ঢাকা, বুধবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

গাছে বেঁধে গৃহবধূকে নির্যাতন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৯
গাছে বেঁধে গৃহবধূকে নির্যাতন

কুষ্টিয়া: তার একমাত্র অপরাধ স্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রী হওয়া। এজন্য প্রথম স্ত্রী ও তার পরিবারের লোকজন বর্বর নির্যাতন চালিয়েছে ওই গৃহবধূর ওপর। এ নির্যাতন থেকে বাদ যায়নি তার স্বামীও। প্রথম স্ত্রীর লোকজন ওই গৃহবধূকে মারধর করেই ক্ষ্যান্ত হননি, কেটে দেওয়া হয়েছে তার চুল। প্রকাশে অর্ধনগ্ন করে গাছে বেঁধে চালানো হয়েছে নির্যাতন। 

এমনই বর্বর ঘটনা ঘটেছে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায়। গত ২৪ মার্চ ঘটা এ ঘটনায় নির্যাতিত ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে মামলা করলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

নির্যাতনের শিকার হয়ে এখন তিনি হাসপাতালে ভর্তি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্যাতিত ওই গৃহবধূর স্বামী আসলাম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, দেড় মাস আগে দ্বিতীয় বিয়ে করি আমি। সে আমার দ্বিতীয় স্ত্রী। তবে বিয়ে আমি করেছি সেটা আমার ভুল, কিন্তু আমার দোষে কেন দ্বিতীয় স্ত্রীকে এমন নির্যাতন করবে। আমার প্রথম স্ত্রী তার আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে করে আমাকেও মারধর করেছে। তারা প্রথমে আমাকে মারধর করে এবং পরে আমার স্ত্রীর (দ্বিতীয়) চুল কেটে, টেনে হিঁচড়ে বাইরে নিয়ে আসে। এসময় অর্ধনগ্ন করে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করা হয় তাকে। আমি এ ঘটনার দোষীদের বিচার চাই।

নির্যাতনের বিবরণ দিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী আলেজান নেছা (৫৫) বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনার দিন বিকেলে হঠাৎ চিৎকার শুনে বাইরে এসে দেখি, আসলামের প্রথম স্ত্রীসহ ৫/৬ জন ওই গৃহবধূকে টেনে হিঁচড়ে ঘর থেকে বের করে আনছে। পরে তারা তার মাথার চুল কেটে, পরনে থাকা শাড়ি খুলে গাছের সঙ্গে ওড়না ও রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করে।

নির্যাতিত ওই গৃহবধূ বাংলানিউজকে জানান, আমার স্বামীর প্রথম পক্ষের বউ আমাকে মারধর করেছে। তার (দ্বিতীয় স্ত্রী) খালা আর দুলাভাই জোর করে আমাকে ধরে চুল কেটে দিয়েছে। আমার গায়ে থাকা কাপড়-চোপড় কেঁচি দিয়ে সব কেটে দেয়। আমার গায়ে কিছু ছিলো না। আমাকে রাস্তায় টেনে নিয়ে গিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে মেরেছে। এলাকার সবাই তার সাক্ষী।

এ ঘটনায় সাতজনের বিরুদ্ধে ভেড়ামারা থানায় মামলা করেছি জানিয়ে ওই গৃহবধূ বলেন, কিন্তু ঘটনার পাঁচদিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

এসময় নির্যাতিত ওই গৃহবধূ এ বর্বর নির্যাতনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।  

ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রকিউর রহমান বাংলানিউজকে জানান, আহত ওই গৃহবধূ সুস্থ্য হতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।

বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির কুষ্টিয়ার সভাপতি অ্যাডভোকেট মঞ্জুরী বেগম বাংলানিউজকে বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি করছি। সেই সঙ্গে নির্যাতিতার সবরকম আইনি সহায়তা দেওয়া হবে।  

ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শামীম বাংলানিউজকে জানান, নির্যাতনের ঘটনায় গৃহবধূ নিজেই বাদী হয়ে সাতজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন। দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।