাহবা দিয়েছে। সবাই জড়িয়ে ধরেছে। নানী বলেছে, তোর ছবি দেখছি, ভালো কাজ করছিস!
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটের দিকে বনানীর এফ আর টাওয়ারে আগুনের সূত্রপাত হয়। এ অগ্নিকাণ্ডে ২৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে। অর্ধশতাধিক মানুষ দগ্ধ ও আহত হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৯
পিএম/এমজেএফ